পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] ് ബ് জ্যোৎস্নালোকে যেরূপ শিহরিতেছিল তেমনি তাহার দেহমন শিহরিতেছে । , রজত নিজের ঘরে ঢোকেই নাই । তাহার ঘরের জানলার ঠিক সামনে হাস্নাহানার খুব বড় ঝাড়। এই ঝড়ের পাশ দিয়া দেয়াল বাহিয়া লতার কুঞ্জ রমলার ঘরের জান্‌লা পৰ্য্যন্ত উঠিয়াছে ; সেই হান্নাহানার ঝাড়ের সম্মুখে আসিয়া সে দিগন্তের দিকে চাহিয়া দাড়াইয়া রহিল। কোন অনন্তযৌবন! উৰ্ব্বশীর সন্ধানে তাহার শিল্পীপ্রাণ সাতরংএর আলোছায়ার রেখার পথ দিয়া তুলির টানে চলিয়াছে ; বিশ্বকমলের সেই সৌন্দৰ্য্যলক্ষ্মী কি মূৰ্ত্তিমতী হইয় তাহাকে একবার দেখা দিবে না ? সেই মানসম্বন্দরী যদি এখন তাহার সম্মুখে আসিয়া দাড়ায় -এই রংএর ছায়৷ এই আলোর মায়া নয়, রক্তমাংসে অনিন্দ্যমুন্দরী নারী হইয়া সে কি আসিবে না ? জ্যোৎস্নাসমূদ্র মথিত করিয়া জলস্থলআকাশের সব সৌন্দৰ্য্য ছানিয়। পৃথিবীর সব মাধুরী চুরি করিয়া মধুর মূৰ্ত্তি হইয়া দাড়াইবে না ? নদীর গতি দিয়া ফুলের গন্ধ দিয়া বসন্তের আনন্দ দিয়া তাহার তমুর হুষ্টি, তারাভর নীলাকাশ তাহারই নীলবাস, তাহারই স্বপ্ন-অঞ্চল বনে পৰ্ব্বতে জ্যোৎস্নায় লুটাইতেছে, তাহারই অঙ্গের হিল্লোল নানা ভঙ্গে লতায় বাকিয়া পাতায় হেলিয়া পড়িয়াছে, তাহারই দেহের সৌরভ পুষ্পে পুষ্পে আকুল হইয়া উঠিয়াছে, তাহারই চরণের চাঞ্চল্যে পথে পথে বাতাসের নৃত্য, তাহার টলমল ললিত যৌবন নদীসরোবরে ছলছল করিতেছে, পদ্মে পদ্মে তাহার আঁখির দৃষ্টি, এই স্তন্ধ রাত্রে নির্জনগগনে কুন্দগুত্র অনন্তযৌবন একাকিনী দাড়াইয়া আছে—সে কি রক্তধারার ছন্দে পুষ্পকোমলতযুতে মূৰ্ত্তিমতী হইবে না ? হাস্নাহানার ঝাড় সিন্ধুতরঙ্গের মত বাতাসে উদ্ধাম হইয়া পড়িল, একটি কোকিল ডাকিয়া উড়িয়া গেল, রজত ফিরিয়া দেখিল, ঝাড়ের পাশে তাহার সম্মুখে রমলা দাড়াইয়া । - দ্রাক্ষীরসভরা পেয়ালার মত তাহার চোখদুইটির দিকে চাহিল, নবশ্বষ্টির স্বপ্নরহস্যময় মুখের দিকে চাহিল, রূপকথার কুজকঙ্কার মত তক্ষুবল্লরীর দিকে চাহিল। এমনি উন্মুক্ত আকাশের তলে জ্যোংক্সাণ্ডস্র খামল প্রকৃতির به تیم مل8 রমলা NDVరి همایوس خیریه حمایت ه حتیجه حامی ماهه মধ্যে পৃথিবীর আদিম মানুষ নারীকে যেরূপে চাহিয়াছিল তেমনি চাহিয়া রজত একটু অগ্রসর হইল। -- কিন্তু সে অসভ্যযুগের পর কত শতাব্দী কাটিয়া গিয়াছে, কত সমাজ-গঠন, কত বিবাহপদ্ধতি, কত ধর্শ্বব্যবস্থা করিয়া প্রকৃতির বিদ্রোহী সন্তান মানুষ আপনগড় নিয়মশৃঙ্খলে আপনাকে বাধিতে বাধিতে কোন স্বল্পদেশের দিকে চলিয়াছে। যে সিংহ-সপের দোসর ছিল, সে আজ শিল্পী। স্থির হইয়া রজত দাড়াইল, চিররহস্তময় তরুণীর কালে চোখ তাহার দিকে চাহিয়া আছে । - হাস্নাহানার গন্ধে বাতাস স্বধার মত সৌরভময় হইয়৷ উঠিল, ইউক্যালিপূটসের মস্কণ পাতায় আলো ঝকৃমকৃ করিতে লাগিল, লাল পথ গলিত স্বর্ণধারার মত জলিয়া উঠিল, রং-বেরংএর ক্রোটনের সারিতে বর্ণের হোলিথেলা স্বরু হইল, শালের বনে দুরন্ত বাতাসের মাতামাতিপড়িয়া গেল, উদার প্রান্তর ভরিয়া জ্যোংস্ক থমথম করিতে লাগিল, গন্ধে বর্ণে গীতে আলোক-সম্পাতে দুই তরুণতরুণীর, চারিদিকে মায়ালোক সৃষ্টি হইল, দুইজনেই স্বপ্নমুগ্ধ দাড়াইয়া । সহসা গোলাপকুঞ্জ হইতে একটি পার্থী ডাকিয়া উড়িয়া গেল, একটি তারের ঝঙ্কার শোনা গেল । বহুদিন পরে কাজীসাহেব তাহার ধূলাভরা এস্রাজ লইয়া বাজাইতে বসিয়াছেন। সেই সঙ্গে সঙ্গে একটা অস্ফুট আৰ্ত্তনাদের ধ্বনি উপরের ঘরে উঠিল,—“ভষ্টলগ্ন’ পাঠ শেব করিয়া মাধবী জানলার নিকট আসিয়া দাড়াইয়াছিল, একবার সে নিমেঘের জন্য হাস্নাহানার ঝাড়ের দিকে চাহিল, তারপর বাণবিদ্ধ হরিণীর মত ব্যথায় বিছানায় লুটাইয়া পড়িল । স্বপ্ন টুটিয়া গেল, সঞ্চারিণী লতার মত রমলা চলিয়া গেল। এক মুহূৰ্ত্ত, কিন্তু সে নিমেষ অনন্ত ক্ষণ । মাধবীর অফুট আৰ্ত্তনাদের সঙ্গে কাজীসাহেবের এস্রাজ বাজিতে লাগিল, রজতের রক্তধারার ছন্দে গন্ধেউদাস বাতাস বহিতে লাগিল, রমলার এই অজানা হৰ্ষশঙ্ক-ঝঙ্কত অস্তরবীণার মত তরঙ্গায়িত রক্তবর্ণ প্রান্তরে জোৎস্নার ধারা অশ্রত সুদীত বাজাইতে