পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গীত ঐগিরীন্দ্রশেখর বসু છે ૨ চতুর্থ অধ্যায় তৃতীয় অধ্যায়ের ব্যাখ্যার পর গীতোক্ত বিভিন্ন মার্গ ও ধৰ্ম্মবিশ্বাসের আলোচনা করিয়াছি। এক্ষণে চতুর্থ অধ্যায় হইতে ধারাবাহিক শ্লোক ব্যাখ্যা করিব । তৃতীয় অধ্যায়ে অর্জুন প্রশ্ন করিয়াছিলেন, ‘কিসের বশে মানুষ পাপ কাজ করে ? শ্ৰীকৃষ্ণ বলিলেন, কামই পাপের মূল এবং কামারাই সমস্ত আবৃত রহিয়াছে। এখানে স্বভাবতঃই প্রশ্ন উঠিবে—যখন কাম এতই প্রবল তখন ক্রমশঃ পাপদ্বারা পৃথিবী পূর্ণ হইয়া সমাজ ধ্বংস হইতে পারে, অতএব কি উপায়ে পাপের প্রভাব রহিত হইয়৷ সমাজ চলিতেছে ? সমাজের ভিতর এমন কি শক্তি আছে যাহাতে পাপ বৃদ্ধি পাইতে পায়ু ন ? এই অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ তাহারই উত্তর দিতেছেন। 8l১-৩ তৃতীয় অধ্যায়ের শেষে শ্ৰীকৃষ্ণ বলিলেন, বুদ্ধি হইতে শ্রেষ্ঠ খিনি সেই আত্মাকে জানিয়া কাম-রূপ শক্রকে জয় কর । আত্মাকে জানিবার উপায় বুদ্ধিযোগ । শ্রীকৃষ্ণ বলিলেন, “এই চিরফলপ্রদ অব্যয় যোগ আমি পূৰ্ব্বে বিবস্বনকে বলিয়াছিলাম, বিবস্বান মতুকে বলিয়াছিলেন এবং ময়ু ইক্ষাকুকে বলিয়াছিলেন, এইরূপে ক্রমে এই যোগ রাজযিবৃন্দ অবগত হইয়াছিলেন । হে পরন্তপ, কালপ্রভাবে এই যোগ ইহলোকে নষ্ট হইয় গেল । তুমি আমার ভক্ত ও সখা, সেজন্য তোমাকে আমি সেই পুরা ন উত্তম যোগরহস্য বলিলাম।” মহাভারতে অন্যস্থানে ও অন্যান্য পুস্তকেও কাহার পর কে এই যোগরহস্য অবগত হইয়াছিলেন তাহার উল্লেখ আছে ; ক্ষত্রিয়রাজগণের মধ্যেই এই রহস্য প্রধানত: বিদিত ছিল বলিয়া বোধ হয়। বড়ই আশ্চর্য্যের কথা ধে, কোন তত্ত্বজ্ঞানী ব্রাহ্মণের নাম শ্ৰীকৃষ্ণকথিত পরস্পরায় পাওয়া যায় না। উপনিষদেও অনেক স্থলে আছে, তত্ত্বাম্বেষী ব্রাহ্মণ সমিধ হস্তে ক্ষত্ৰিয়-রাজের নিকট ব্ৰহ্মজ্ঞানের উপদেশের জন্য গিয়াছেন। শ্ৰীকৃষ্ণ পূৰ্ব্বাধ্যায়ে বলিয়াছেন-ধাতুপ্রসন্ন না হইলে ব্ৰহ্মদর্শন হয় না রাখিবার জন্যই বিষয়ভোগের ক্ষত্রিয়রাজের পক্ষে ইচ্ছামত বিষয়ভোগের সম্ভাবন দরিদ্র ব্রাহ্মণের তুলনায় অনেক অধিক, এজন্য রাজর্ষিগণের মধ্যেই ব্ৰহ্মজ্ঞানী অধিক ছিলেন বলিয়া মনে হয় । মুণ্ডকোপনিষদের প্রথম খণ্ডে ১ ও ২ শ্লোকে আছে "বিশ্বের কৰ্ত্ত ও ভূবনের পালয়িত ব্ৰহ্মা দেবতাদিগের মধ্যে প্রথমে প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন। তিনি তাহার জ্যেষ্ঠপুত্র অথৰ্ব্বাকে সৰ্ব্ববিদ্যার আশ্রয় ব্রহ্মবিদ্য৷ কহিয়াছিলেন, অথৰ্ব্ব পুরাকালে ব্ৰহ্মা-কথিত সেই ব্রহ্মবিদ্যা বলিয়ছিলেন। তিনি ভারদ্বাজগোত্রীয় সত্যবা’ কে বলিয়াছিলেন; ভারদ্বাজ সত্যবাহ পরস্পরপ্রাপ্ত এই ব্রহ্মবিদা অঙ্গিরসকে বলিয়াছিলেন।” অঙ্গিরসের নিকট হইতে সৌনক এই বিদ্যার বিষয় অবগত হন। মুণ্ডক-কথিত পরম্পরা ও গীতোক্ত পরম্পর বিভিন্ন । মুণ্ডকে ব্রহ্মবিদ্যার কথা বলা হইয়াছে মাত্র ও গীতায় যে বুদ্ধিযোগের দ্বারা ব্রহ্মবিদ্যালাভ হয় তাহারই পরম্পরা বর্ণিত হইয়াছে। ব্রহ্মবিদ্যালাভের নানা উপায়ের মধ্যে বুদ্ধিযোগ বা কৰ্ম্মযোগ একটি বিশেষ উপায় এবং এই এবং ধাতুপ্রসন্ন আবশ্যকত।। অঙ্গিরকে শ্ৰীভগবানুবাচ— ইমং বিবস্বতে যোগং প্রোক্তবানহমব্যয়ম্। বিবস্থান নৰে প্ৰাহ মনুরিক্ষ,াকবেহব্ৰবীৎ || ১ এবং পরম্পরা প্রাপ্তমিমং রাজৰ্ষয়ে বিদু: | স কালেনেহ মহতা যোগো নষ্ট পরস্তুপ ॥ ২ স এবায়ং ময়া তেইছ্‌ যোগ: প্রোক্ত: পুরাতন: | ভক্তোহসি মে সখা চেতি রহস্তং হ্যেতদুত্তমম্।। ৩