পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brabア যায় নাই। কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভা সম্বন্ধে ভাগবাটোয়ারার ব্যবস্থা প্রকাশে বিলম্বের এই কারণ দেখান হইয়াছে, যে, সমগ্রভারতীয় ফেডারেশনে দেশী রাজ্যগুলির স্থান ও অধিকার ইত্যাদি বিষয়ের মীমাংস এখনও হয় নাই । তাহা মিথ্যা নহে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভা সম্বন্ধে ভাগবাটোয়ারার প্রকৃতি প্রকাশিত হইলে পাছে লোকে স্পষ্ট বুঝিতে পারে, যে, ভারতবর্ষকে বাস্তবিক স্বশাসন ক্ষমতা দেওয়া হইতেছে না, এবং সেই বোধ জন্মিবার ফলে প্রাদেশিক ভাগবাটোয়ারার সমালোচনা আরও অধিক লোকে আরও তীব্রভাবে করে, ইহাও কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা প্রকাশে বিলম্বের একটা কারণ হইতে পারে । এখন ত শুধু প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভার সভাপদের ভাগবাটোয়ার হইয়াছে । চাকরি আদি আরও কত জিনিষের ও বিষয়ের ভাগবাটোয়ার স্বনিযুক্ত ও আমাদের দুৰ্ব্বলতানিযুক্ত ভারতের মনুষ্যদেহধারী ভাগ্যবিধাতাদের মনে আছে, কে বলিতে পারে ? আঘাত এবং অপমানটা হিন্দুদের উপরই বেশী হইয়াছে। তাহারা তাহার যোগ্য। কারণ, প্রধানতঃ হিন্দুদের চেষ্টা, স্বাৰ্থত্যাগ, দুখভোগ ও বুদ্ধিমত্তার জন্তই ইংরেজদিগকে ভারতবর্ষে স্বশাসন প্রবর্তিত করিবার অভিনয়কল্পে অল্পস্বল্প অধিকার ভারতীয়দিগকে দিয়া আসিতে হইতেছে । অবশ্য তাহার সঙ্গে গুরুতর অনধিকার মিশাইয়। রাখিতে এবং ইংরেজ শাসনকৰ্ত্তাদের হাতে প্রভূত এবং চূড়ান্ত ক্ষমতা রাখিতেও ইংরেজ জাতি ভুলিয়৷ যায় নাই। হিন্দুর যে-গুণে অপমান ও আঘাতের যোগ্য, তাহা বলিলাম। কিন্তু যে-দোষে তাহাদিগকে আঘাত করা অপেক্ষাকৃত সহজ, তাহা বুঝা আরও বেশী দরকার ; কারণ তাহার প্রতিকার করা আবখ্যক । ইহা আমরা আগে আগে দেখাইয়াছি, যে, খ্ৰীষ্টিয়ান ও মুসলমানদের মধ্যেও কতকটা জাতিভেদ ও তাহার সর্বাপেক্ষা ঘৃণ্য ও অনিষ্টকর অঙ্গ অস্পৃশ্যতা আছে। কিন্তু সমগ্র ভারতবর্ষে হিন্দুদের মধ্যে যেরূপ ব্যাপক ও পুঙ্খানুপুখ জাতিভেদ আছে, খ্ৰীষ্টিয়ান ও মুসলমানদের মধ্যে সেরূপ নাই। খেতাও ভারতবর্ষের কোন কোন অঞ্চলের হিন্দুদের S99āు মধ্যে যেরূপ উগ্ৰমূৰ্ত্তিতে বিদ্যমান আছে, খ্ৰীষ্টিয়ান ও মুসলমানদের মধ্যে সেরূপ নাই। জাতিভেদ ও তাহার সৰ্ব্বাধম বিষ অস্পৃশ্যতা তাহারা হিন্দুদের নিকট হইতে পাইয়াছে। হিন্দুদের এই “রদ্ধ গত শনি"র স্বযোগে যদি শাসনকৰ্ত্তার জাতি আপনাদের প্রভুত্ব ও অন্যান্ত পার্থিব সুবিধা স্বধৃঢ় রাখিতে চায়, তাহাতে বিস্মিত হইয়া প্রতিবাদ করা অসঙ্গত না হইলেও, প্রকৃত প্রতিকার প্রতিবাদে নহে, আত্মসংস্কারে । সমগ্র হিন্দুসমাজ হইতে অবনত জাতিদিগকে আলাদা করায় হিন্দুদের শক্তি যেমন হ্রাস পাইবে, খ্ৰীষ্টিয়ান ও মুসলমানদের সমগ্র সমাজ হইতে তাহদের অবনত লোকদিগকে আলাদ করিয়া তাহাদেরও শক্তি হাসের বাবস্থা কেন করা হয় নাই, সজল আঁখি বা সরোষ চক্ষু সহকৃত এমন অভিযোগও বৃথা ! যাহার বাস্তবিক তেমন শক্তিমান নয়, তাহদিগকে শক্তিহীন করিবার চেষ্টা অনাবশ্বক ; যাহারা ভাল করিয়া জাগে নাই, অপমান ও আঘাত দ্বারা তাহাদের জাগৃতির সম্ভাবনা জন্মান স্ববুদ্ধির কাজ নহে ; সৰ্ব্বোপরি, যুগপৎ সকলকে ঘাটান রাজনৈতিক কৌশল সম্মতও নহে । হিন্দুরা যে গুণশালিত ও শক্তিমত্তা বশত: আঘাত ও অপমান পাইতেছেন, দুঃখ ভোগ করিতেছেন, ইহা তাহাদের গৌরবের বিষয়। সেই জন্য যেরূপ গুণবশতঃ ও শক্তিপ্রযুক্ত র্তাহারা আঘাত ও অপমানের লক্ষ্যস্থল হইয়াছেন, সেই প্রকার গুণশালিত ও শক্তিমত্তা তাহদিগকে বাড়াইয়া চলিতে হইবে। কিন্তু যে রন্ধ গত শনি তাহাদিগকে আঘাত ও অপমানের পাত্র করিয়াছে, সেই শনির বিনাশসাধন করিতে হইবে। সংক্রামকপীড়াগ্রস্ত মানুষ যতক্ষণ ঐ রোগে আক্রান্ত থাকে, ততক্ষণ তাহাকে স্পর্শ না-করা ভাল, এবং তাহার সাহায্য ও সেবাশুশ্ৰুষার জন্য তাহাকে স্পর্শ যাহাদিগকে করিতে হয়, নিজ নিজ অঙ্গ শোধন বস্ত্রাদি পরিবর্তন করা তাহাদের কর্তব্য। কিন্তু বংশগত, জন্মগত বা বৃত্তিগত কারণে পুরুষানুক্রমে কতকগুলি লোককে অস্পৃশ্ব বা অল্প প্রকারে অনাচরণীয় করা মহাপাপ। তাহাদের কাহারও কাহারও ঘরবাড়ির অপরিচ্ছন্নত,