পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮২ মা সরস্বতীর সঙ্গে গেলাম্ আলেকম্‌। মুন্সেফ, ডেপুটী, জজ,—ত মাদ্রাঙ্গী গ্রাজুয়েট বাঙালীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হয়ে গিয়েছেন, কিন্তু সবাই বাধা ওই চাকরীর ঘানীতে আর সবার অন্তরের কথা হচ্ছে—“মা'আমায় ঘুরাবি কত—কলুর চোখ-ঢাকা বলদের মত।” 飄轉 আবার এই গ্রাজুয়েট উৎপন্ন করুবার শক্তি মাদ্রাজের চেয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরই বেশী। এই ব্যাপারে কলকাতা সবার সুগ্ৰণী—কিন্তু হেসে না, এ-সব ঘরের কথা বাইরে না যায়। অসহযোগ, সহযোগ স্বীকার করি না ; এবার ২০,০০০ ছেলে ম্যাটিকুলেশন পরীক্ষা দেবে আর শতকরা অন্তত: ৮০ জন পাশ হবে । কিন্তু একজন উপাধিকারী কি প্রকার কুপমণ্ডক তা চিন্তা করলে মন বিষাদিত হয়। বৰ্ত্তমান প্রথানুসারে একজন এম-এসসি কিম্বা এম-এর ভূগোলের কোন জ্ঞান না থাকলেও চলতে পারে। ইতিহাস পাঠও ইচ্ছাধীন। আব্রাহাম লিঙ্কলন, ফ্রশঙ্কলিন প্রভৃতির নাম শোনেন নি এমন গ্রাজুয়েটও জনেক আছেন। ভূগোল চাই না, ইতিহাস টু না, দেশের কথা চাই না, পৃথিবীর কথা চাই না,—শুধু পাশ করে খাও—মাটিক, আই-এ, বি-এ, ফাষ্ট্র ক্লাস, সরেস এম্-এ। উচ্চশিক্ষিত যুবক হয়ত ম্যাটুদিনীর নাম শুনেছেন—গ্যারীবাডিকেও হয়ত মস্ত একটি বীর বলে জানেন কিন্তু কাৰুরের কথা জিজ্ঞাসা করলেই মাথা চুলকাতে আরম্ভ করবেন। যদি প্রশ্ন করি আমেরিকায় অস্তর্বিবাদ ( Civil War ) কেন হ’ল—এ বিপ্লবে কে কে রথী ছিলেন–লিঙ্কল্‌ জ্যাক্সন্ কে, কোন পক্ষ জয়ী হ’ল, বিরোধের ফলাফলে দেশের লাভ লোক্সান কি হ’ল ? তাহলেই ফিলসঞ্চির ফাষ্ট ক্লাস এম্-এ একবারে অবাকৃ হয়ে ই ক'রে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকৃবেন -এ-সব আবার কি ? প্রফেসারের কোনো নোটে ত এ-সব লাল নীল সবুজ পেন্সিলে দাগ দিয়ে কষ্মিন্ কালে পাঠ করি নি। চতুর্থবার বিলাত গিয়ে গতবৎসর এই সময় আমি দেশে ফিরে আসি। সেখানে লগুনু, অক্সফোর্ড, কেজি, বারমিংহাম, লীডস এডিনবরা প্রভৃতি স্থানের বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। অনেকস্থলে এক একটা কলেজ একএকটা বিশ্ববিদ্যালয়। নানা বিদ্যানুশীলনের জন্য বিভিন্ন বিভাগ প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড রয়েছে আর প্রত্যেক বিভাগেই পাঁচ ছয় জন ছাত্র সেই বিশেষ বিষ্ঠা সম্বন্ধে মৌলিক গবেষণা করছেন। আর পর পর এমন বড় লোক ঐসকল বিদ্যামন্দির থেকে বাহির হয়ে আসছেন, যা ভাবলে আশ্চৰ্য্য হয়ে যেতে হয়। এদের অনেকে একটা বিশেষ বিষয়ের গবেষণার নেশায় ভরপুর হয়ে সারা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন। শ্রেষ্ঠ মনীষীগণ এৰুে শূন্তস্থান অপরে পূরণ করছেন। আর এই সকল বিষয়ের বৈচিত্র্যই বা কি ! একখানা “নেচার’ তুলে নিয়ে চোখ বুজে তার যে-কোন স্থান খুলে যুরোপে অনুশীলিত কত রকম বিদ্যার কত রকম রোজনামচা যে দেখতে পাওয়া যায় ; সেখানে কতশত অনুসন্ধান-সমিতি, বৈজ্ঞানিক, সাহিত্যিক, রাষ্ট্রনৈতিক, পুরাতত্ত্ব প্রভূতিতে মানুবের জ্ঞানভাণ্ডার নিয়ত পরিপুষ্ট কবৃছে। এই ইউরোপের সব দেশে স্বাধীন চিন্তার স্রোত নিয়ত মানবের জীবনকে কত উচ্চতর স্তরে নিয়ে যাচ্ছে, বে তার অাৰু শেষ নেই। কত শত বিভিন্ন ব্যাপার নিয়ে কত শত প্রচেষ্টা, কত অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠান, কত একনিষ্ঠ জ্ঞানসাধকের ঐকান্তিক চেষ্টা ঐ-সব দেশে বিদ্যার্থীগণের তথা জনসাধারণের চিত্তবৃত্তিকে সদা জাগ্রত করে রেখে দিয়েছে। ৩৫০০ বৎসর পূৰ্ব্বে মিশর, আপীরিয়া, বাবিলন প্রভৃতি দেশে লোকে কিরূপ জীবনযাপন করেছিল সেইসকল প্রত্নস্তুত্বর বিচারের ফলে যুরোপীয় স্বধীবৃন্দ জ্ঞানরাজ্যের এক একটা নূতন দিক উন্মুক্ত করে দিয়েছেন যার নাম হয়েছে—ইজিপূটলজি, আসিরিওলজি ইত্যাদি। czīts, offUIR, çofs ( Layard, Rawlinson, Petrie ) প্রভৃতি এই-সকল বিদ্যার ८शूड । তার পর প্রাচ্যের প্রান্তে এসে দেখা যাকৃ। জাপানে তোকিও, কোবে, কিয়োতো, প্রভৃতি বিখ্যাত নগরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পৃেষ্ঠবে ও জ্ঞানায়ুশীলনে সৰ্ব্বাংশে যুরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরূপ হ’য়ে দাড়িয়েছে। সেবার বিলাতগামী জাহাজে আমার সঙ্গে প্রায় দুই শত ভারতবাসী ছাত্র ইউরোপে চলেছিলেন। এদের মধ্যে দুই এক জন ছাড়া সবাই কেমন করে ফাকি দিয়ে একটি বিলাতি সন্তা ডিগ্রি এনে দেী ডিগ্রির উপর টেক্কা দিবেন সমস্ত সময় সেই চিন্তা ও পরামর্শ করছিলেন। আমাদের