পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরণ্য-কাণ্ড Nව ඵ বৈশাখ গিয়ে—উনিশ সন ত হুবহু আকববর বাদশার দলিল বানিয়ে দেবে, আসল নকল চেনা ঘায়ু না— বস্তুতঃ ধনঞ্জয়ের পর অন্যান্য সাতজনের কাগজপত্র তলব করিয়া দেখা গেল, ভজহরি মিথ্য বলে নাই—ঐ রকম পুরাণে দলিল সকলেরই আছে। এবং বাধুনীও কালকের কথ, প্রত্যেকটির এমনি নিখু"ত যে যখনই যাহার কাগজ দেখে একেবারে নিঃসন্দেহ বুঝিয়া ধায় রাজারামের গড়ের মালিক এ যেন গোলক ধাধায় পড়িয়া সাব্যস্ত হইল না একমাত্র সেই লোকটাই । বিস্তর ভাবিয়া-চিস্তিয়াও কাষ্ঠীকে ছাড়িয়। কাহাকে রাখা যায়। গেল । হাল ছাড়িয়া দিয়া অবশেষে শঙ্কর বলিল – দেখুন মশক্তির, আপনারা ভদ্রসস্তান--- ই!--ঠ-করিয়; তাঙ্গব! তংক্ষণাং স্বীকার করিল। এষ্ট একট প্লট একসঙ্গে ঐরকম ভাবে আটজনের ত স্ত'তে পারে না ? সকলেই ঘড়ি নাড়িল । অর্থাৎ—নয়ই ত— —আপনার হলপ করে বলুন এর সত্যি মালিক কে— ভপ্ৰসস্তানেরা তাহাতে পিছপা ও নহেন । একে একে সামনে আসিয়া ঈশ্বরের দিব্য করিয়া বলিল-দু’শ’ বারোর প্লট একমাত্র তাহারই, অপর সকলে চক্রাস্ত করিয়া মিথ্যা কথা কহিতেছে। লোকজন বিদায় হইয়া গেলে শঙ্কর বলিল—না এর পাটোয়ারী বটে—দেখে শুনে সন্ত্রম হচ্ছে— ভজহরি মুদু মুকু হাসিতেছিল, এরকম সে অনেক দেখিয়াছে । শঙ্কর বলিতে লাগিল—তোমার কথাই মেনে নিলাম যে কাচা দলিলগুলো জাল । কিন্তু যে গুলো রেজেক্ট । দেখ, এদের দূরদৃষ্টি কত দেখ একবার—কবে কি হবে দুপুরুষ আগে থেকে তাই তৈরী হয়ে আসছে। চুলোয় যাক্গে দলিল-পত্তোর—তুমি গায়ে খোজ খবর করে’ কি পেলে বল ? যা হোক একরকম রেকর্ড করে যাই— পরে যেমন হয় হোকগে-- ভজহরি বলিল—ক’ত লোককে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি আসবার আগে কত সাক্ষীসাবু তলব করেছি, সে আরও মজা—এক একজনে এক এক রকম বলে-- বলিয়া সহসা প্রচুর হাসিতে হাসিতে বলিল—নরলোকে আস্কার হ’ল না, এখন একবার কুমার বাহাদুরের সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞাসা করতে পারলে হয়— শঙ্কর কথাটা বুঝিতে পারিল না । ভজহরি বলিতে লাগিল—কুমার বাহাদুর মানে জানকীরাম । সেই যে তখন ময়ুরপঙ্গীর কথা বলছিলাম, গায়ের লোকের বলে আশপাশের গ্রাম নিশুতি হয়ে গেলে জানকীরাম নাকি আসেন—উত্তর মাঠের ঐ নাককাটার খাল পেরিয়ে তেঘর-বকচরের দিক থেকে তাঁরবেগে ঘোড় ছুটিয়ে রোজ রাত্তিরে মালতীমালার সঙ্গে দেখা করে’ বান—সে ভারী অদ্ভুত গল্প,—কাজ কৰ্ম্ম নেইত 4° ? তারপর রাত্রি অনেক হইল। তিনটি তাবুরই আলে। নিভিয়াছে, কোনদিকে সাড়াশব্দ নাই । শঙ্করের ঘুম আসিতেছিল না। একটা চুরুট ধরাইয়া বাহিরে আসিল, আসিয়া মাঠে খানিক পায়চারী করিতে লাগিল । ভজহরি বলিয়াছিল—কেবল জঙ্গল নয় হুজুর, এই মাঠেও সন্ধ্যের পর একলা একল কেউ আসে না। এই মাঠ সেই যুদ্ধক্ষেত্র, নদীপথে শত্রুরা এসেছিল। বেলা না ভুবতে রাজারামের পাচ শ’ ঢালী ঘায়েল হয়ে গেল, সেই পাচশ মড়ার পা ধরে টেনে টেনে পরদিন ঐ নদীতে ফেলে দিয়েছিল--- উলুঘাসের উপর পা ছড়াইয়া চুপটি করিয়া বসিয়া শঙ্কর আনমনে ক্রমাগত চুরুটের ধোয়া ছাড়িতে লাগিল। চার শ’ বছর আগে অার একদিন সন্ধ্যাঞ্জ গ্রামনদীকুলবর্তী এই মাঠের উপর এমমি চাদ উঠিয়াছিল। তখন যুদ্ধ শেষ হইয়া গিয়া সমস্ত মাঠে ভয়াবহ শাস্তি থম-থম করিতেছে। চাদের আলোয় স্তন্ধ রণভূমির প্রাস্তুে জানকীরামের জ্ঞান ফিরিল। দূরে গড়ের । সহস্ৰ মশালের আলো-আকাশ চিঞ্জি