পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন 宣旗 পরিচ্ছদ ও দেহের মলিনতা ও অশুচিত শিক্ষা ও আর্থিক উন্নতির দ্বারা দূর করা যায়। হিন্দুসমাজের এই গৰ্হিত প্ৰথা তাহাদিগকে দুৰ্ব্বল করিয়া রাখিয়াছে এবং জগতের জাতিসমূহের মধ্যে তাহাদিগকে হেয় করিয়াছে। ইহার সমূল উচ্ছেদসাধন করিতেই হইবে। অম্পূখ্যতা ও অনাচরণীয়তা বাদ দিলে হিন্দুসমাজ থাকিবে না, এমন আশঙ্কার কোনই কারণ নাই ; বরং ইহাই সত্য, যে, হিন্দুসমাজের বিস্তর লোক অস্পৃশ্যতা ও অনাচরণীয়তা প্রথাব লাঞ্ছনা ও উৎপীড়নে ধৰ্ম্মস্তির গ্রহণ করায় হিন্দুর সংখ্যা কমিয়াছে এবং হিন্দুসমাজ দুৰ্ব্বল হইয়াছে। হিন্দুসমাজের প্রাণরক্ষা, শক্তিরক্ষা, এবং বিশালতারক্ষার জন্য অস্পৃষ্ঠাতা ও অনাচরণীয়তা বিনষ্ট করিতে হইবে । বৃত্তিভেদে ও কৰ্ম্মভেদে মাতুষ আলাদা আলাদা দল বাধে, শ্রেণীবিভাগ জন্মে । কিন্তু তাহার জন্য পরস্পরকে ছোট মনে করিয়া ঘৃণ করা অসঙ্গত। বৃত্তি এবং কৰ্ম্ম বংশগতও নহে । একই পিতার পুত্র কেহ শিক্ষক, কেহ কেরানী, কেহ বিচারক, কেহ আইনজীবী, কেহ বস্থব্যবসায়ী, কেহ মদ্যবিক্রেত, কেহ অবৈতনিক সমাজসেবক হইতে পারে। সেই পিতা কোন-একটি জাতির লোক হইতে পারেন । অন্য জাতীয় অন্য কোন পিতার পুত্রেরা যদি শিক্ষক, আইনজীবী, বস্ত্র ব্যবসায়ী ইত্যাদি হন, তাহা হইলে সমব্যবসায়ীর বা ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসায়ীর কেন যে পরস্পরকে ছোট মনে করিবে, বুঝ। ভার। রক্তের মধ্যে আধ্যাত্মিক স্বগুণ দুগুণের, শুচিত অশুচিতার অস্তিত্ব কোন নৈকষ্যকুলীন-বংশীয় রাসায়নিক সূক্ষ্মতম বৈজ্ঞানিক ধন্ত্রের দ্বারা আবিষ্কার করিতে পারেন নাই, পরিবেন না । বংশে হীন কত লোক প্রতিভাশালী, চরিত্রবান, কীৰ্ত্তিমান হইয়াছে তাহার ইয়ত্ত নাই। আবার বড়ধরান কত লোক ম্বে নিৰ্ব্বোধ, দুবৃত্ত ও হেয় হইয়াছে, তাহারও ইয়ত্তা নাই। অতএব, জন্মগত বংশগত অবজ্ঞা গড়িয়া দিয়া হিন্দুদিগকে পরম্পরের প্রতি আকর্ষণ ও গনুরাগ বাড়াইতে হইবে । অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকদের এবং উtহাদের সম্বন্ধেও ইহা কৰ্ত্তধ্য । হিন্দুদের কথা এখানে আলোচনা করিতেছি বলিয়া কেবল র্তাহাদেরই উল্লেখ করিলাম । - r - r বিবিধ প্রসঙ্গ—বৰ্ত্তমান অবস্থায় প্রধান কৰ্ত্তব্য tూు বৰ্ত্তমান অবস্থায় প্রধান কর্তব্য ভারতবর্ষের সকল ধৰ্ম্মম্প্রদায়ের যে-সকল লোক এই সত্যটি বুঝেন, যে, ভারতবর্ষে একটি সংহত সংঘবদ্ধ মহাজাতি গঠন আবশ্যক, ভারতবর্ষের স্বাধীন হওয়া ও থাকা আবশ্যক, র্তাহাদিগকে আলাদা আলাদ! ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের দলের ও শ্রেণীর জন্য আলাদা আলাদা প্রতিনিধির সংখ্যা নির্দেশ ও তাহদের স্বতন্ত্র নির্বাচন-ব্যবস্থার উচ্ছেদসাধনের জন্য সম্মিলিত চেষ্টা করিতে হইবে । এই চেষ্টার সমস্তটা শীঘ্র সফল ন হইলেও যতটা হয় তাহাই কল্যাণকর। স্বতন্ত্রনিৰ্বাচন প্রথাটা নিৰ্ম্মল করা সৰ্ব্বাগ্রে আবশ্বক। যে-সব হিন্দুর হাতে আইন করিবার ও পরোক্ষ ভাবে দেশের কাজ চালাইবার ক্ষমতা থাকিবে, মুসলমান খ্ৰীষ্টিয়ান প্রভৃতির তাহাদের নিব্বাচনে কোন হাত থাকিবে না, কিংবা যে-সব মুসলমানের হাতে আইন করিবার ও পরোক্ষ ভাবে দেশ শাসন করিবার ভার থাকিবে হিন্দু খ্ৰীষ্টিয়ান প্রভৃতির তাহাদের নির্বাচনে কোনই হাত থাকিবে না, ইহা গণতান্ত্রিক বা প্রতিনিধিতান্ত্রিক স্বশাসন নহে। স্বতন্ত্র নির্বাচন-রূপ অনিষ্টকর প্রথার ফলে কোথাও মুসলমান খ্ৰীষ্টিয়ান প্রভৃতির প্রতি দায়িত্বহীন হিন্দুদের হাতে অনেক ক্ষমতা যাইবে, কোথাও ব৷ হিন্দু খ্ৰীষ্টিয়ান প্রভৃতির প্রতি দায়িত্বহীন মুসলমানদের হাতে অনেক ক্ষমতা যাইবে । ইহাতে সমগ্র মহাজাতির কল্যাণ ত হইবেই না, কাহারও প্রকৃত কল্যাণ হইবে না। কারণ, এরূপ ব্যবস্থায় সব ক্ষমতা—চুড়াস্ত ক্ষমতা—না হিন্দুর না মুসলমানের, কাহারও হাতে যাইবে না, সমগ্র মহাজাতির হাতে ত যাইবেই না ; ক্ষমতা ও প্রভূত্ব থাকিবে ইংরেজদের হাতে । তাহা স্বরাজ নহে । ভারতবর্ষের সম্বন্ধে সব ক্ষমতা ও চূড়াস্ত ক্ষমতা , ভারতীয়দের হাতে যাওয়া চাই। এই লক্ষ্যস্থলে পৌছিবার একটা প্রধান ধাপ সৰ্ব্বত্র স্বতন্ত্র নির্বাচনের জায়গায় সম্মিলিত নিৰ্ব্বাচন প্রতিষ্ঠিত করা। জাতিধৰ্ম্মনির্বিশেষে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় কাৰ্য্যনিৰ্বাহপ্রণালী যতদিন প্রতিষ্ঠিত না হইতেছে, ততদিন যে আমাদের বসিয়া থাকিলে চলিবে, তাহা মহে। এমন .