পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যn j শেষে তমুরাটি কুমার সেনের হাতে দিয়ে বললেন,—“বংস, এই লও জামার যন্ত্র ।” তারপরে মাধবীর হাতখানি “এই লও আমার প্রাণ ।” তার পরে বললেন,—“আমার গানটি দুজনে মিলে শেষ করে দাও, আমি শুনি ।” মাধবী আর কুমার গান ধরঙ্গে—সে যেন আকাশ আর পূর্ণচাদের কণ্ঠ মিলিয়ে গাওয়া । ತಣ್ಣ হাতে তুলে দিয়ে বললেন,—

  • ලී এমন সময় স্বারে এল রাজদূত, গান থেমে গেল। আচাৰ্য্য ক্ষণপূতে কঁপিতে আসন থেকে উঠে জিজ্ঞাস করলেন,— "মহারাজের কি আদেশ ?”

দূত বললে,—“তোমার মেয়ের ভাগ্য প্রসন্ন, মহারাজ তাকে ডেকেচেন ।” আচাৰ্য্য জিজ্ঞাসা করলেন,—“কি ইচ্ছ। তার ?” দূত বলুলে—“আজ রাত পোয়ালে রাজকণ্ঠ কাম্বোজে পতিগৃহে যাত্রা করবেন, মাধবী উীর সঙ্গিনী হয়ে যাবে।” রাত পোয়াল, রাজকন্ত যাত্রা করলে। মহিলী মাধবীকে ডেকে বললে,—“আমার মেয়ে প্রবাসে গিয়ে যাতে প্রসন্ন থাকে ঘুে ভার তোমার উপরে।" মাধবীর চোথে জল পড়ল না, কিন্তু অনাবৃষ্টির আকাশ থেকে যেন রৌদ্র ঠিকৃরে পড়ল । রাজকন্যার ময়ূরপংখী আগে যায়, আর তার পিছে পিছে যায় মাধবীর পান্ধী। সে পান্ধী কিংখাবে ঢাকা, তার দুই পাশে পাহার । পথের ধীরে ধূলোর উপর ঝড়ে ভাঙা অশ্বথ ডালের মত পড়ে রইলেন আচাৰ্য্য, আর স্থির দাড়িয়ে রইল কুমার সেন । পার্থীরা গান গাইছিল পলাশের ডালে, আমের বেলের গন্ধে বাতাস বিহ্বল হয়ে উঠেছিল। পাছে রাজকন্যার মন প্রবাসে কোনোদিন ফাঙ্কন-সন্ধায় হঠাৎ নিমেনের জন্য উতলা হয় এই চিন্তায় রাজপুরীর লোকে নিঃশ্বাস ফেললে। ( ভারতী, বৈশাখ )। இர * পরীর পরিচয় শীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজপুত্রের বয়স কুড়ি পার হয়ে যায়, দেশ-বিদেশ থেকে বিবাহের সম্বন্ধ আসে। ঘটক বললে, “বাঁহীক রাজের মেয়ে রূপসী বটে, যেন শাদ গোলাপের পুষ্পবৃষ্টি।” রাজপুত্র মুখ ফিরিয়ে থাকে, জবাব করে না । দুতু এসে বুললে, “গান্ধার-রাজের মেয়ে অঙ্গে অঙ্গে লাবণ্য কেটে পড়চে কেঁ দ্রাক্ষালতায় আঙুরের গুচ্ছ আঁর ধরে না" রাজপুত্র শিকারের ছলে বনে চলে যায়। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, ফিরে আসে না। .. দুভ এসে বললে,*াম্বোজের রাজকন্যাকে দেখে এলেম ; ভোর বেলাকার দিগন্ত-রেখাটির মত তার বঁাক চোখের পল্লব, শিশিরে স্নিগ্ধ, আলোতে উজ্জ্বল।” मी রাজপুত্র ভস্তৃর্ধরির কাব্য পড়তে লাগল, পুথি থেকে চোখ তুলল J রাজা বললে, “এর কারণ ? ডাক দেখি মন্ত্ৰীপুত্রকে ৷” ৩৭ }—১৮ কষ্টিপাথর—পরীর পরিচয় ૨જે છે মন্ত্রীর