পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ88 S993ు “Through his trust in promises” “( শত্রুর ) প্রতিজ্ঞায় বিশ্বাস করায়” শত্রুর প্রতিজ্ঞায় বিশ্বাসস্থাপনকে ঠিক সত্যনিষ্ঠা বলা যায় না । এই শ্লোকে রাজ্যবৰ্দ্ধনের সত্যনিষ্ঠার উল্লেখ করা কবির অভিপ্রায় বলিয়। মনে হয় । সুতরাং “সত্যাচুরোধেন” পদের তাৎপৰ্য্য এই, রাজ্যবৰ্দ্ধন সত্য বা প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্য প্রাণের ভয় ত্যাগ করিয়া শত্রুর গুহে গিয়া প্রাণ হারাইয়াছিলেন । বঁাশখেরা শাসনের শেষে খুব বড় অক্ষরে এই স্বাক্ষর আছে— “স্বহস্তোমিম মহারাজাধিরাজশ্ৰীহৰ্ষস্ত” “আমার, মহারাজাধিরাজশ্ৰীহর্ষের স্বাক্ষর” হুর্যের মধুবনের শাসনে এই স্বাক্ষর নাই, এবং অন্ত কোনও রাজার কোন শাসনে এইরূপ স্বাক্ষর দেখা যায় না । মধুবনের শাসনের রাজবংশপ্রশস্তির অংশ বাশখেরা শাসনের রাজবংশ-প্রশস্তির অবিকল নকল । হর্ষ স্বয়ং স্বকবি ছিলেন। “রত্নাবলী,” “নাগনন্দ” তাহার রচনা বলিয়া প্রসিদ্ধ। খুব সম্ভব হর্যের শাসনের রাজবংশপ্রশস্তি তাহার নিজের রচিত, এবং বঁাশখেরার শাসনখানি তাহার নিজের তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত হইয়াছিল বলিয় তাহার স্বাক্ষরযুক্ত। বঁাশখেরা শাসনের রাজবংশ-প্রশস্তি এবং তাহার অন্তর্গত রঞ্জাবদ্ধনের সম্পৰ্কীয় শ্লোকটি হর্যের নিজের রচিত হউক আর না হউক, এই শাসনে তাহার স্বাক্ষর থাকায় স্বচ্ছন্দে অম্বুমান কর। যাইতে পারে, এই শ্লোকে নিবদ্ধ রাজ্যবৰ্দ্ধনের ইতিহাস হর্ষের অনুমোদিত । রাজ্যবৰ্দ্ধনের প্রকৃত ইতিহাস এবং তাহার মুতু্যর প্রকৃত কারণ জানিবার হর্ষের যেমন সুযোগ ছিল আর কাহারও তেমন সুযোগ ছিল না । বণের ত ছিলই না, কেন-না, এই সকল ঘটনার সময় তিনি রাজদরবারে পছছেন নাই। বাণ রাজ্যবৰ্দ্ধনের মালবাধিপতির বিরুদ্ধে কান্যকুক্তাভিমুখে যুদ্ধযাত্রার যে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়াছেন তাহার সহিত হর্ষের শাসনের শ্লোকে নিবদ্ধ বিবরণের অনেক বিরোধ দেখা যায়। বাণ যেখানে বলিয়াছেন, রাজ্যবৰ্দ্ধন হেলায় মালবসেনা মাত্র পরাজিত করিয়াছিলেন, সেখানে শাসনের শ্লোকে আছে, কশাঘাতে দুষ্ট ঘোড়ার মত রাজ্যবৰ্দ্ধন যুদ্ধে দেবগুপ্তাদি নৃপতিগণকে সংযত ( পরাজিত ) করিয়াছিলেন । বাণের মনে রাজ্যবৰ্দ্ধন কেবল মালবসেনার সম্মুখীন হইয়াছিলেন, শাসনের মতে র্তাহাকে অপরাপর শত্রুরাজার সেনার সহিতও যুদ্ধ করিতে হইয়াছিল । অবশ্যই বলা যাইতে পারে, অপর সকল শত্রু রাজার মালব-রাজের সহিত মিলিত হইয়া যুদ্ধ দিয়াছিলেন । স্বতরাং “হর্ষচরিতে" তাহারা স্বতন্ত্র উল্লিখিত হয়েন নাই । বাণের মতে রাজ্যবৰ্দ্ধনের মালবসেনাপরাজয় এবং গৌড়াধিপকতুক নিধন প্রভাকরবদ্ধনের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে এক যাত্রায় ঘটিয়াছিল । শাসনের শ্লোকে এই অভিযানের সহিত বসুধ বিজয় এবং প্রজার প্রিয়কাৰ্য্যসাধন যোগ করিয়া দেওয়৷ হইয়াছে। বাণের বিবরণ অনুসারে পিতৃরাজ্যলাভের পর রাজ্যবৰ্দ্ধনের এই সকল কাজ করিবার অবকাশ দেখা যায় না । প্রভাকরবর্ধনের জীবদ্দশায় তাহার তথাকথিত বসুধা বিজয়ের অবকাশ উপস্থিত হয় নাই । “হর্ষচরিতে"র পঞ্চম উচ্ছাসের গোড়ায় বাণভট্ট লিখিয়াছেন, ইহার পর একদিন রাজা ( প্রভাকরবর্দ্ধন । “কবচহর” রাজাবৰ্দ্ধনকে ডাকিয়া হুণগণকে ধ্বংস করিবার জন্য উত্তরাপথে প্রেরণ করিয়াছিলেন । “কবচহর” পদের অর্থ যাহার কবচধারণের যোগ্য বয়স হইয়াছে এমন যুবক । সুতরাং বাণের মতে হুণগণের বিরুদ্ধে যাত্র। রাজ্যবদ্ধনের প্রথম যুদ্ধযাত্রা, এবং তাহার পরই মালবরাজের বিরুদ্ধে শেষযাত্রা । “হর্ষচরিতে’র এবং শাসনের মধ্যে বিরোধ ভঙ্গের জন্য বলা যাইতে পারে, হর্ষচরিতে যেটুকু বলা হইয়াছে তাহাই সত্য, এবং শাসনে মালবসেনা পরাজয়ই অতিরঞ্জিত হইয় বসুধা বিজয়ে পরিণত হইয়াছে । কিন্তু শাসনের শ্লোকের শেষ পাদে অতিশয়োক্তির চিহ্ন দেখা যায় না। বাণ যেখানে লিখিয়াছেন, গৌড়াধিপ মিথ্যোপচারোপচিতবিশ্বাস নিঃশঙ্ক নিরস্ত্র রাজ্যবৰ্দ্ধনকে একাকী পাইয়া স্বভবনে নিধন করিয়াছিলেন, শাসনের শ্লোককৰ্ত্তা সেখানে বলিয়াছেন, রাজ্যবৰ্দ্ধন সত্যাকুরোধে শত্রুর ভবনে প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন। টানাটানি করিলে শ্লোকার্থের সহিত বাণের বিবরণের সামঞ্জস্যবিধান অসাধ্য নহে। কিন্তু সুরু হইতেই শ্লোকের বিবরণ যখন অন্ত