পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] جمعیت মেমদের অন্থকরণে। আমাদের সমাজে পরস্ত্রীর মুখ দর্শন পাপ বলিয়া গণ্য। অথচ কোনও অঙ্গে দৃষ্টি নিক্ষেপ না করিলে কথোপকথন চলে না, অভিজ্ঞ জন্মে না । সে অঙ্গ, পা । কাজেই পা খোলা থাকিত। এই খোলা পায়ে অষ্ট অলঙ্কার শোভা পাইত । দেবী-প্রতিমা দেখিলেই প্রাচীন সাক্ষী পাওয়া যাইবে। মেমদের ন্যায় উৰ্দ্ধাঙ্গ উনূমোচন ও নিম্নাঙ্গ আবরণ আমাদের চোখে শালীনতা নয়। বোধ হয় আমাদের চোপই ভাল । এত কথা পাড়িবার হেতু আছে। দেশের হিতার্থে কেহ কেহ খদ্দর পরিতেছেন। কিন্তু সেটা নামে খন্দর, কাজে সেই ৫ হাত লম্বা ২ হাত বহরের ধুতি বা শাড়ী ! এমন আত্ম-প্রতারুণা আর দেখি না। এ যে প্রাচীন শাখা, সোনায় গড়া। নামে শাখা, কিন্তু সোনা পরাই অভিপ্রায়। খন্দরের পঞ্জাবী ও জামা দেখিয়াছি, আঁঠুর নীচে পর্যন্ত ঝুলিতেছে । যিনি খাদি কি, খাদির প্রয়োজন কি, বুঝিলেন না, তিনি চরকা চালাইতে পরিবেন না। দেড় হাত সাতপোয় বহরের মোটাকাপড় কি ছিল না ? জিন কাপড় ত ছিল । ফলে দেখিতেছি, কলে খন্দর জন্মিতেছে, যেন খদ্দর থাট-বহরের মোটা স্বতার কাপড় । এই কারণেই বলিয়াছি, চরকার প্রতিবাদীর আপত্তি আসার নহে । চিত্তের পরিবর্তন না হইলে, মোহ না কাটিলে ঢাকঢোল বাজান মিছা। মহাত্মা গন্ধী খাদি পরিয়া চিত্ত-শুদ্ধি করিতে বলিয়াছেন। চরকার খাদি ( homespun ) সে তপস্যার উপকরণ বটে । যে-সব কল চলিতেছে, সে-সব উঠিয়া যাউক, কাহারকাহারও এমন অভিলাষ জন্মিলেও, কলগুলা উঠিয়া যাইবে না। কল বন্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়, তাহাও মনে করি না। কলের দোষ, কল নিমৰ্ম, দেশের প্রতি মমতাহীন। সম্প্রতি কল টাকায় টাকা ফলাইতেছে, কারণ দেশের কতক লোক এমন নিবোধ যে স্বদেশী কাপড় চায়। দশের নিবুদ্ধিতায় একের পোয়া-বার। প্রাচীন কালের দগুনীতি থাকিলে অজুিলাভের শাসন হইত। এখন কলির কাল ; কলি অর্থে কলহ ; এরূপ কলহ একমাত্র শাসন। কলে কলে কলি, দেশী ও বিদেশী কলে কলি, নইলে অতিলোভের শাসন হইবে না। চরকা ও তাতের সঙ্গে দেশী কলের চরকা ও খদ্দর లిశిన প্রতিদ্বস্থিত, দেশী কলের সঙ্গে বিদেশী কলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা । বর্তমান কালে যখন ধম এক পাদ, তখন কলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রেতার পক্ষে মন্দ নয় । কলের নিমমতা যদি একগুণ, কল ও ক্রেতার মাঝে ব্যাপারীর যে পঙ্গপাল আছে, তাহাদের নির্মমতা শতগুণ। পঙ্গপালের স্বভাব এই—ধানগাছে একটু রস থাকিতে গাছ হইতে উঠে না । ক্রেতার পয়সার রস নিঃশেষ না করিয়া ব্যাপারী ছাড়ে না। কোথায় দয়া, কোথায় বা মা ! মানুষের প্রতি মাহুষের দয়া হয় ; কিন্তু, যেখানে ক্রেতার সহিত সাক্ষাং নাই, সেখানে মমতাও নাই। এমন মজার কথা, কাহারও দোষ দিবার জো নাই। তথাপি তুমি আমি যখন ৪২ টাকার কাপড় ৫২ টাকা দিয়া কিনি, তখন বুঝি কল ও ব্যাপারীর novo (co-partnership.) al fico os bro দণ্ড দিতে হইত না। চলিত কথায়, দুইই গলা-কাটা, তোমার আমার পয়সা লুঠিয়া ধনী হইতেছে। গ্রামিক কলায় এই সভ্য জুত্মা-খেলা নাই। সেখানে কারু ও ক্রেতার সাক্ষাৎ সম্বন্ধ ; দয়া না থাকিলে সমাজের অলক্ষিত কিন্তু নিদারুণ অপযশের ভয় আছে। তাতী কাপড়ের বাণি বাড়াইতে পারে, কিন্তু গলা কাটিতে পারে না । কারণ সে যখন রামধনের কাছে আসিবে,--আর একদিন না একদিন আসিতেই হইবে,— রামধনও ছুরী শাণাইয়া রাখিবে । রামধন এক নয়, ক্রেতামাত্রেই রামধনের সহায় । এই কারণে মনে হয়, চরকা ও তাত চলিলে খাদি সস্ত হইবে। কলের খাদির চেয়ে সস্ত হইতেও পারে। কিন্তু তখন অন্ত এক বিপদ ঘটতে পারে। চরকার স্বতা ও র্তীতের কাপড়, প্রত্যেকের অল্প বলিয়া, উল্লিখিত পঙ্গপাল স্বযোগ পায় না। কিন্তু যখন অনেক জন্মিতে থাকিবে, তখন সে পালও আসিয়া জুটিবে, অগ্রিম দাদন দিয়া বহু র পরিশ্রম হাত করিবে, তারপর পাটচাষে চাষীর যে অবস্থা, সুতাকাটনীর ও তাতীর সেই অবস্থা হইবে । লাভ অন্যে থাইতে থাকিবে, কাটনীর ও তাতীর যে কষ্ট সে কষ্ট ঘুচিবে না। তার সাক্ষী, এই স্বদেশীর দিনেও তাতীর দিন-চলা ভার হইয়া