পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন গুহ্যযোগ রাজর্ষিগণের মধ্যেই প্রবষ্টিত ছিল। এই কারণেই নবম অধ্যায়ে ঐকৃষ্ণ ইহাকে রাজবিদ্য বলিয়াছেন । ৪৪-৫ শ্রীকৃষ্ণ যখন বলিলেন যে, আমি পূৰ্ব্বে বিবস্বনকে এই যোগের কথা বলিয়াছিলাম তখন অৰ্জুনের মনে স্বভাবতঃই সন্দেহ উঠিল যে, শ্ৰীকৃষ্ণ ত এখনকার লোক, বিবস্বান কতকাল পূৰ্ব্বে জন্মিয়াছিলেন । শ্রীকৃষ্ণ বিবস্বানকে যোগের কথা বলিয়াছিলেন—ইহা কি প্রকারে সম্ভব হয় । অৰ্জ্জুন বলিলেন, “তোমার জন্ম অল্পদিন পূর্বের ঘটনা, বিবস্বানের জন্ম বহুপূৰ্ব্বের ঘটন’, অতএব তুমি আদিতে বলয়ছিলে—ইঙ্গ কি করিয়া জানিব ?” শ্ৰীকৃষ্ণ বলিলেন, ও তোমার অনেক জন্ম হইয়। গিয়াছে, আমি সে-সকল জন্মের কথা জানি, কিন্তু হে পরন্তপ, তুমি তাহ জান না ।” "ζε অর্জন, আমার এই শ্লোক দুইটির প্রচলিত অর্থ মানিলে পুনর্জন্মজাতিস্মহতা স্বীকার করিতে হয় ; এই দুইয়েরই প্রমাণাভাব । ( পূৰ্ব্বপ্রকাশিত পুনর্জন্ম-বিচার দ্রষ্টব্য-প্রবাসী, ১৩ ৯ ভাদ্র । ) যদিও প্রচলিত অর্থই সাজ। অর্থ স্বীকার করিতে হয়, তথাপি এই শ্লেকের পুনর্জনুবাদের বাদ ও অন্য প্রকার ব্যাথ্যা কর! সম্ভব এবং আমি যে ব্যাখ্যা দিতেছি তাহার পরবত্তী শ্লোকগুলির সহিত সঙ্গতিও লক্ষিত হইবে । আমার মতে, গীতার এখানে যে-অবতারতত্ত্ব বর্ণিত হইয়াছে তাহা প্রচলিত অবতারতত্ত্ব নহে পূৰ্ব্বপ্রকাশিত অষতারবাদ ভ্রষ্টব্য—প্রবাসী, ১৩৩৯ জ্যৈষ্ঠ ) । সাধারণে মনে করেন ভগবান কোন বিশেষ বিশেষ ম্যুরূপেই অবতার হইয়া দেখা দেন । তুমি, আমি, রাম শুiম যদু আমরা ভগবানের অবতার নহি । শ্ৰীকৃষ্ণের উক্তি বিচার করিয়া দেপিলে বুঝা যাইবে যে, তিনি এরূপ বলেন না। র্তাহার মতে সকল মনুষ্যতেই ভগবান অবতীর্ণ হন। “মম বসুর্পন্ধুবৰ্ত্তন্তে মনুষ্যা: পার্থ সৰ্ব্বশ:’ আমার নির্দিষ্ট পথই সমস্ত মনুষ্য বলিয়া গীভ। ԳԵ Ֆ থাকে। ১৩২৭ শ্লোকে আছে, “সৰ্ব্বভূতে সমভাবে অবস্থিত নাশশীল পদার্থেও অবিনাশীরূপে বিদ্যমান ইহাকে যিনি দেখেন তিনিই যথার্থ দেখেন ।” ৪।১৩ শ্লোকে বলিলেন, আমি চারিবর্ণ হষ্টি করিয়াছি এবং আমিই তাহদের কর্তা । কৰ্ত্ত হইলেও আমি লিপ্ত নহি বলিয়া অকৰ্ত্তাই থাকি । ৪৯ শ্লোকে বলিতেছেন, “আমার জন্ম কৰ্ম্ম তত্ত্ব যে জানে সে মুক্ত হয়” অর্থাং আত্মজ্ঞানও যা, আমার জন্মকৰ্ম্ম জ্ঞান ও তা । ৪৩৫ শ্লোকে বললেন, “এই জ্ঞান পাইলে সমস্ত প্রাণিগণকে তুমি আপনাতে এবং আমাতেও দেখিবে ।” প্রত্যেক মনুষ্যতেই যদি ভগবান অবতীর্ণ হন তবে বিশেষ করিয়া ‘অবতার’ কাহাকে বলিব ? যিনি ধৰ্ম্মসংস্থাপন করেন ও পাপ নষ্ট করেন তিনিই অবতার পাপ ও ভগবানই করান, ধৰ্ম্মরক্ষাও তিনি করান। পূৰ্ব্ব অধ্যায়ে বলা হইয়াছে কণম পাপের উৎপত্তি ; কাম ও ভগবানের স্মৃষ্টি । কাম হইতে উৎপন্ন পাপ যে-উপায়ে নিবারিত হয় তাহা ও ভগবানের স্থষ্টি । সমাজে যেমন পাপের প্রবৃত্তি rেইরূপ পাপ-নিবারণেরও প্রবৃত্তি আছে ; ভগবানের যে-অংশ এই পাপের বৃদ্ধি হইতে দেয় ন। তাঁহাই ভগবানের অবতার অংশ । তোমার আমার সকলের ভিতরেই এই অবতার আছেন । সমাজের পাপ বৃদ্ধি হইলেই স্বতঃই তাহা বারিত হয় । পরের শ্লোকগুলির ব্যাখ্যায় এই অর্থ পরিস্ফুট হইবে । দিব্যজ্ঞ’ন জন্মিলে মাতুয় দেখিতে পায় সবই ভগবানের লীলা ও এই ভগবান অ।মিই। পূৰ্ব্বে যিনি জন্মিয়াছেন তিনিও আমি, পরে যিনি জন্মিবেন তিনিও আমি— অতএব শ্ৰীকৃষ্ণ যখন বলিলেন, “আমি বিবস্বনিকে বলিয়ছিলাম” তখন বুঝিতে হইবে যে তাহ৷ এই অর্থেই প্রযুক্ত হইয়াছে । শ্বেতাশ্বতর দ্বিতীয় অধ্যায় ১৬ শ্লোক যজুৰ্ব্বেদ হইতে উদ্ধত ; তাহাতে আছে-- হইতে 可7豆 এষ হ দেবঃ প্রদিশোহনুসৰ্ব্বা: পুৰ্ব্বে হ জগতঃ সউ গর্ভে অস্ত: অৰ্জ্জুন উবাচ--- অপ বং ভবতে জন্ম পয়ং জন্ম বিশ্বস্বত: । কথমেতস্বি গ্রাণীয়াং ত্বমাদেী প্রোক্তবাণিতি ॥ ৪ শ্ৰীভগবানুবাচ--- বহুনি মে বার্তীতানি জন্মানি তবচাৰ্জ্জুন । তান্ত্যহং বেদ সৰ্ব্বাণি ন ত্বং বেথ পুস্তপ ॥ ৫