পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ն8Հ صفة صك لاكولادة গেল না । পোষ্টাপিসের টাকা জমানে রহিল, গায়ের গহন বাধা পড়িল না, বড় বড় ডাক্তারের তারককে দেখার সময়ট অবসর-হিসাবে যাপন করিল। একটু নিরীহ দুৰ্ব্বল প্রতিবাদ করিয়াই সে হইল বিধবা । উকুনট চমৎকার জলিতেছে, রান্নাঘরের এককোণে জমা করিয়া রাখার দরুণ এই বাদলেও কাঠগুলি শুকনে। খটখটে হইয়া আছে। পিড়িতে উবু হইয়। বসিয়া কুস্কম মোহাবিষ্টার মত আগুনের দিকে চাহিয়া রহিল। কি রং আগুনের ! কুমুম কতকাল দু-বেল উচুন জালাইয় রান্না করিয়াছে, এমন স্থূল অগ্নিশিখায় এমন গাঢ় রঙের আবির্ভাব সে কখন দেখে নাই । তারকের চিতায়ও না । ওদিকে মামী লুচি ভাজিতেছিলেন, ঘিয়ের গন্ধে স্কমের কষ্ট হইতে লাগিল। আগুনের অভূতপূৰ্ব্ব রূপ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সচেতন থাকিয়াও ঘিয়ের গন্ধে সৰ্ব্বাঙ্গে যে অস্বস্তিকর অমুভূতি হইতেছিল তাহাও সে উপলব্ধি করিতে পারিল । হঠাৎ রোমাঞ্চ হইয়। তাহার হাড়ের ভিতর পর্য্যস্ত সির সিবু করিয়া উঠিল। 焕 豪 骑 肇 কুষম খুব রোগ হইয়া গিয়াছে । দেহে মনে সুস্থ থাকার পক্ষে তার কতকগুলি গুরুতর অসুবিধা উপস্থিত হইয়াছে । কয়েক মাসের মধ্যে পৃথিবী তার কাছে আর একটি মানুষ আদায় করিবে,—বৈধব্য-জীবনট। এ অবস্থা। উপযোগী নয়, রাত্রে তার ভাল ঘুম হয় না। শোক, অন্ধকার, ঘুমন্ত খোকা আর খানিকট পাগলামী আজকাল কুমুমের রাত্রির সম্পদ। শোক তাহাকে থাকিয়! থাকিয় কাদায়, অন্ধকার তাহাকে ভয় দেখায়, খোকা তাহাকে বিরক্ত করে, আর পাগলামী তাহাকে জাগাইয়া রাখে । তার পাগলামী এইরূপ। সে মনে করে তারকের সঙ্গে গল্প করিয়৷ সে যুত রাত জাগিত এখন তারকের জন্য শোক করিয়া তার চেয়ে ঢের বেশী রাত জাগা উচিত। ঘুম আসিলেও সে তাই ঘুমায় না। ঘুমকে ঠেকানে তার পক্ষে কঠিন নয় । তারকের সোনার রং কেমন করিয়া পুড়িয়া কালো হইয়৷ ফোঙ্ক পড়িয়াছিল সেই দৃশুট কল্পনা করিলেই হইল । ঘুমের জার চিন্থমাত্র থাকে না । মমীর বড়মেয়ে বাটি নিতে আসিয়া বলিল, “কত কাঠ গু জেছিস কুহুম ? একদিনে সব পুড়িয়ে শেষ করবি নকি ? ‘আনমনে গুজে ফেলেছি দিদি ' কুসুম তিন-চারখান। কাঠ টানিয়া বাহির করিয়৷ জল ছিটাইয় নিবাইয়া উনুনের পাশে রাখিল । ধোয়ায় তার চোখ কট্‌-কটু করিতে লাগিল আর জল পড়িতে লাগিল । জলন্ত কাঠ ভাল করিয়া ন নিবাইলে যেমন ধোয়া হয় তেমনি একটা বিশ্রী শ্মশান-আপ্রয়ী গন্ধ ছাড়ে ! ধোয়ার ছলনায় নয়, প্রকাশ্বে এবং গোপনে কুসুম আজকাল খুব কাদে । তার চোখের জল জমাইয়া রাখিলে একটা বাটি ভরিয়। যাইত এত সে কাদে । মুছিয়া মুছিয়। চোখ শুকনে হইলে কুসুম চাহিয় দেখিল ভারি একট। বিপদের সূত্রপাত হইয়াছে। উচুনের পাশে এক আটি পাটকাঠি বেড়ায় ঠেস দিয়া রাখা হইয়াছিল, ইতিমধ্যে কখন নেবানে কাঠগুলির একট। আপন আপনি জলিয়| উঠিয় তাহাতে আগুন ধরাইয়। দিয়াছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে এ আগুন বেড়ায় লাগিবে এবং দেখিতে দেখিতে খড়ের চাল জলিয়। উঠিবে। বৃষ্টিতে চালের উপরিভাগ অবশু ভিজিয়া আছে, কিন্তু আগুনকে ঠেকাইবার ক্ষমতা তাহার নাই । রান্নাঘরের চাল একবার ভাল করিয়৷ জলিয়া উঠিতে পারিলে বাড়ির অন্য ঘরগুলিকেও দলে টানিবে । পাশের মুখুয্যে-বাড়ি রেহাই পাইবে না, সরকারদের বাড়িটাও মুখুয্যে-বাড়ির লাগাও । পাটকাঠিগুলির মধ্যে সদ্যজাগ্রত ওই ভীরু ও দ্বিধাগ্রস্ত শিশু অগ্নিদেবতাটি আজ পাড়ায় লঙ্কাকাণ্ড ন৷ করিয়া ছড়িবে না । ব্যাপারট। কুহুম চমৎকার কল্পনা করিতে পারে। একটা বিরাট বিশ্বগ্রাসী চিত—একরাত্রে একসঙ্গে একরাশি মানুষের সর্বনাশ ! রঙে আর উত্তাপে অন্ধকার আর শূন্ত ভরপুর হইয়া যাওয়া এবং তাহারই চারিদিকে কেবল হায় হায়, কেবল বুক-চাপড়ানো ! দুই চারি জন পুড়িয়া মরিবে না ? তীব্র তীক্ষু দৃষ্টি মেলিয়া কুসুম হিংস্র সাপের মত