পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6:88 পুজারত শ্ৰীমতী স্বনয়নী দেবীর অঙ্কিত করে রক্ষা করচে। এইসব তরুণী, ধৌবনের গোপনবাৰ্ত্ত যাদের কাছে কেউ প্রকাশ করে নি, অথচ যার আপনিই তা বুঝে নিয়েচে, তাদেরই ভাবাকুল রহস্যময় সত্তাকে এই সাড়িগুলি যেন বড় আদরের দোলায় দোলাচ্চে । এই মেয়েদের চোখে চাঞ্চল্য নেই, তারা আত্মপ্রতিষ্ঠিত ; তারা সেই অন্তঃলোকের দূতী যে লোক লাল এবং সবুজ সাড়ির বিলুষ্ঠিত অবগুণ্ঠনে আবৃত। তাদের ঐ দীর্ঘ এবং ष्ट्रिब অথচ পাপীর মত উদ্যত চোখ-দুটির ভিতর দিয়েই তাদের মনের চিন্তা এবং হৃদয়ের আবেগ প্রকাশ পেয়ে এই ছবিটিকে জীবনপূর্ণ করে তুলেচে। এমনি করে’ ছবিগুলির মধ্যে দুই ধারার ছন্দ দেখা দিয়েচে । একটি হচ্চে, শস্যক্ষেতের ভিতরকার বায়ুমৃচ্ছনার মত শাস্ত এবং ব্যাপক, এমন একটি গাম্ভীর্ঘ্যের ৰিস্তার যেটি সমগ্র ছবিকে ঐক্য এবং ধ্রুবত্ব দান করেচে। আরেকটি হচ্চে ঠিক এর বিপরীত, সেটি চঞ্চল, তীক্ষ, লঘু ; স্বল্প বিশুদ্ধ গতিমাত্র, প্রশস্ত বর্ণপুঞ্জের উপর দিয়ে সে প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড অৰ্দ্ধনারীশ্বর * প্রীমতী কুনয়নী দেবীর অঙ্কি ঙ্গ দ্রুত ধেয়ে চলে। এমনি করে চোখ, ঠোট, এবং হাত দুটি মিলে একখানি ভাবব্যঞ্জনার ভঙ্গিতে পরিণত হয়ে পার্থীর ওড়ার মত ত্বরিভ বেগে রচনাটির স্বসংযত প্রবাহের উপর দিয়ে চলে যায় । এমনি করে খণ্ডকালের চঞ্চলত এবং অন্তরাত্মার চিরন্তন স্থিতি উভয়ে একটি পরিপূর্ণ সামঞ্জস্যের ভঙ্গিমায় দৃশ্যমান হয়ে উঠেচে। স্থনয়নী দেবীর আর্টের মূলতত্ত্বই হচ্চে জীবনের ভিতরকার এই দ্বৈত, যা একইকালে অনিত্য এবং ধ্রুব । এই ত সেই ভারতীয় প্রকৃতির প্রকাশ, যার গুণে ইনি অজন্তার অখণ্ড প্রবাহিত কলারীতিকে এমন অনায়াসে গ্রহণ করতে পেরেচেন। মোগল চিত্রকলা ভারতীয় আটকে আয়তনে প্রাণশক্তিতে এবং জীবনের অভিজ্ঞতায় যে খৰ্ব্ব করে ফেলেছিল, এই ছবিতে সেই ক্রটি বিস্তৃত এবং মার্জনাপ্রাপ্ত হয়েচে। রচয়িত্রীর অজ্ঞাতসারে অথচ নিশ্চিত নৈপুণ্যে এই ছবিতে বিশুদ্ধ ভারতীয় রেখার আকুঞ্চন-ভঙ্গী ( curvature ) আপনার শান্ত সকরুণ স্বরটিকে প্রকাশ করেচে। যে কলারীতি দুই হাজার বছরের পূৰ্ব্বেকার জিনিষ, তারই সঙ্গে এত সহজে স্বর মিলিয়ে বোধ হয় আজকাল