পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

•©ጫ8 [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রথম হইতেই উচ্চস্থান প্রদান করিতে হইবে। স্কুলপাঠ্য “ফর্মাসে" সাহিত্যের হাত হইতে যত শীঘ্র মুক্তিলাভ হয়, ততই মঙ্গল। এই মাতৃভাষা ও সাহিত্য, শিক্ষার মধ্য ও অস্ত্য স্তরে, সৰ্ব্বপ্রধান শিক্ষণীয় বিষয় থাকিবে, এবং শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তরেও ইহার ভিতর দিয়াই উচ্চতর ও উচ্চতম জ্ঞানসঞ্চয়ের পন্থা স্বপ্রশস্ত করিয়া দিতে হইবে। প্রথম প্রথম কোন কোন স্তরে পুস্তক ও শিক্ষকের অভাব অনুভূত হইতে পারে। কিন্তু এই অভাব তীব্র ও সত্য না হইলে অভাব পূরণ কোনকালেই পৰ্য্যাপ্ত হইবে না। প্রশস্ত শিক্ষা এবং স্ত্রীশিক্ষার নানা অন্তরায় । মাতৃভাষা ও সাহিত্য মানসিক উৎকর্ষ লাভের উৎকৃষ্ট উপায় হইলেও, এরূপ উন্নতির জন্য জ্ঞানমূলক শিক্ষার বিষয়গুলি • বহুবিস্তৃত। বিষয়গুলির নির্বাচনে স্ত্রীশিক্ষা ও পুংশিক্ষার সাধারণত বিশেষ পার্থক্য দেখা যায় না। মাতৃভাষা, অঙ্ক, ভূগোল, ইতিহাস, দর্শন, বিজ্ঞান, প্রাচীন ভাষা, আধুনিক ভাষা, প্রভৃতি বিষয় উভয় প্রকার শিক্ষার অন্তর্গত। কিন্তু বাংলাদেশের বালিকাদিগের শিক্ষার জন্য বিষয়-নির্ঘণ্ট একটু ধীর ভাবে আলোচনা করিয়া প্রস্তুত করিতে হইবে । এখানে মনে রাখিতে হইবে যে মানসিক উন্নতি, স্বাস্থ্যরক্ষা, সন্তান প্রতিপালন, রোগ শুশ্ৰুষ এবং গৃহস্থালীর নানা কৰ্ম্মে দক্ষতালাভই স্ত্রীশিক্ষার মূল উদ্দেশু। ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে, পর্দা বাঙালি মহিলাদিগের জীবনের সঙ্গী, খুব অল্প বয়সেই উহাদের বিবাহ হয়, এবং বিবাহ হইলেই শিক্ষায় নানা ব্যাঘাত জন্মে। সাধারণতঃ বিবাহের বয়স দশ হইতে বারো বৎসর। কলিকাতার মত স্থানে এবং পল্লী-অঞ্চলের কোন কোন শিক্ষিত পরিবারে এই বয়স নানা কারণে বৰ্দ্ধিত হইলেও, ইহা সমাজের সর্বত্রই পূৰ্ব্বোক্ত রূপ। এই অন্তরায়গুলি স্বীকার করিয়া লইয়া, স্ত্রীশিক্ষা সমস্যার সমাধান করিতে হইবে । স্ত্রীশিক্ষার বিভিন্ন স্তর। স্ত্রীশিক্ষার উপরি-উক্ত অস্তুরায়গুলি এবং আনুষঙ্গিক অপরাপর সমস্যা আলোচনা করিয়া, শিক্ষার বিভিন্ন স্তরের পাঠ্য-তালিকার সংস্কার করিতে হইলে, আলোচনা জটিল হইবার কথা । সেই কারণে স্ত্রীশিক্ষার বিস্ত্র ও আলু যঙ্গিক অপরাপর সমস্যা মনে রাখিয়া, বিভিন্ন স্তরের বিষয়নির্ঘণ্ট প্রস্তুত করিয়া, বিষয় নির্বাচন সংক্ষেপে আলোচনা করাই সুবিধাজনক। সঙ্গে সঙ্গে আবশ্যক-মত অস্তান্ত সমস্যাও আলোচিত হইতে পারে। কিন্তু এরূপ চেষ্টার পূৰ্ব্বে স্ত্রীশিক্ষার বিভিন্ন স্তরগুলি সম্বন্ধে একটি নির্দিষ্ট ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। এই স্তরগুলি বালিকাদিগের শক্তিসামর্থ্য এবং মহিলাদিগের সামাজিক জীবনের অনুকূল হওয়া আবশ্যক। স্ত্রীশিক্ষার বিভিন্ন স্তর পাঁচভাগে ভাগ করা যাইতে পারে। (ক) শৈশব-শিক্ষা । গৃহ অথবা বিদ্যালয়ের শিক্ষা। চার রংসরের জন্য । বয়স চার হইতে আট বৎসর পর্য্যন্ত । (খ ) আদ্যশিক্ষা। বিদ্যালয়ের শিক্ষা। চার বৎসরের জন্য। বয়স আট হইতে বারো বৎসর পর্য্যন্ত । (গ) মধ্যশিক্ষা । - বিদ্যালয় অথবা অন্তঃপুরের শিক্ষা। চার বৎসরের জন্য। বয়স বারো হইতে বোল বৎসর পর্য্যন্ত । (ঘ ) অস্ত্যশিক্ষা। বিদ্যালয় অথবা অন্তঃপুরের শিক্ষা । দুই বা তিন বৎসরের জন্য। বয়স ষোল হইতে আঠারো অথবা উনিশ বৎসর পর্য্যন্ত । ( ঙ ) উচ্চতম শিক্ষা । বিদ্যালয় অথবা অন্তঃপুরের শিক্ষা। এক বা দুই বৎসরের জন্য। বয়স আঠারো অথবা উনিশ হইতে কুড়ি অথবা একুশ বৎসর পর্য্যন্ত । আমাদিগের বালিকাদিগের শারীরিক ও মানসিক উন্নতি সমবয়স্ক বালকদিগের অপেক্ষ দ্রুত বলিয়াই বোধ হয়। ইহার স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক নানা কারণ থাকিতে পারে ; কিন্তু প্রচলিত ধারণাই এইরূপ। এবিষয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষা ও পর্য্যবেক্ষণ আবশ্যক । প্রচলিত ধারণা অনুসারে স্ত্রীশিক্ষা পরিচালিত হইলে বালিকাদিগের শিক্ষা বালকদিগের শিক্ষা মপেক্ষ কিছু ক্রত হওয়া উচিত। * নারীদিগের বর্তমান সামাজিক