পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৩৩ ভাঙিয়া পড়িয়ছে, কত লোক ধূলাবালি চাপা পড়িয়াছে, কতলোক বন্যায় ভাসিয়া গিয়াছে। উত্তরকুটে যখন মজুর পাওয়া যায় নাই তখন রাজার আদেশে প্রত্যেক ঘর হইতে আঠারো বৎসরের উপর বয়সের যুবককে জোর করিয়া ধরিয়া আনা হইয়াছিল, তাহাদের মধ্যে অনেকেই ফিরে নাই। সেখানকার কত মায়ের অভিশাপের উপর যন্ত্রশক্তি জয়ী হইয়াছে। মায়ের ক্ৰন্দন কিন্তু থামে নাই। জয়োৎসবের মধ্যেও শুনা যাইতেছে, জনাই গ্রামের অম্বা কাদিয়া বেড়াইতেছে—“স্বমন ! আমার স্বমন ! বাবা আমার স্বমন এখনো ফিরল না ... তাকে যে কোথায় নিয়ে গেল। আমি ভৈরব-মন্দিরে পূজে দিতে গিয়েছিলুম—ফিরে এসে দেখি তাকে নিয়ে গেচে । বাবা স্বমন ! সূৰ্য্য ত অস্ত যায়—আমার স্বমনত এখনো ফিরল না!" উঙ্কোখুস্কো-চুল হাতে বাক ডালের লাঠি পাগল বটুক সকলকে ডাকিয়া বলিতেছে—“সাবধান, বাবা, সাবধান। যেয়ে না ও পথে, সময় থাকৃতে ফিরে যাও । 锡 渗 够 锡 ■ ● বলি দেবে, নরবলি । আমার দুই জোয়ান নাতিকে জোর করে নিয়ে গেল, আর তারা ফিরল না।. সাবধান, বাবা সাবধান, যেওনা ও পথে।” একদিকে নাগরিকদিগের উৎসবকোলাহল, অপর দিকে মায়ের ক্ৰন্দন, পাগলের অভিশাপ, তার মাঝে থাকিয়া থাকিয়া ধ্বনিত হইতেছে— তিমির-হৃদ-বিদারণ জলদগ্নি-নিদারুণ, মরু-স্মশান-সঞ্চর, শঙ্কর শঙ্কর । যুবরাজ ফিরিয়া আসিয়া এ সমস্তই দেখিলেন। পাগল বটুক আসিয়া তাহাকে খবর দিল—“জান না, যুবরাজ ? ওরা ষে আজ যন্ত্ৰবেদীর উপৰ তৃষ্ণ-রাক্ষসীর প্রতিষ্ঠা করবে। মানুষ বলি চায়।” অস্ব আসিয়া তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল—“স্বমন ! বাবা স্বমন! যে পথ দিয়ে তাকে নিয়ে গেল সে পথ দিয়ে তোমরা কি কেউ যাওনি ?” যুবরাজ বুঝিলেন যে রাজপ্রাসাদের শাসন-নীতির সহিতৃ তাহার জীবনের কোন সত্য মিলন ঘটা সম্ভবপর AMMMAMAMAAA AAAA AAAA AAAA AAAAMAMAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAAMAMAMAMAMAMMAMMA MSMSMSMSAAAAASAAAA [ २२* उां★, sञ १७ মুক্তধারার উৎসের নিকট র্তাহার জন্ম, ཨཱ༢་་ নহে । খুলিয়া দিবার আহ্বানটিকে র্তাহার অন্তরতম চৈতন্তের মধ্যে ধারণ করিয়া তিনি জন্মলাভ করিয়াছেন, তাই অভিজিং স্পষ্ট বুঝিলেন যে রাজগৃহে তাহার স্থান নাই। ভাই-বোনের সম্বন্ধের ন্যায় অভিজিতের সহিত মুক্ত-ধারার যোগ ভিতরে বাহিরে ; এই ভিতরকার যোগের পরিচয় তিনি বাহিরের ঘটনার মধ্যেও দেখিতে পাইলেন, সেইজন্যই মুক্ত-ধারার বাধ-বাধার বেদন অভিজিংকে এমন কঠিনভাবে আঘাত করিল। অভিজিতের মনে হইল—“মানুষের ভিতরের রহস্য বিধাতা বাহিরের কোথাও না কোথাও লিখে রেখেছেন ; আমার অন্তরের কথা আছে ঐ মুক্তধারার মধ্যে। তারই পায়ে ওরা যখন লোহার বেড়ি পরিয়ে দিলে তখন হঠাৎ যেন চমক ভেঙে বুঝতে পাৰ্বলুম উত্তরকুটের সিংহাসনই আমার জীবনম্রোতের বাধ। পথে বেরিয়েচি তারই পথ খুলে দেবার জন্তে ।” অভিজিৎ রাজকুমার সঞ্জয়কে বলিলেন—“আমার , জীবনের স্রোত রাজবাড়ির পাথর ডিঙিয়ে চলে যাবে । এই কথাটা কানে নিয়েই পৃথিবীতে এসেচি।” অভিজিৎ বুঝিলেন প্রাণ দিয়াও মুক্তধারার বাধ তাহাকে ভাঙিতেই হইবে। এমন সময় রাজাঞ্জায় ধুত হইয়া যুবরাজ কারাগারে বন্দী হইলেন। তখন স্বর্ধা ডুবিতেছে, যন্ত্রের চূড়াটা স্বৰ্য্যাস্তমেঘের বুক ফুড়িয়া উদ্যতমুষ্টি দানবের মত দাড়াইয়া রহিল, আর রহিল ভৈরব-ত্রিশূল। উত্তরকুটের উৎসব চলিতে লাগিল। উত্তরকুটের অধিবাসীর জয়-গৰ্ব্বে উন্মত্ত, সপ্তাহ পরেই শিবতরাইয়ের চাষের ক্ষেত শুকাইয়া আসিবে। উত্তরকুটের পুরদেবতা এতদিন পরে প্রসর হইয়াছেন, তৃষ্ণার শূলে বিদ্ধ করিয়া শিবতরাইকে এইবার তিনি উত্তরকুটের পদতলে ফেলিয়া দিবেন । উত্তরকুটের মালকদলও জানে যে উত্তরকুটের অধিবাসীরাই সকলের উপর জয়ী, তাহারাও জয়ধ্বনি করিতে লাগিল। শিবতরাইয়ের প্রজারা রাজার নিকট তাহাদের দুঃখের কথা জানাইতে আসিয়াছিল, উত্তরকুটের অধিবাসীর তাহাদিগকেও জোৰু করিয়া টুটি . টিপিয়া বলাইতে লাগিল—“জয় যন্ত্ররাজ বিভূতির জয় ?”