পুত্র এল। রাজা বললে, “তুমি ত আমার ছেলের মিত, সত্য করে বল, বিবাহে তার মন নেই কেন ?" do মন্ত্রীর পুত্র বললে, “মহারাজ, যখন থেকে তোমার ছেলে পরীস্থানের কাহিনী শুনেচে সেই অবধি তার কামন। সে পরী বিয়ে করবে।” ३ রাজার হুকুম হল পরীস্থান কোথায় খবর চাই। বড় বড় পণ্ডিত ডাকা হল, যেখানে যত পুধি আছে তারা সব খুলে দেখলে। মাথ৷ নেড়ে বললে, “পুথির কোনো পাতায় পরীস্থানের কোন ইসার মেলে || ” তখন রাজসভায় সওদাগরদের ডাক পড়ল। তার ফলে, “সমুদ্র পার হয়ে কত দ্বীপই ঘুরলেম-এল দ্বীপে, মরীচ দ্বীপে, লবঙ্গলতার দেশে । আমরা গিয়েচি মলয় দ্বীপে চন্দন আনতে ; মৃগনভির সন্ধানে গিয়েচ কৈল সে দেবদারুবনে, কোথাও পরীস্থানের কোনো ঠিকান পাই নি।” রাজা বললে, “ডাক মন্ত্রীর পুত্রকে ” মন্ত্রীর পুত্র এল। রাজা তাকে জিজ্ঞাস করলে, পরীস্থানের কাহিনী রাজপুত্র কার কাছে শুনেচে ?” মন্ত্রীর পুত্র বললে, “সেই যে আছে নবীন পাগল, বঁশি হাতে বনে বনে ঘুরে বেড়ায়, শিকার করতে গিয়ে রাজপুত্র তার কাছে “পরীস্থানের গল্প শোনে ৷” রাজা বললে, “আচ্ছ। ডাক তাকে ৷” নবীন পাগল এক-মুঠে। বনের ফুল ভেট দিয়ে রজার সামনে দাঁড়াল। রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলে, “পরীস্থানের খবর তুমি কোথায় পেলে ?” সে বললে, “সেখানে আমি ত সদাই যাওয়া-আসা করি। রাজা জিজ্ঞাসা করলে, “কোথায সে জায়গা ?” পাগল বললে, “তোমার রাজ্যের সীমানায় চিত্রগিরি পাহাড়ের তলে, কাম্যক সরোবরেব ধারে ।" রাজা জিজ্ঞাসা করলে, “সেইখানে পরী দেপা যায় ?” পাগল বলে, “দেখা যায়, কিন্তু চেনা যায় না । তাঁর ছদ্মবেশে থাকে। কথনে কখনো যথন চলে যায় পরিচয় দিয়ে যায়, আর ধরবার পথ থাকে না।” রজ জিজ্ঞাস করলে, “তুমি তাদের চেন কি উপায়ে ?” পাগল বললে, “কথনে বা একটা স্তর শুনে, কখনো বা একট। জালে দেথে ।” রাঙ্গ বিৰক্ত হয়ে বললে, “এল আগাগোড়া সমস্তই পাগলামি, একে তাড়িয়ে দাও।” చి পাগলাব কথা রাজপুত্রের মনে গিয়ে বাঙ্গল । ফাঙ্কন মাসে তপন ডালে ডালে শালফুলে ঠেলাঠেলি, আর শিরীষ ফুলে বনের প্রান্ত শিউরে উঠেচে। রাজপুত্র চিত্রগিরিতে এক চলে গেল । সবাই জিজ্ঞাস করলে, “কোথায় যাচ্চ ?” সে কোনো জবাব করলে না । গুহার ভিতর দিয়ে ঝরন করে আসে, সেটি গিয়ে মিলেচে কাম্যক সরোবরে ; গ্রামের লোক তাকে বলে, “টদাস ঝোরা ।” সেই ঝরনার তলায় একটি পোড়ো মন্দিরে রাজপুত্র বাস নিলে। এক মাস কেটে গেল। গাছে গাছে যে কচি পাতা উঠেছিল তাদের রঙ ঘন হয়ে আসে, আর ঝরাফুলে বনপথ ছেয়ে যায় ।