পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা বিহারের এক প্রাচীন ঔপনিবেশিক বাঙ্গালী পরিবার Հ8:Տ বিহারের এক প্রাচীন ঔপনিবেশিক বাঙ্গালী পরিবার বরিশাল জেলায় খালিশকোটা গ্রামে এক বদ্ধিষ্ণু পরিবারে মুখোপাধ্যায়োপাধিক রমানাথ বিদ্যাবাগীশ মহাশয়ের জন্ম হয়। দিল্লীর সিংহাসনে তখন মোগল সম্ৰাট ঔরঙ্গজেব। দাক্ষিণাত্যে মহারাষ্ট্রপতি শিবাজীর দোর্দণ্ড প্রতাপ । 罗 রমানাথ বিদ্যাবাগীশের গৃহে দেলদুর্গোৎসব হইতে বার মাসে তের পাৰ্ব্বণ চলিতেছে, ঐশ্বৰ্য্য-সম্পদের অভাব নাই, গ্রামে অপ্রতিহত প্রভাব ; কিন্তু তাহার অন্তরে স্বথ নাই, পুত্র না হওয়ায় বিপত্নীক রমানাথ মনস্তাপে তাহার দিন যামিনী অতিবাহিত করিতেছিলেন। ভাবিয়াছিলেন একমাত্র কন্যার বিবাহ দিয়া স্বর্থী হইবেন, কিন্তু বিধাতা অন্যরূপ বিধান করিয়া রাখিয়াছিলেন। কন্যাটি অল্পদিনেই বিধবা হইয়া পিতার মৰ্ম্ম-বেদনা বৃদ্ধি করিলেন। রমীনাথ সমস্ত বিষয় ব্রহ্মোত্তর করিয়া দিয়া বিধবা কন্যাকে লইয়া কাশীবাসী হইলেন। রেল তখন কোথায় ? তাহারা নৌকা-যোগে রওনা হইলেন । কথিত আছে, কাশীর নিকটে গঙ্গা-বক্ষে এক রাত্রিতে রমনাথের উপর স্বপ্নাদেশ হইল—“অপর নৌকায় এক ‘মাতাজীর ঝুলিতে ‘শ্ৰীধর শালগ্রাম আছে, তাহ লইয়া গিয়া যেন কাশীধামে প্রতিষ্ঠা করা হয়।” বলা বাহুল্য স্বপ্নাদেশ তিনি পালন করিয়া ছিলেন। বিধবা কন্যা বলিলেন–পিতা যখন শালগ্রাম পাইয়াছেন, তখন বংশ নিশ্চয়ই থাকিবে কন্যার ইচ্ছাক্রমে তখন বৃদ্ধ রমানাথ ষাট বৎসরের অধিক বয়সে দ্বিতীয়বার বিবাহ করিলেন । এবং তাহার ফলে কাশীধামেই কৃষ্ণানন্দ সাৰ্ব্বভৌমের জন্ম হইল। কৃষ্ণানন্দ অতি অল্প বয়সেই প্রতুিভার পরিচয় দিয়া পণ্ডিত-সমাজে প্রতিষ্ঠাড়াজন হইয়াছিলেন । কাশীনরেশ তাহার গভীর জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাইয় তাহাকে স্বীয় সভাপণ্ডিতপদে বরণ করেন এবং তদবধি এই বংশের বিষয় সম্পত্তি পশ্চিমাঞ্চলে বিস্তৃত হইতে থাকে। অচিরেই उिनि कौब्र विषन्मख्नैौ श्रङ ठांशत्र भाज्ञखान ७ অগাধ পণ্ডিত্যের পরিচাৰ সাৰ্বভৌম উপাধি প্রাপ্ত হন । কাশীর মহারাজা চেৎসিংহ কাশী অঞ্চলে তাহাকে প্রভূত ভূসম্পত্তি দিয়াছিলেন। নিঃসন্তান কাশী-নরেশ পুত্র-কামনা করিয়া পুত্রেষ্টি যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিলে, কুষ্ণানন্দ সাৰ্ব্বভৌম ভট্টাচাৰ্য্যই সেই যজ্ঞকাৰ্য্য রচারুরূপে সম্পন্ন করেন। মহারাজের এক পুত্র হয় । কৃতজ্ঞতার নিদর্শন স্বরূপ কাশীনরেশ পূৰ্ব্বোক্ত ভূসম্পত্তি তাহাকে দান করিয়াছিলেন। বাঙ্গালা দেশে যখন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ( Permanent Settlement ) আরম্ভ হয় সেই সময় সার্বভৌম মহাশয় বেহার অঞ্চলে ইতিহাস-বিশ্রত রাজগৃহের সন্নিকটে ২৩•• বিঘা—বাঙ্গালা দেশের ৪০০০ বিঘা-মঙ্গলময় জমি ২২৯ • রাজকরে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এই জমিদারী তিনি উক্ত স্থায়ী ব্যবস্থাতেই পাইয়াছিলেন। পরে ইহা দুই লক্ষের অধিক মূল্যের সম্পত্তিতে দাড়ায়। এই জমিদারীর নাম “রৈতর” । ইহা আজিও বর্তমান । সার্বভৌম মহাশয়ের মৃত্যুর পর তাহার উত্তরাধিকারী শিবরাম পিতার বিষয় রক্ষা করিতে সমর্থ হন নাই । কারণ তিনি জ্ঞানচর্চা ও যোগ সাধনায় এতদূর মগ্ন থাকিতেন যে র্তাহার বিষয়-সম্পত্তির প্রতি আদেী লক্ষ্য থাকিত না । তিনি তন্ত্রের বিধানে শবসাধনাদি করিতেন এবং কথিত আছে যে বাকৃসিদ্ধ হইয়াছিলেন। বিষয়ে বীতরাগ শিবরামের ঔদাসীন্যের স্বযোগ পাইয়া পাশ্বস্থ জমিদার-মণ্ডলী তাহার কাশীর সমস্ত সম্পত্তি ক্রমে ক্রমে করায়ত্ত করিয়া লয়েন । শেষে বিহার অঞ্চলের রৈতর নামক সম্পত্তিও এইরূপ বিপন্ন হইয়া পড়িলে, র্তাহার পুত্র তারাশঙ্কর তাহা উদ্ধার করেন। তারাশঙ্কর হইতেই এই বংশের সমৃদ্ধি হয়। র্তাহার বয়স যখন পঞ্চদশ বৎসর মাত্র তখন র্তাহার পিতা শিবরাম গঙ্গালাভ করেন। কিশোর তারাশঙ্কর এই বয়সেই বিষয়-বুদ্ধিতে পরিপক্ক হইয়া উঠিয়াছিলেন এবং তখন হইতে পৈতৃক বিষয় রক্ষার জন্ত বন্ধপরিকর হইয়া একাকীই বিহার অঞ্চলে যাত্রা করেন । তথায় গিয়া রৈতর জমিদারী পৰ্য্যবেক্ষণ 總 করিয়া তাহ উদ্ধারের উপায় দেখিতে থাকেন। যে-সকল জমিদার তাহার পৈতৃক সম্পত্তি অধিকার করিয়া বসিয়া