পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন গঠনক্ষম অন্ত অনেক বাঙালীর মত আমরা এবিষয়ে যাহা জানি তাঁহাই লিখিতেছি । 漫 লেখক বা সাহিত্যিক হিসাবে শ্ৰীযুক্ত প্রমথনাথ চৌধুরীকে আবেদকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলিয়া সকলেই স্বীকার করিবেন। তাহার বাংল। পুরাতন ও নূতন সাহিত্যের জ্ঞানেরও কিছু কিছু পরিচয় তাহার প্রবন্ধাদিতে পাওয়া গিয়াছে। অধ্যাপক মুহম্মদ শহীদুল্লার ভাষাতত্ত্বের প্রভূত জ্ঞান আছে । হয়ত আবেদকদের মধ্যে তিনি ই এবিষয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি—যদিও এবিধয়ের চচ্চা আমরা করি নাই বলিয়৷ নিশ্চয় করিয়া কিছু বলিবার অধিকার আমাদের নাই। ডক্টর শহীদুল্লাহ, বাংলা ভাষা ও সাহিতা সম্বন্ধে গবেষণা করিয়াছেন । তিনি সংস্কৃত, আরবী, পারসী প্রভৃতি ভাষা জানেন । অধ্যাপক মুশীলকুমার দে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের তত্ত্ব এবং ইতিহাস জানেন । তাহার যে-সব লেখা প্রকাশিত হইয়াছে, তাহাতে মনে হয় এ বিষয়ে তিনি খগেন্দ্রবাবু অপেক্ষ অধিক জ্ঞানবান এবং অধিক গবেষণা করিয়াছেন । তিনি সংস্কৃত জানেন এবং বাংলা ভাষা তত্ত্বের অতুশীলনের জন্য আবশ্বক একাধিক অন্য ভাষাও জানেন । লেখক হিসাবেও তিনি খগেন্দ্রবাবু অপেক্ষা নিম্নস্থানীয় নহেন । সমুদয় যোগ্য বা যোগ্যতর আবেদকদের উল্লেখ আমাদের অভিপ্রেত নহে বলিয়৷ এইখানেই থামিলাম । ভাল কীৰ্ত্তনিয়া এবং সুগায়ক বলিয় খগেন্দ্রবাবুর লোকরঞ্জনের ক্ষমতা আছে । যদি বাংলা ভায ও সাহিত্যের অধ্যাপনার জন্য একান্ত আবশ্যক যোগ্যতাতে তিনি অন্য যে-কোন আবেদকের সমকক্ষ হইতেন, তাহ হইলে সঙ্গীতবিষয়ে গুণশালিতার জোরে তিনি যোগ্যতম বিবেচিত হইতে পারিতেন । বাঙালীর শিক্ষায় বাংলা ভাষা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিবার জন্য বাঙালী ছেলেমেয়ের ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য ছাড়া অন্যান্য বিষয় বাংলায় শিখিবে এবং বাংলাতে সেই সব বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিবে, এইরূপ ব্যবস্থা অম্বুমোদিত বিবিধ প্রসঙ্গ-বাঙালীর শিক্ষায় বাংলা ভাষা ? سیاسیt হইয়াছে, এবং ১৯৩৭ সাল হইতে তদন্তসারে পরীক্ষ হইবে । ইহা সন্তোষের বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতম পরীক্ষা এবং তাঙ্কার জন্য শিক্ষা যখন বাংলা ভাষার মধ্য দিয়া হইবে, তখন এই শুভ পরিবষ্টমের পরিসমাপ্তি হইবে । মাতৃভাষাই যে শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বাহন, উহাকে উচ্চতম শিক্ষার ও বাহন করা যে অসাধা নহে এবং তাহা করিলে কি কি উপকাব হইবে, তদ্বিময়ে আমি “বঙ্গলক্ষ্মী"র আশ্বিন সংখ্যার জন্য একটি প্রবন্ধ লিখিয়ছি। বাঙালীর শিক্ষার জন্য বাংলা ভাষার ব্যবহারের নিমিত্ত আন্দোলন প্রায় এক শত বৎসর পূৰ্ব্বেষ্ট হইয়াছিল। সে বিষয়ে পুরাতন খবরের কাগজ হইতে তথ্য সঙ্কলন করিয়া প্রবাসীর অন্যতম সহকারী সম্পাদক শযুক্ত ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবাসীতে প্রবন্ধ লিপিবেন। আমরা অপেক্ষাকৃত আধুনিক সময়ে এই বিষয়ের চেষ্টার আরম্ভের কিছু উল্লেখ করিব । সন ১২৯৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “শিক্ষার হেরফের” শীর্ষক ধে প্রবন্ধ পড়েন, “উপাসনা”র গত শ্রাবণ সংখ্যায় শ্ৰযুক্ত হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ তাহার উল্লেখ করিয়া লিখিয়াছেন, রবীন্দ্রনাথ ঐ প্রবন্ধে বলেন— শিক্ষণর সহিত জীবনের সামঞ্জস্তসাধনই “সৰ্ব্বপ্রধান মনোযোগেব বিষয় এবং কি উপায়ে তাহ সম্ভব হয়, তাহাই বিবেচ্য। তিনি স্পষ্টই বলেন, এই সামঞ্জস্ত সাধন করিবার ক্ষমতায় ক্ষমতাশালী – BBBBS BBS BBBBS BBB S BBBB B BBBB BBBB বাহন করা হইতেছে না, তাহাই শিক্ষণর হের-ফুেরের কারণ এবং সেই হের-ফের যত দিন দূর না হইবে, ততদিন শিক্ষণ আনন্দ হইতে বিচ্ছিন্ন থাকিবে ও সেই জন্তুষ্ট সম্পূর্ণতা লাভ করিতে পারিবে না। রবীন্দ্রনাথের এই প্রবন্ধটি যে দেশের বড় লোকেরই মনোভাব প্রকাশ করিয়াছিল, তাহা বলাই বাহুল্য। সেই জন্য বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও আনন্দমোহন বসু এই প্রবন্ধে প্রকাশিত মতের সমর্থন করিয়া প্রবন্ধলেখককে পত্র লিখিয়ছিলেন । বঙ্কিমচন্দ্র লিখিয়াছিলেন,— “প্রতি ছত্রে আপনার সঙ্গে মতের ঐক্য আছে । এ বিষয় আমি অনেক বার অনেক সন্ত্রান্ত ব্যক্তির নিকট উত্থাপিত করিয়াছিলাম, এবং একদিন সেনেট হলে দাড়াইয়া কিছু বলিতে চেষ্টা করিয়াছিলাম।” গুরুদাস বাবু এই প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন— “আমার কথানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সভ্য বাঙ্গালী ভাষা শিক্ষার প্রতি উৎসাহ প্রদর্শনার্থে একটি প্রস্তাব উপস্থিত করেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ তাহ গৃহীভ হয় নাই।” গুরুদাস বাবু যে দুর্ভাগ্যেয় উল্লেখ করিয়াছেন, তাহ। কিরূপ দুঃখজনক তাহ। আনন্দমোহন বাবুর পত্র হইতে বুঝা যাইবে :