পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্মপূজার নৃত্য বীরভূম লোকনৃত্যে এ সকল দোষের সম্পূর্ণ অভাব, কারণ লোকনৃত্য জাতির সহজ সরল ভাব হ’তে প্রস্থত ; তাতে কৃত্রিমতা অথবা কোন রকম বিলাস-বিভ্রম থাকে না । সেজন্য প্রত্যেক জাতির পক্ষে সেই জাতির আপন আপন জাতীয় লোকনৃত্যই যে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষভাবে উপযোগী, তা আজকাল পাশ্চাত্য জগতে স্বীকৃত হয়ে পড়েছে । মেয়েলী ব্রত নৃত্য ও উৎসব নৃত্য সনাতন হিন্দুয়ানীর অথবা খাটি ভারতীয় সভ্যতার বিরুদ্ধ বলে বাংলার যে সকল আধুনিক ভদ্র ও শিক্ষিত ব্যক্তি নৃত্যের প্রথাকে দূষণীয় মনে ক’রে শিক্ষাক্ষেত্র ও সমাজ থেকে নৃত্যকে নিৰ্বাসিত করতে বদ্ধপরিকর, তাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত জানেন না যে, বাংলা দেশে এক সময়ে বিশুদ্ধ নৃত্যের প্রথা কি পুরুষ কি মেয়েদের মধ্যে সামাজিক ও ধৰ্ম্মজীবনে অতি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল, এবং তার ফলে বাংলার পুরুষ ও মেয়েদের শরীর আজকালকার চেয়ে অনেক বেশী বলিষ্ঠ, স্বাস্থ্যবান ও কৰ্ম্মঠ ছিল । 蒙 প্রতি গ্রামে ছোট ছোট মেয়ের প্রতিমাসে ব্রত উপলক্ষে পাড়া ঘুরে ঘুরে বাড়িতে বাড়িতে ছড়া আবৃত্তি করতে করতে নুত্য করত । বিবাহ ও ব্ৰতাদি উপলক্ষে বয়স্ক মহিলারাও প্রকাশ্যভাবে গান গেয়ে গেয়ে নানাপ্রকার সুন্দর অথচ স্বরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গীর সহিত নৃত্য করতেন। এটা যে কেবল একটা মান্ধাতার আমলের অতীত যুগের কাহিনী তা নয়, এখনও বাংলার স্বদর নিভৃত পল্লীতে— যেখানে আমাদের আধুনিক শিক্ষা ও শহরের বিরুত আদর্শ তার প্রভাব সম্পূর্ণ বিস্তার করতে পারে নি— বাংলার নিজস্ব এই সুন্দর স্বাস্থ্যপ্রদ ও আনন্দপ্রদ মেয়েলী নৃত্যের প্রথা বেঁচে আছে। কিন্তু এখনও যে এই প্রথা বেঁচে আছে, তা আমাদের শহুরে শিক্ষিত লোকদের মধ্যে অনেকেই কেন—বেশীর ভাগ লোকেই যে জানেন না, তা বললে অত্যুক্তি হয় না । মাস-চারেক আগে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃস্থানীয় বিখ্যাত একজন বাঙালী বন্ধুর সঙ্গে এই নিয়ে আমার আলোচনা হয়। তিনি গুজরাট ইত্যাদি অঞ্চলের মেয়েদের “গৰ্ববা” নৃত্যে মুগ্ধ হয়ে সেই