পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१७३ S99శు. সভোর মতে গৃহীত হইয়াছে। ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় ও শ্রেণীর জঙ্গ এংলো-ইণ্ডিয়ান কাগজওয়ালারা যে স্বতন্ত্র নির্বাচন চায়, তাহ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য । কিন্তু তাহারা স্বতন্ত্ৰ নিৰ্ব্বাচন প্রথার অনিষ্টকারিতা জানে । উহার যে বস্তুত ভারতপ্রবাসী ইংরেজ ও অন্য ইউরোপীয়দের সুবিধার জন্যই উহা চায়, তাহ ষ্টেটসম্যানের নিম্নলিখিত কথাগুলি হইতে বুঝা যায় – “It is from the hands of Britishers that the new constitution must come, and under no circumstances is it conceivable that the British community here with its enormous stake in the Country could accept annihilation.” তাৎপৰ্য্য। “ব্রিটিশদের হাত থেকেই ভারতের নূতন মুল রাষ্ট্রবিধি আসা চাই, এবং কোন অবস্থাতেই ইহ অচিন্তনীয়, যে, এখানকার প্রভূতসম্পত্তিশালী ব্রিটিশ লোকের। আপনাদের বিনাশে সম্মত হইবে।” - স্বতন্ত্র নির্বাচন যে খারাপ তাহাও ঐ কাগজ স্পষ্টভাষায় বলিয়াছে। যথা :– “Nobody will argue that separate electorates are beneficial. that they promote the feeling of nationlıood, or that they do not tend to keep open sores and prevent the healing of differences.” তাৎপৰ্য্য। “কেহই তর্ক করিবে না, যে পৃথক পৃথক নিৰ্ব্বাচকমণ্ডলীর ব্যবস্থা হিতকর, যে তাহার এক জাতিত্বের ভাবের পোষক, অথবা তাহার পুরাতন ক্ষত সারিতে বাধা দেয় না এবং পরস্পরের মধ্যে বিরোধ-বিবাদ ভঞ্জনে বাধা দেয় না ।” ইহা হইতে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, এংলো-ইণ্ডিয়ান কাগজওয়ালার স্বতন্ত্ৰ নিৰ্ব্বাচনের অনিষ্টকারিতা জানিয়াও নিজেদের সুবিধার জন্য উহার সমর্থন করে । ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্বের দাবির হেতু কেন এদেশে ব্রিটিশ প্রভূত্ব থাকা উচিত, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় মিঃ আম। ইং পরোক্ষ ভাবে তাহারই কোন কোন কারণ দেখাইয়া বকৃত করেন। তাহার উত্তরে শ্ৰীযুক্ত জিতেন্দ্রলাল রন্দ্যোপাধ্যায় বলেন – f বলিতে চান যে, যেহেতু ইংরেজরা রেল মা আবিষ্কার করিয়াছে, সেই জন্যই তাহারা এদেশ শাসন কল্পিকার অধিকারী । রুশিয়া, জাৰ্ম্মেণী প্রভৃতি দেশেও উহাদের আবিষ্কৃত রেল ষ্টীমার দ্বার। যথেষ্ট উপকার হইয়াছে। তাহা হইলে কি বলিতে হুইবে যে, ঐ সকল দেশ শাসন করিবার অধিকারও ইংরেজের আছে ? বাংলার মালিক সকলেই—ইংরেজের আবিষ্কৃত রেল ষ্টীমারে যখন বাংলার উপকার হইয়াছে তখন মিঃ আৰ্মষ্টঙের যুক্তি অনুসারে বাংলার ব্যবস্থাপক সভায় ইংরেজের অবস্থই একটা বড় অংশ থাকা চাই! মিঃ আৰ্ম্মষ্ট্রং বলিতে চান যে, ইংরেজেরা এদেশে অনেক টাকা খাটাইতেছেন ; অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য খুলিয়াছেন ; কাজেই র্তাহার এদেশ শাসনের অধিকারী । তোমরা এদেশে বেশী টাকা থাটাইতেছ বেশী লাভ হইবে। আর কি চাও? অনেক ইংরেজের টাকা জাৰ্ম্মেনীতে, জাৰ্ম্মেনীর অনেক টাকা রশিয়ায় থাটিতেছে। তাই বলিয়াই যে ঐ ঐ দেশ উহাদিগকে শাসন করিতে হইবে, এমন কোন দাবি কি যুক্তিসঙ্গত হইতে পারে ? বাংলা প্রদেশ পুনর্গঠনের দাবি অগ্রাহ কৃত্রিম সরকারী উপায়ে বাংলা দেশটিকে ছোট করা হইয়াছে। ইংরেজরাজত্ব-কালেই এমন এক সময় ছিল, যখন ভৌগোলিক বঙ্গের অঙ্গ বাংলাভাষাভাষী সমুদয় ভূখণ্ড সরকারী বাংলা প্রদেশ বা প্রেসিডেন্সীর অন্তর্গত ছিল । তাহার পর নানা রাজনৈতিক উদ্দেশু ও কারণে ভৌগোলিক বাংলা দেশকে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এক এক রকমে ভাগ করা হইয়াছে। তাহাতে, বঙ্গের প্রতি ও বাঙালীর প্রতি যাহাঁদের টান আছে, এরূপ বাঙালীর। কখনও সন্তুষ্ট হয় নাই, ছিল না, এখনও নাই। এই হেতু এই প্রকার বাঙালীদের মুখপাত্র-রূপে ঐযুক্ত নরেন্দ্রকুমার বস্তু বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় এই প্রস্তাব উত্থাপিত করেন, যে, যাহাতে প্রাকৃতিক বঙ্গের বঙ্গভাষাভাষী সব অংশ আবার বাংলা প্রদেশের অন্তর্গত হয় এরূপ ভাবে প্রদেশটির সীমানিৰ্দ্ধারণ জন্য একটি সীম-কমিশন নিযুক্ত করা হউক ; কিন্তু তাহ ইউরোপীয়, মুসলমান এবং সরকারপক্ষের সদস্তগণের ভোটে অগ্রাহ হইয়া গিয়াছে। প্রস্তাবটির বিরোধীদের সব আপত্তি আলোচনা এথানে এখন করা চলিবে না । কিন্তু সরকারপক্ষের মাননীয় রীড সাহেব যে বলিয়াছেন, সীমানিৰ্দ্ধারণকমিশনের কাজ শেষ হইতে বিলম্ব অবগুস্তাবী এবং তাহ বাঞ্ছনীয় নহে, সে বিষয়ে ইহাই বলিতে চাই, যে, নূতন করিয়া সিন্ধুকে একটা প্রদেশ বানাইবার জন্ম