পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

با مرگ よ>○○を> ক্ষণমাত্রও থাকিতে পারে না তখন বাস্তবিক শরীরের পক্ষে অকৰ্ম্ম অসম্ভব তা আমি যতবড়ই সন্ন্যাসী বা ত্যাগী হই না কেন । তৃতীয় অধ্যায়ের প্রথমেই ইহার আলোচনা আছে । শ্রীকৃষ্ণের উপদেশের সার এই যে কৰ্ম্ম কিছুতেই বন্ধ করা যায় না ও কৰ্ম্মের ভালমন্দের বিচারেরই আবশ্যকতা থাকে না, যদি নিস্পৃহ বা যোগযুক্ত হইয়৷ কৰ্ম্ম করা যায়। কৰ্ম্মের অপেক্ষ যে বুদ্ধিতে কৰ্ম্ম করা যায় তাহাই বিচাৰ্য্য । ৪১৯-২২ “র্যাহার সমস্ত কৰ্ম্মের উদ্যোগ ফলকামনাশূন্য, যাহার সমস্ত কৰ্ম্মবন্ধন জ্ঞানাগ্নিতে দগ্ধ হইয়া গিয়াছে, বুদ্ধিমানের তাহাকেই পণ্ডিত বলেন । কৰ্ম্মফলে আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া যিনি নিত্যতৃপ্ত ও নিরাশ্রয় অর্থাৎ কোন বহিবিষয়ের উপর যিনি নিভর করেন না, তিনি কৰ্ম্মের মধ্যে থাকিলেও বাস্তবিক কিছুই করেন না । নিষ্কাম, সংযতচিত্ত এবং সর্বপরিগ্রহত্যাগী অথাৎ সর্বপ্রকার ভোগ্যবস্তুর আহরণ সম্বন্ধে উদাসীন পুরুষ কেবল শরীর দ্বারাই কৰ্ম্ম করেন বলিয়া পাপভাগী হন না । লোভ না করিয়া যাহ পাওয়া যায় তাহাতেই সস্তুষ্ট, সৰ্ব্ববিধ দ্বন্দ্ব হইতে মুক্ত, সিদ্ধি অসিদ্ধিতে সমভাবাপন্ন পুরুষ কৰ্ম্ম করিয়াও আবদ্ধ হন না।” ৪২৩ এই শ্লোকের প্রচলিত অথ এইরূপ :– “আসক্ষরহিত, রাগদ্বেষ মুক্ত সাম্যবুদ্ধিরূপ জ্ঞানে স্থিরচিত্ত এবং কেবল যজ্ঞের জন্যই কৰ্ম্ম করেন যে ব্যক্তি র্তাহার সমগ্ৰ কৰ্ম্ম বিলীন হইয়া যায়।” আমার মতে অম্বয় ও ব্যাখা এইরূপ হইবে —গতসঙ্গস্য, মুক্তস্য, জ্ঞানাবস্থিতচেতস: যজ্ঞায় আচরত: সমগ্ৰম্ কৰ্ম্ম ( অপি ) প্রবিলীয়তে, অর্থাৎ “যিনি গতসঙ্গ ও মুক্ত এবং যিনি স্থিতপ্রজ্ঞ তিনি যজ্ঞার্থে কৰ্ম্ম করিলেও তাহার সমগ্ৰ কৰ্ম্ম হইতে যস্ত সৰ্ব্বে সমারম্ভাঃ কামসঙ্কল্পবৰ্জ্জিতাঃ । জ্ঞানাগ্নিদগ্ধকৰ্ম্মাণং তমাহু: পণ্ডিতং বুধাঃ ॥ ১৯ ত্যক্ত, কৰ্ম্মফলাসঙ্গং নিত্যতৃপ্তে। নিরাশ্রয়ঃ। কৰ্ম্মণ্যভিপ্রবৃত্তোহপি নৈব কিঞ্চিৎ করেীতি স: || ২০ নিরাশীর্ষতচিত্তাত্মা তত্ত্বসর্বপরিগ্ৰহঃ । শারীরং কেবলং কৰ্ম্ম কুৰ্ব্বস্নাপ্নোতি কিম্বিধৰ্ম্ম ২১ যদৃচ্ছালাস্তু সস্তুষ্টে দ্বন্দ্বাতীতে বিমৎসরঃ । সম: সিদ্ধা কৃত্বাপি ন নিবধ্যতে ॥ ২২ বিলীন হইয়া যায়।” সাধারণ প্রচলিত ব্যাথায় যজ্ঞকৰ্ম্মের বন্ধন নাই মনে হয়, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তাহা নয় । ৩১৪ শ্লোকে যজ্ঞ কৰ্ম্মসমুদ্ভব বলা হইয়াছে। যজ্ঞের বন্ধন হৃষ্টিচক্রের সহিত জড়িত, একথা আমি তৃতীয় অধ্যায়ে বলিয়াছি । গতসঙ্গ হইলে কেবল যে সাধারণ কৰ্ম্মের বন্ধন হয় না তাহা নহে-যজ্ঞকৰ্ম্মও মছুষ্যকে বন্ধন করিতে পারে না । ৪৩২ শ্লোকেও যজ্ঞকে কৰ্ম্মজ বলা হইয়াছে। আমি যে অর্থ নির্দেশ করিয়াছি তাহা না মানিলে পূৰ্ব্বাপর অর্থসঙ্গতি থাকে না । শ্ৰীকৃষ্ণ বৈদিক যজ্ঞের বিশেষ পক্ষপাতা ছিলেন না, একথা পূর্বেই বলিয়াছি । শ্ৰীকৃষ্ণ যজ্ঞকৰ্ম্মের ব্যাপক অর্থ করিয়াছেন এবং কি ভাবে দেখিলে যজ্ঞ কৰ্ম্মের বন্ধন হয় না তাহ বলিতেছেন । ৪২৪ “তিনি অর্পণ অর্থাৎ হোমক্রিয়াকে ব্রহ্ম ভাবেন, হবি অর্থাৎ অপণদ্রব্যকে ব্রহ্ম ভাবেন, ব্রহ্মপ্লিতে ব্ৰহ্মই হোম করিতেছেন অর্থাৎ অগ্নিকে ৪ ব্রহ্ম ও যজমানকেও ব্রহ্ম ভাবেন এইরূপ র্যাহার বুদ্ধিতে সমস্তই ব্ৰহ্মময় তিনি ব্রহ্ম লাভ করেন ।” নানা প্রকার কৰ্ম্মকে শ্ৰীকৃষ্ণ পরবত্তী শ্লোকসমূহে যজ্ঞ’ নামে অভিহিত করিতেছেন। পূর্বপ্রকাশিত যজ্ঞ সম্বন্ধে আলোচনা দ্রষ্টব্য । ৪২৫ “কোন যোগ দেবতার বা ইন্দ্রিয়াদির উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করেন, কেহ বা ব্ৰহ্মাগ্নিতে যজ্ঞের দ্বারাই যজ্ঞের যাজন করেন, অর্থাৎ ব্ৰহ্মজ্ঞানে যজ্ঞকে আহুতি দান রূপ যজ্ঞ করেন অর্থাং ব্রহ্মজ্ঞান উদয় হইলে যজ্ঞ পরিত্যাগ করেন।” ইন্দ্রিয়াদি সম্বন্ধীয় যজ্ঞ’কেও দৈবযজ্ঞ বলা যায়। কারণ দেবতা বলিলে কেবল যে ইন্দ্র, বরুণ বুঝিতে হইবে তাহা নহে, সমস্ত ইন্দ্রিয়েরই অধিষ্ঠাতৃ দেবতা আছে—ইন্দ্রিয়কে উপনিষদে অনেক স্থলে দেবতা বল। হইয়াছে । গতসঙ্গস্ত মুক্তস্ত জানাবস্থিত চেতমঃ। যজ্ঞায়াচরতঃ কৰ্ম্ম সমগ্রং প্রবিলীয়তে ॥ ২৩ ব্ৰহ্মাৰ্পণং ব্রহ্ম হবি ব্রহ্মায়ে ব্রহ্মণ স্থতম্। ব্রহ্মৈব তেন গন্তব্যং ব্রহ্মকৰ্ম্ম সমাধিনী ॥ ২৪ দৈবমেবাপরে যজ্ঞং যোগিন: পযুপাসতে । ব্ৰহ্মাগ্নাবপরে যজ্ঞং যজ্ঞেনৈবোপজুহ্বতি ॥ ২০