পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গীত ঐগিরীন্দ্রশেখর বস্তু ο গীতায় বিভিন্ন মার্গ গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথমেই অবতারবাদের কথা আসিয়াছে এবং পঞ্চম অধ্যায়ে সংন্যাস ও ষষ্ঠ অধ্যায়ে যোগমার্গ আলোচিত হইয়াছে। পরবর্তী অধ্যায়-সমূহে অন্যান্য বিবিধ মার্গ ও নানা প্রকারের ধৰ্ম্মবিশ্বাসের উল্লেখ আছে। এই সকল বিভিন্ন নিষ্ট সম্বন্ধে শ্রীকৃষ্ণের মতামত স্মরণ ন রাখিলে গীতার উপদেশের তাৎপর্য সুগম হইবে না। এজন্য চতুর্থ অধ্যায়ের ব্যাখ্যা আরম্ভ করার পূৰ্ব্বেষ্ট সংক্ষেপে গীতোক্ত বিভিন্ন মার্গের আলোচনা করিব। শিক্ষা দীক্ষা ও প্রবৃত্তিভেদে ময়ূধের নানারূপ ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে আগ্রহ জন্মে। সকল ব্যক্তির পক্ষে একই মার্গের ব্যবস্থা কখনও যুক্তিযুক্ত হইতে পারে না। অধিকারভেদে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হিন্দুশাস্ত্রাঙ্গুমোদিত। হিন্দুধর্মের উদার উপদেশ এই যে, তুমি যে-কোন মার্গই অবলম্বন কর না কেন, উপযুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হইলে তাহাতেই তোমার শ্রেয়োলাভ হইবে। সকল মার্গেই কিছু-না-কিছু দোষ থাকিতে পারে, কিন্তু অধিকারভেদ বিচার করিলে কোন মার্গকেই সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলা যায় না। গীতার বিশেষত্ব এই যে, কোন একটি বিশেষ মার্গ অমৃষ্ঠেয় বলিয়া নির্দিষ্ট হয় নাই। গীতাকারের মতে বুদ্ধিযোগ অবলম্বন করিলে সকল মার্গই অস্তিমে পরব্রহ্মে পৌছাইয় দিবে। ধৰ্ম্ম-সম্বন্ধে এই উদারতা অতুলনীয়। আধুনিক সমাজ-সংস্কারকগণ কোথাও কিছু দূষণীয় দেখিলে সেই প্রথার সমূল উচ্ছেদসাধনে যত্নবান হন। তাহারা ভুলিয়া যান, মানুষ যে ভ্রান্ত আচরণ করে তাহার মূলে কোন-নাকোন দুর্লঙ্গা প্রেরণা আছে। এইজন্তই কুপ্রথার উচ্ছেদসাধন করিতে হইলে উপদেশের দ্বারা বা বলপূৰ্ব্বক নিরোধের দ্বারা স্বয়াৰ ফললাভ হয় না। প্রত্যেন্ত বাঞ্জি "উৰু - - - 1 • جمين 1 -.... • * মানিয়া লইয়াই শ্ৰীকৃষ্ণ তৎসম্বন্ধে উপদেশ দিয়াছেন। প্রত্যেক মার্গের আলোচনা শকুষ্ণ এমনই স্বনিপুণভাবে করিয়াছেন যে, সেই মার্গের দোস পল্পিত্যক্ত হইয়াছে এবং তাহাই সাধকের পক্ষে শ্রেয়স্কর হইয় উঠিয়াছে ; তন্মার্গাবলম্বীর আপত্তি করিবারও কিছুই রাখেন নাই। এইজন্যই গীতা সকল মার্গের উপাসকদিগের পক্ষেই আদরণীয়। প্রত্যেক অন্ধবিশ্বাসের যে মূল আছে এবং তাহার মধ্যে যে সত্য নিহিত থাকে তাহার দ্বারাই মাতুয উন্নত হইতে পারে, ইহাই শ্রীকৃষ্ণের উপদেশের সাংঘৰ্ম্ম । কোন ধৰ্ম্মমতের সহিত শ্রীকৃষ্ণের আত্যন্তিক বিরোধ নাই । এভাবে সমাজ-সংস্কারের চেষ্ট। আর কুত্ৰাপি দেখা যায় না, এবং শ্ৰীকৃষ্ণের মত উদারচেতা সংস্কারকও আর কেহই জন্মেন নাই । গীতাকার তৎকাল-প্রচলিত প্রায় সকল মার্গেরই অল্পস্বল্প আলোচনা করিয়াছেন । এইজন্য গীতার একটা ঐতিহাসিক মূল্য আছে। তৎকালে যে-সকল মার্গ প্রচলিত ছিল সে-সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আলোচনা করিব ও পরে প্রত্যেক মার্গ সম্বন্ধে শ্ৰীকৃষ্ণের মতামতের উল্লেখ করিব । ইহ পাঠ করিলে, পূৰ্ব্বে যাহা বলিলাম, তাহার মর্থ পরিস্ফুট হইবে। আধুনিক যুগে জন্মিলে শ্ৰীকৃষ্ণ খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম, ইসলামধৰ্ম্ম, বৌদ্ধধৰ্ম্ম সম্বন্ধে নিশ্চয়ই আলোচনা করিতেন। এমন কি সহজিয়াবাদ ও বৈষ্ণবধৰ্ম্ম তাহার আলোচনায় বাদ যাইত না । কেন একথা বলিতেছি পরে তাহা পরিস্ফুট হইবে। অনুমান করা যায় যে, তৎকাল-প্রচলিত কোন বিশিষ্ট মার্গই গীতায় বাদ পড়ে নাই । গীতায় নিম্নলিখিত মার্গ ও ধৰ্ম্মবিশ্বাসগুলির উল্লেখ পাওয়া যায় --সাংখ্যযোগ, সংস্কাস, কৰ্ম্মযোগ, যোগ, যজ্ঞ, বুদ্ধিযোগ, ইঞ্জিয়-সংযম,ইক্ৰিয়-নিরোধ, ব্রহ্মচৰ্য, কর্ণ-সংযম, তপ বোপা,প্ৰাণাৰাম, উপবাস, চিত্তভিত্ত্বিাং দান