পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سی:۹ه S99āు একে ধ’রে বললেন—‘হুজুরই মা বাপ’, ফুজুর ম৷ রক্ষা করলে ” হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিয়া বসে, “এখানে কাগজ নেয় না কেউ ?” স্বামী খুব উৎসাহের সহিত বলিয় ওঠে—“কেন, বড়বাবু ত নেন,—পাক্ষিক ‘বস্তধারা,’–নানান রকম খবর থাকে । তাই থেকেই তো সেদিন টের পেলাম যে আমাদের লাইনট গবর্ণমেণ্ট বোধ হয় শীগগীর নিচ্চে না...” এই রকমই কোন কথাবাৰ্ত্তার মাঝে স্ত্রী একদিন হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিয়া বসিল—“আচ্ছা, গান্ধীজীর নাম শুনেচ ?.গবর্ণমেণ্ট যে রাউণ্ড টেবল কনফারেন্সে সবাইকে ডেকেচে." কথাটার মধ্যে একটু পোচা ছিল । স্বামী একটু অপ্রতিভভাবে হাসিয়া বলিল—“না:, খোদ গিন্নী আমার গান্ধীজীর ভলণ্টিয়ার ছিলেন, আমি আর নাম জানব কোথা থেকে ?” তাহার পর সত্যই যে জানে সেট। প্রমাণ করিবার জন্য ভারিকে হইয়। বলিল,—“লোকট। কি চরকাই কার্টুতে পারে, উ: যে-ছবিই দেখ—নাগাড়ে চরকা কেটে যাচ্ছে। আমাদের বড়বাবু কিন্তু বেজায় চটী, বলেন--” প্রতিবেশীর মধ্যে এই বড়বাবু, মালবাবু, আর পোষ্টমাষ্টার বাবু—বাঙালী এই তিন ঘর । আর এক ঘর আছে, তবে তাহাকে ঠিক প্রতিবেশী বলা চলে না-মাইল-দুয়েক দূরে স্বরজপুরার করালীবাবু,— তামাকের ব্যবসা করেন আর কিছু জমিজমাও আছে। সংক্ষেপে ‘তামাকবাবু’ নামে পরিচিত। উৎসবে বাসনে সব ক’টি একত্র হয়। আমার মনে হয় বি-এন-ডব্লিউ-আর-এর বড়বাবু বলিলেই পরিচয় দেওয়া হইয়া গেল । সেই মাথায় প্রায় একই রকম টাক, তাহার নীচে একই রকম কাচাপাক৷ আধা-বাবর চুল, বেটেসেটে গোলগাল চেহারা, অহেতুক ভাবে ব্যস্ত, অথচ প্রায় সবার মধ্যেই বেশ একটি প্রসন্নতার ভাব । আর কি করিয়া জানি না, সব বৰ্দ্ধমান জেলায় বাড়ি । অন্য জেলা হইলেও খোজ লইয়া দেখিয়াছি—বৰ্দ্ধমান জেলারই কোন রেলষ্টেশন হইতে বেশী কাছে পড়ে, ছেলেবেলা হইতে আমার কেমন এ লাইনের ষ্টেশনমাষ্টার লইয়া একটা বাতিক আছে। ষ্টেশনে গাড়ি থামিলেই আমি মুথ বাড়াইয়া থাকি, আর দেখিলেই চিনিতে পারি। ঐ করিয়া ছেলেবেলায় কেমন একটা ধারণ দাড়াইয়৷ গিয়াছিল যে, যে-কোন লোককে এ-লাইনের ষ্টেশন মাষ্টার করিয়া দিলে ঐ রকম হইয়া যাইতে বাধ্য । আমাদের বাড়ির পাশে কুমারদের ছাচে ঢালিয়া পুতুল গড় দেখিয়৷ ধারণাটা কেমন করিয়া বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছিল। আমাদের পাড়ার তারু মেসে ছিলেন লম্ব, রোগা আর বেজায় বদমেজাজী ; মাসীমার সঙ্গে প্রায় থিটিমিটি হইত। মনে আছে একদিন ঝগড়ার পর গভীর সহানুভূতির সহিত মাসীমাকে আমার চিকিৎসাটার কথা বলি-- মাসীম আশ্চৰ্য্যভাবে হাত দুটো তুলিয়া বলেন— “কেন, ইষ্টিশন মাষ্টার হ’লে কি হবে ?” “ত হ’লে সৰ্ব্বদা হাসবেন, আর বেঁটেও হবেন, মোটাও হবেন ।” মাসীমা—“তবের্য অলপ্লেয়ে---” বলিয়া তাড়া করেন । বড়বাবু গান্ধীজীর ওপর মৰ্ম্মাস্তিক চট। ইহার বিশেষ অন্য কিছু কারণ নাই ; কারণ শুধু এই মাত্র যে গান্ধী একটি নূতনত্ব। ত্রিশ বৎসর ধরিয়৷ সেই একই টাইম টেব ল-নিয়ন্ত্রিত একই রকম গাড়িগুলিকে আবাহন ও বিদায় করিতে করিতে আর সেই একই রকম ষ্টেশন ও কোয়াটাস-এর মধ্যে আনাগোনা করিতে করিতে যে-কোন রকম নূতনত্বের উপর একটা অবিশ্বাস আর বিদ্বেষ দাডাইয়া যায়ই-দোষ দেওয়া চলে না। নিজের সহযোগীদের একত্র করিয়া বড়বাবু বলেন—“গবর্ণমেণ্ট ত ব্যতিব্যস্ত হবেই— তোমাদের নিজেদের কথা ভেবে দেখ না গো-জান, দিনে-রেতে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সাতখানি গাড়ি আসবে, সাতখানি যাবে ; বেশ নিশ্চিন্দি আছ,—হঠাৎ খবর এল স্পেশাল গুডস রান করচে, কেমন সামালসামাল পড়ে যায় ? মনে হয় না ? এ আবার