পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tyషి حیھ* AMAeM eeAAAS অর্থে আসক্তি নাই, বেশভূষার পারিপাট্য নাই, আহার বিহার আমোদ আহলাদের প্রতি আদে লক্ষ্য নাই, নিলোভ, নিরহস্কার, জিতেন্দ্রিয়, পুতচরিত্র, সত্যেন্দ্রনাথের তুলনা মিল ভার। বালকস্থলভ সরলতা তাহার ভূষণ ; অতি বৃদ্ধ প্রাঞ্জ হইতে বিদ্যালয়ের স্বল্পবয়স্ক ছাত্র পর্য্যন্ত সকলেই তাহাকে সমবয়স্ক বন্ধু জ্ঞান করিত। পুস্তকপাঠ ও কবিতা রচনা সত্যেক্সের জীবনের কেন্দ্র ছিল । রচনার জন্য চেষ্টা বা কষ্টকল্পনা আদে ছিল না। বাগেৰী স্বয়ং আবিভূত হইয়া যাহা লিখাইতেন মন্ত্রমুগ্ধের স্বায়ু যেন তাহাই লিখিত। অর্থাগম হয় এমন কোন গ্রন্থ-বিদ্যালয়পাঠ্য পুস্তক বা শিশুরঞ্জন কবিতাপুস্তক— লিখিবার জতু কতবার পরামর্শ দিয়াছি, কোন ফল

  • হয় নাই। বৈষয়িক ব্যাপার যাহা কিছু তাহাতেই তাহার বিষম বিরক্তি ছিল। সংসারের কোলাহল ও সাংসারি

কত হইতে সৰ্ব্বদাই সে দূরে থাকিতে চাহিত। সত্যেন্দ্রনাথ স্বল্পভাষী এবং অপরের অনুগ্রহ প্রার্থনার প্রতি খড়গহস্ত ছিল। অধিক লোকের সহিত মিশিতেও সে চাহিত না। বাল্যবন্ধুর মধ্যে বোলপুর বিদ্যালয়ের ভূতপূৰ্ব্ব শিক্ষক শ্ৰীযুক্ত ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সহিত আজীবন সৌহার্দা দেখিতে পাই। স্বদেশপ্রেম স্বদেশপ্রেমে কবি উদ্বুদ্ধ ছিল—“সন্ধিক্ষণে” তাহার উন্মেষ, পরবর্তী রচনায় পূর্ণ বিকাশ। মেকির প্রতি, নকলের প্রতি, দোকানদারি বেনিয়গিরির প্রতি, তাহার বিজাতীয় ঘৃণা ছিল। মহাত্মা গান্ধীর প্রতি সে বিশিষ্টরূপে আকৃষ্ট হয়। শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরে এত শ্রদ্ধা আর কাহারও উপর তাহার ছিল না। খন্দর প্রচলনের পর হইতে আত্মীয়-স্বজনকে সে জানাইয়াছিল যে, খদ্ধর ভিন্ন অন্য কোন বস্ত্র কেহ যেন তাহাকে উপহার না দেন। নিজেও সে সকলকেই খদ্দর দিত । সমাজ-সংস্কার আজীবন প্রকৃতপক্ষে সংসারের বা সমাজের বাহিরে থাকিলেও সত্যেন্দ্র সামাজিক কুপ্রথা নিবারণের যত্ব কুরিতে ক্রট করে নাই। ব্রাহ্মণের আধিপত্য ও অত্যাচার, প্রবাসী—শ্রাবণ, ురిసిన [ ২২শ ভাগ, ১মু খণ্ড অস্পৃশ্য জাতির প্রতি স্বণ প্রভৃতির বিরুদ্ধে লেখনী চালনা করিতে সৰ্ব্বদাই সে বন্ধপরিকর ছিল। সে কায়স্থ জাতির মধ্যে চারি সম্প্রদায়ের মিলনের সহায়তা করিয়াছিল। দানশীলতা e সত্যেন্দ্রনাথের দান অতি সংগোপনে, লোকচক্ষুর অন্তরালে হইত। বহু দুঃস্থ ছাত্রকে বিদ্যালয়ের মাহিনী ও পাঠ্য পুস্তক প্রতি মাসে যোগাইত, পাছে কেহ জানিতে পারে এজন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করিত। দরিদ্র, আতুর দেখিলে তাহার প্রাণ কাদিয়া উঠিত, যাহা নিকটে থাকিত তাহাই দিয়া ফেলিত। কয় বৎসর পূর্বের কথা, তখন সত্যেন্ত্র দুইশত টাকা মূল্যের একখানি নুতন শাল ব্যবহার করিতেছিল ; সপ্তাহকাল তাহা আর দেখিতে পাওয়া যাইতেছে না দেখিয়া সত্যেন্দ্রের জননী তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন—সেখানা কি হইল। অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করায় সত্যেন্ত্র বলিল—“সেদিন এক বুড়ী কলেজ স্কোয়ারের মোড়ে শীতে খুব কঁাপিতেছে দেখিলাম। জিজ্ঞাসা করায় বলিল, কাম্বেল হাসপাতাল হইতে তাড়াইয়া দিয়াছে। শীভর্তিকে তাহ দিয়াছি।” - মাতৃভক্তি মাতৃভক্তি সত্যেন্ত্রনাথের অসাধারণ ছিল। সাংসারিক কোন কিছুরই প্রতি আসক্তি ছিল না, মাতৃভক্তি কিন্তু হৃদয়ে ওতঃপ্রোত। কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে কবি শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় বিলাত যাত্রার সময় সত্যেন্দ্রনাথকে সঙ্গে লইয়া যাইতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন। জননীর পরেই র্যাহার প্রতি সম্যক শ্রদ্ধা তাহার সঙ্গলাভ এবং তাহার সহিত পৃথিবী ভ্রমণের আশায় সত্যেন্দ্রনাথ আনন্দোৎফুল্ল হইয় উঠে। বিধবা জননী অন্ধের যঃিস্বরূপ পুত্রকে দূরদেশে পাঠাইতে আতঙ্কিত হইলেন। পাছে মার প্রাণে ব্যথা বাজে এই আশঙ্কায় । সত্যেন্ত্রনাথ বিলাত যাত্রার বাসনা পরিত্যাগ করিল। হায় ! ,সেই জননীকে বৃদ্ধবয়সে এক ফেলিয়া আজ সে কোন স্থদুরের যাত্রী ! - ব্ৰহ্মচৰ্য্য | বিবাহিত হইলেও সত্যেন্দ্রনাথ আজীবন ব্রহ্মচৰ্য্য