পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ե-ֆ 8 ఏ99áు বীণা কহিল, “তা ঠিক, কিন্তু রাত্রে উঠে মেয়ে যখন চেচায় তখন অন্ধকারে তার পায়ের দিকে মাথা কল্পনা করলে ব্যাপারটা তার বা আমার কারও পক্ষেই বিশেষ সুবিধের হয় না।” বিমান উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল । ঐন্দ্রিলা পূৰ্ব্ব হইতেই উসফুস করিতেছিল, এই অবসরে উঠিয়া পড়িয় নিত্যস্ত কৰ্ত্তব্যবোধে একটু হাসিয়া বিমানকে নমস্কার করিল। বিমান ত্রস্তে চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া প্রতিনমস্কার করিল। বাহিরে আসিয়া ঐঞ্জিল। দেখিল, দরজার এক পাশে, একতলার দুই সার ঘরের মধ্যেকার পথে, অন্ধকারে দেয়াল ঘেষিয়া হেমবালা দাড়াইয় আছেন। ঐন্দ্রিল বাহির হইয়া আসিতেই তিনি একটু চঞ্চল হইয়৷ উঠিলেন মনে হইল। ব্যাপারট। ঐন্দ্রিলার কেমন ভাল লাগিল না, তাহাকে কিছু না বলিয়াই, তাহার পাশ কাটাইয়া সে দ্রুতপদে দুতলার সিড়ির দিকে চলিয়া গেল। বিমান আবার গুছাইয়া বসিল । একটু আগে যে হাসি সুরু করিয়াছিল তাহারই জের টানিয়া কহিল, “বেচার অজয় ।” বীণা তাড়াতাড়ি প্রশ্ন করিল, “কেন, তার কি হ’ল আবার ?” বিমান ঠোট চাপিয়া একটু হাসিয়া কহিল, “সেইটেই ত ভেবে পাচ্ছি না । পৃথিবীতে মেয়ে ব’লে যে একটা জাত আছে তাই যে জানৃত না, আজ তার ভাব দেখে মনে হচ্ছিল, আর যে কিছু পৃথিবীতে আছে তাই যেন সে জানে না ।” বীণা নতমস্তকে চট করিয়া কি ভাবিয়া লইয়া হাসিয়াই বলিল, “ও রকম হয় । এ-নিয়ে আপনি বেশী ব্যস্ত হবেন না। খুব লাজুক আর ভীরু মানুষরা বিপদে পড়লে হঠাৎ এক-এক সময় মারাত্মক-রকম সাহসের পরিচয় দিয়ে ফেলে ।” “ছ, মরিয়া হয়ে ওঠার কারণ ত অবিশুি ছিলই ।” “সেট কি, শুনি ?” “আমার মুখ থেকে শুনলে আপনার কি খুব ভাল লাগবে ? যথাসময়ে ঠিক জায়গা থেকেই শুনতে পাবেন আশা করি।” “আঃ, আপনি এত বাজে কথাও বলতে পারেন,” বলিয়া বীণা উচ্ছ্বসিত আবেগে হাসিতে লাগিল । বীণাকে এমন ভাল মেজাজে পাওয়া অভ্যস্ততঃ বিমানের অদৃষ্টে সচরাচর ঘটিয়া উঠে না। কথার স্রোতকে ইহার পর কোনদিকে মোড় ফিরাইলে আরও কিছুক্ষণ তাহার কাছে বসিয়া যাইতে পারে তাড়াতাড়ি তাহ। ভাবিয় লইতেছে এমন সময় অত্যন্ত গম্ভীর মুখ করিয়াই ধীরপদে হেমবালা আসিয়া ঘরে ঢুকিলেন । বিমান ব্যস্ত-সমস্ত হইয় উঠিয় দাড়াইল, তাহার দিকে দৃকপাতমাত্র না করিয়ু, একেবারে বীণার পাশে গিয়া দাড়াইয়। তিনি বলিলেন, “তোর মেয়ের কি হয়েছে বলতে পারিস্ ? সেই থেকে ক্রমাগত ছট্‌ফট্‌ করছে, কিছুতে ঘুম পাড়ানো যাচ্ছে না ! তুই একবার এসে চেষ্টা ক’রে দেখবি ?” “এই যাচ্ছি। আচ্ছ, আসি তাহ’লে’ বলিয়া দ্রুত্ত নমস্কার সারিয়া বীণা বিমানকে বিদায় দিল, তারপর হেমবালার সঙ্গে তাড়াতাড়ি উপরে আসিয়া উঠিল ; দেখা গেল, পরিপাট করিয়৷ পাতা বিছানায় একটি পুতুল পাশে করিয়া মন্দির অধোরে ঘুমাইতেছে। ঝি-চাকরদের কেহ কোনও কাজে ঘরে আসিয়া আলো জালিয়াছিল, যাইবার সময় মনে করিয়া সেটা নিবায় নাই । আলোট নিবাইয়া আসিয়া নত হইয়া ঘুমন্ত কন্যার কপালে বীণা একটি চুম্বন মুদ্রিত করিয়া দিল । ছড়ি ঘুরাইতে ঘুরাইতে বাহির হইয়া আসিয়া বিমান তাড়াতাড়ি ট্রামের রাস্ত ধরিল । আসিবার সময় বীণা-ঐন্দ্রিলাদের কেহ হয়ত দেখিবে আশ। করিয়া ট্যাক্সি লইয়া আসিয়াছিল, কতক্ষণ থাকিতে পাইবে জানিত না বলিয়। সেটাকে অপেক্ষ করায় নাই। পথে আসিতে শুনিল, দূরে একটা গির্জার ঘড়িতে দশটা বাজিতেছে। মনে মনে বলিল, “না, আজ সন্ধ্যাটা নিতান্তই বাজে খরচ হ’ল । এর পর কি করব ? বাড়ী ফিরে গিয়ে ঘুম দেব কি ? ছত্তোর, আমি কি জরো রুগী, না আমার বাড়ীতে একটা ক্যাটকেটে বেী আছে যে, অন্ধকার না হতেই বাড়ী গিয়ে হাজির হব ? কিন্তু কোথায়ই বা ধাই ?...’ একটা বাস যাইতেছিল, চড়িল না। খানিকক্ষণ পরেই