পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

موارع\ S99āు শঙ্কর তাহার হাত ধরিয়া ফেলিবে, হাত ধরিয়া কঠোর স্বরে শুনাইয়া দিবে—কি শুনাইবে সে ? শুধু তাহাকে এই কথাটা জিজ্ঞাসা করিবে—কি করেছি আমি তোমার ?. এই সময়ে হঠাৎ লাফ দিয়া ঘোড়া একটা আ’ল পার হইল। শঙ্করের স্থশ হইল, এতক্ষণের মধ্যে এখনও গড়খাই পার হয় নাই—জঙ্গল বেড়িয়া ঘোড়া ক্রমাগত ধান-ক্ষেতের উপর দিয়াই চলিয়াছে। জুতা পায়ে জোরে ঠোক্কর দিল, আচমক আঘাত পাইয়া ঘোড়া ছুটিল। গড়খাইয়ের যেন শেষ নাই, যত চলে ততই ধানবন, দিক ভুল হইয়া গিয়াছে, মাঠে না উঠিয়৷ ধানবন ঘুরিয়া মরিতেছে। শঙ্করের মনে হইতে লাগিল, যেমন এখানে সে মজা দেখিতে আসিয়াছিল, ঘোড়াসুদ্ধ তাহকে ঐ বনের সহিত বাধিয়া রাখিয়াছে, সমস্ত রাত ছুটিলেও কেবল বন প্রদক্ষিণ করিতে হইবে—নিষ্কৃতি নাই— গড়খাই পার হইয়া মাঠে পৌছানো রাত পোহাইবার আগে ঘটিবে না। জেদ চাপিয়া গেল, ঘোড়া জোরে—আরও জোরে—বিদ্যুতের বেগে ছুটাইল, ভাবিল এমনি করিয়া সেই অদৃপ্ত ভয়ানক বাধন ছিড়িবে। আর একটা উচু আ’ল, অন্ধকারে ঠাহর হইল না, ছুটিতে ছুটিতে হুমড়ি খাইয়া ঘোড়া সমেত তাহার উপর পড়িল। শঙ্করের মনে হইল, ঘোড়ার পিঠ হইতে ঝুটি ধরিয়া টানিয়া আ’লের উপর কে তাহাকে জোরে আছাড় মারিল । তীব্র আর্তনাদ করিতে করিতে সে নীচে গড়াইয় পড়িল। ঘোড়াও ভয় পাইয়া গেল, শঙ্করকে মাড়াইয়া ফেলিয়া ঝড়ের মত মাঠে গিয়া উঠিল, শুকনা মাঠের উপর দ্রুতবেগে ক্ষুর বাজিতে লাগিল—খট্‌খটু খটখট। রাত্রির শেষ প্রহর, আকাশে শুকতারা জলিতেছে। চারশ’ বছর আগে যেখানে একদা জানকীরাম পড়িয়া মরিয়া ছিলেন সেইখানে অৰ্দ্ধমূৰ্ছিত শঙ্কর ভাবিতে লাগিল, সেই জানকীরাম কোন দিক হইতে আসিয়া তাহাকে ফেলিয়া ঘোড়া কাড়িয়া লইয়৷ উত্তর মাঠের ওপারে তেঘর-বকচরের দিকে চলিয়া যাইতেছেন। ঘোড়ার ক্ষুরের শব্দ আঁধার মাঠে ক্রমশ: মিলাইয়া যাইতে লাগিল । বেড়ার ধারের ফুল শ্রীক্ষিতীশ রায় বেড়ার ধারের ছোট্ট কাটাফুল, ঝরবে জানি কণ্টকেরি ঘায়ু অদেখা সে—না জানে কেউ তারে, বিফল প্রেমের বেদনাতে অন্তরালে গোপন-প্রিয়ার মত অজানিত প্রিয়া, জন্ম নিল ছায়ার অন্ধকারে । আলোর হাসির সঞ্জীবনী পাবে না ক ফুল গুমরি মরে মৃত্যু--তমসায়!*

  • ইটালিয়ান ষ্টতে