পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Uసి' ধ্ৰুপ্রবাসী; S990āు বীণা কহিল, “সে ত সব আপনাকে শাসনে রাখতেই খরচ হয়ে যাবে।” বিমানকে শাসনে রাখার কাজটা সুভদ্রই আসলে সব-চেয়ে বেশী করিয়া করিত। বিমানকে সে-ই যদিও ক্লাবে আনিয়াছিল, কিন্তু মনে মনে তাহার সম্বন্ধে সৰ্ব্বদাই একটা ভয় পোষণ করিয়া চলিত, এবং প্রয়োজন উপস্থিত হইলেই তর্ক করিয়া বকিয় তাহাকে সংযত করিয়া রাথিত । বলিল, “আটকে নিজের মনের মত ক’রে বঁাচাবার জন্যে দেশব্যাপী একটা প্রলয় বাধিয়ে তুলতে চাও, এটা কি তোমার একটু বেহিসাবী ব্যবস্থা নয় ?” বিমান রুথিয়া উঠিয় উত্তর দিল, আর্ট ঠিক ততবড়ই জিনিস এবং তাহার সম্বন্ধে কোনও ব্যবস্থাই বেহিসাবী ব্যবস্থা নয়। মেয়েদের অস্তিত্বকে ভুলিয়া গিয়া সহজ বোধ করিবার একটা উপলক্ষ্য মিলিবা-মাত্র ছেলেদের মধ্যে কেহ কেহ বিমানের দিকে, কেহ কেহ বা স্বভদ্রের দিকে যোগ দিল, ক্রমে তুমুল তর্ক বাধিয়া উঠিল, বাণে বাণে আকাশ ছাইয়া গেল, এত অন্ধকার জমা হইল, যে, কোনও কথার আর কোনও অর্থ খুজিয়া পাওয়া গেল না। অজয় এই অবকাশে স্বলতার নিকট হইতে ক্লাবটির নানা পরিচয় সংগ্ৰহ করিতে লাগিল । দেখিল, প্রচুর মমতা থাকা সত্ত্বেও ইনি ক্লাবটিকে এখন পর্য্যস্ত মুভদ্রের খেয়াল-প্রস্থত একটা ছেলেমাতুষি ব্যাপার বলিয়াই মনে করেন। সমাজে ইহাকে লইয়া ইতিমধ্যেই ধে কথা উঠিয়াছে এবং কোনও কোনও অভিভাবক মেয়েদের এখানে আস বারণ করিয়া দিয়াছেন ইহা জানাইয়া তিনি ইহার দীর্ঘায়ু বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করিলেন । সেইসঙ্গে ইহাও বলিলেন, যে, শিক্ষিত-সমাজের বর্তমান অবস্থায়, যখন অধিকাংশের ঘটকালী বিবাহে রুচি বর্তমান নাই অথচ ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের স্থল ভিন্ন ছেলেমেয়েদের নিজ নিজ রুচি অতুযায়ী পতিপত্নী-নিৰ্ব্বাচনের সুধোগ করিয়৷ দিতেও অভিভাবকদের বাধিতেছে,তখন অন্ততঃ বিবাহার্থী স্ত্রীপুরুষদের জন্যও এইজাতীয় একটি মিলনক্ষেত্র প্রস্তুত করার কথা ভাবিবার প্রয়োজন আছে। ঘটকালীকেও মানিব না অথচ যাহাকে চিরজীবনের প্রতিমুহূৰ্ত্তের সঙ্গী করিব তাহাকে ভাল করিয়া যাচাইয়া দেখিয়াও লইব না, .ே ইহার ফল সমাজের পক্ষে শুভ হইতেছে না। এরূপ অবস্থা হইতে ঘটকালীও নিঃসন্দেহ শ্রেষ্ঠ । অজয় কহিল, “আমার ধারণ ছিল, আপনাদের সমাজে—” স্থলত কহিলেন, “ছেলেমেয়েদের মেলবার পথে বাপ! নেই, এই ত ? পদার বাধাটাই কি কেবল বাধা ? এই সেদিন আমাদের এক বন্ধু দুঃখ ক’রে বলছিলেন, যে, কোনও ছেলের সঙ্গে তার মেয়ের আলাপ করিয়ে দেবার কল্পনাই তাকে এখন ছেড়ে দিতে হয়েছে। বাড়ীতে যখনই কাউকে ডাকেন, সমাজের দশজন নিৰ্ব্বিচারে ধ’রে নেয় মেয়েটির সঙ্গে তার বিয়ে হচ্ছে, শেষ অবধি বিয়ে যখন হয় না তখন তা নিয়ে এমন-সমস্ত কথা ওঠে যা সেই মেয়ে বা ছেলে কারও পক্ষেই প্রীতিকর নয় ।” অজয় কহিল, “সমাজে নতুন ধারার প্রবর্তন যারা করবেন তাদের উচিত নয় অন্যেরা কি বলছে বা ভাবছে তা নিয়ে বেশী বিচলিত হওয়া ।” সুলতা একটু হাসিলেন, বলিলেন, “সে-অবস্থায় আপনি এখনও পড়েননি তা বুঝতেই পারছি। বিপদ কি কেবল দশজনকে নিয়েই ? একটি মেয়ের কথা আপনাকে বলতে পারি, কোনও একটি ছেলেকে নানা-কারণে তার একটু ভাল লেগেছিল । তার দোষের মধ্যে তার দিদিকে ব’লে ছেলেটিকে বাড়ীতে ডেকে সে পরিচয় করবার চেষ্টা করেছিল। বাস, আর যাবে কোথায় ? সেইটুকুকেই তার প্রতি মেয়েটির গভীর পূৰ্ব্বরাগের অতি নিশ্চিত লক্ষণ ধ’রে নিয়ে ছেলেটি তারপর তার সঙ্গে এমন ব্যবহার স্বরু করল যা সেই অবস্থায় যে-কোনও ভদ্র এবং প্রকৃতিস্থ মেয়ের পক্ষেই একেরারে অসহ । যে-জিনিষটি হয়ত যথাকলে অমুরাগ পৰ্য্যন্ত পৌছতেও পাবৃত, নিতান্ত বিস্ত্র একটা রাগারগির ধরণের ব্যাপারে সেটা সম্প্রতি শেষ হয়েছে, শুনলাম।” অজয় কহিল, “কিন্তু সুভদ্র এইসব ভেবেই যদি ক্লাব ক’রে থাকে তবে এটাকে তার খেয়াল আপনি কেন বলছেন ?” স্কুলত কহিলেন, “হ্য, সুভদ্রবাবু ত এ-সব কথা