পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

واجباW S99āు ...কুনু আমার শেলেট দিচ্ছে না...-সোনা আমার কিলিপ কেড়ে নিয়েছে--"চুতকু আমায় মেলেচে।” দু-তিনজন কোনও বাধা না মানিয়া ভেজানো দরজাট ঠেলিয়া ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া পড়িল । একটি সাড়ে-তিন চার বছরের ফুটফুটে স্বন্দর মেয়ে ছুটিয়া আসিয়া বাণার কোলে বাপাইয় পড়িল, কান্নার স্বরে কহিল, "মা, সোনা আমার কিলিপ কেড়ে নিয়েছে।” সোন স্বলতার মেয়ে, তাহারও বয়স চার সাড়েচারের বেশী নয় । নিজের মায়ের আঁচলের আশ্রয় হইতে চীৎকার করিয়া বলিল, “ওটা ত আমার কিলিপ, লাল কিলিপ, আমার ম আমাকে কিনে এনে দিয়েছে ।” স্থলত তাহাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিলেন, তাহার ঠিক এমনই দেখিতে লাল ক্লিপ একটা আছে বটে, তবে সেটা উপরের শোবার ঘরে র্তাহার আয়নার দেরাজে বন্ধ করা আছে, কিন্তু সোনা কিছুতেই বুঝিল না । অগত্য। তাহাকে কাদাইয় তাহার হাত হইতে ক্লিপট কাড়িয়া লইয়া স্বলতা সেটাকে যথাস্থানে প্রত্যপণ করিলেন, তারপর রোরুদ্যমান কন্যাকে লইয়৷ আয়ার সন্ধানে উপরে প্রস্থান করিলেন । ক্লিপ ফিরিয়া পাইয়া ক্লিপের অধিকারিণীর কান্না থামিল বটে, কিন্তু তাহার হাড়িমুখে হাসি ফুটিল না। তাহাকে ভুলাইবার জন্য বীণা তাহার সঙ্গে অজয়ের ভাব করিয়া দিতে প্রবৃত্ত হইল । কহিল, “এটি আমার মেয়ে মন্দির, কেমন সুন্দর মেয়ে দেখেছেন ? নীল পোষাকটাতে ওকে ভারি মানিয়েছে Fil ?” বীণা বিবাহিত, বীণা জননী, ইহা জানিতে পারিয়া অকারণেই অজয়ের মনে হঠাৎ একটা অদ্ভুত রকমের ঘ লাগিল। সে যে ঠিক দুঃখিত হইল তাহী নহে, তাহার দুঃখিত হইবার কোনই কারণ ছিল না, কিন্তু তাহার মনের মধ্যে কোন একটা স্বরসঙ্গতিতে হঠাৎ যেন ভাল কাটিয়া গেল। হাসিয়া মন্দিরাকে কিছু-একটা বলা উচিত ছিল, কিন্তু তাহার বাকৃষ্ণুক্তি হইল না। মন্দির ঠোঁট ফুলাইয়া বলিল, “ন, আমি মন্দিরা না, আমার নাম অপর্ণ יין অজয় এবার হাসিয়া বলিল, “মায়ের দেওয়া নামট ওর পছন্দ নয় দেখছি।” বীণা বলিল, “আহা, অন্ত নামটা উনি আকাশ থেকে পেয়েছেন কিনা ! অপর্ণা ওর ভাল নাম, মন্দির ব’লে ডাকি ৷” অজয় মন্দিরাকে কাছে ডাকিতেই সে একেবারে তাহার কোল ঘেষিয়া আসিয়া দাড়াইল। পাঞ্জাবীর গলার বোতামটা অজয় খুলিয়া রাখিত, দুপায়ের আঙলের উপর ভর দিয়া উচু হইয়া দাড়াইয়া মন্দির সেটা লাগাইয়া দিল, কহিল, “বোতাম খুলে রেখেছ কেন, ঠাণ্ড লেগে যাবে যে!” হাসিয় তাহার পিঠে সস্নেহে হাত বুলাইয়া দিয়া অজয় বলিল, “তুমি আমার ছোট্ট মা, কেমন ?” মন্দির ছোট মাথাটিকে একদিকে অনেকপানি কাত করিয়া কহিল, “আচ্ছ। তাহলে তুমি আমার ছেলে হবে ত ? তোমাকে আমি সঙ্গে ক’রে বাড়ী মিয়ে যাব, বাটি-ভীরে দুধ খেতে দেব, বিছানা পেতে দেব বিছানায় তুমি শোবে, আমি শোব, আর—" এক ঝঢ়কায় তাহাকে টানিয়া বীণা নিজের কাছে লইয়া গেল । কহিল, “কি ক্রমাগত কেবল বক্‌ বক করছিল, চুপ কর । এক মুহূৰ্ত্ত মুৰ্থ বন্ধ ক’রে থাকৃতে পারে না মেয়ে ।” মায়ের কোলে হেলান দিয়া দাড়াইয়৷ বড় বড় গোলগোল চোখে গভীর মনোযোগের সঙ্গে মন্দির অজয়কে দেখিতে লাগিল। হঠাৎ এক সময়ে মায়ের দিকে মুখ তুলিয়া সে প্রশ্ন করিল, “হ্যা মা, ও কি আমার বাবা ?” আশেপাশে একটা নি:শব্দ চাঞ্চল্যের ঢেউ উঠিয়ু পলকেই থামিয়া গেল। মন্দিরার গালে মাঝারি-গোছের একটি চপেটাঘাত করিয়া শশব্যস্তে বীণা উঠিয়া পড়িল, কহিল, “আমাকে এবার উঠতে হচ্ছে । একে নিয়ে কোথাও বেরিয়ে দু-দও যে বস্ব তার উপায় নেই, দুধখাবার সময় হলেই যতরাজ্যের দুষ্টমি ওর মাথায় আসে। আর কখনও আমার সঙ্গে আসতে চাইবি ত দেখবি ।” -