পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©b~8 ঘুমিয়ে পড়তাম, সত্যেন্ত্র আমার বিছানায় চুপ করে বসে থাকৃতেন ন’টা পৰ্য্যন্ত। আমি লজ্জিত হয়ে একদিন জিজ্ঞাসা করলাম—“আমি ঘুমিয়ে পড়লেও আপনি একলাটি চুপ করে বসে থাকেন কেন ? তার উত্তরে সত্যেন্ত্র বললেন—‘রোজ সাড়ে নটার সময় আমি বাড়ী ফিরি— এই আমার নিয়ম , তার আগে বাড়ী ফিরলে মা ভাববেন যে আমার হয়ত কিছু অস্থখ করেছে, তাই রোজ ঠিক সময়ে বাড়ী ফিরি। এই নিয়মটি তিনি মৃত্যুর অমুখে শয্যাগত হবার আগে পর্য্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে গেছেন ; যদি সঙ্গী না পেয়েছেন তবু একল চুপ করে হেদোয় বসে থেকে নট বাজিয়ে তবে বাড়ী श्रृिङम । এই-রকর্মে সত্যেন্দ্রের সঙ্গে আমার ধে ঘনিষ্ঠত ঘটে তা বৃদ্ধি হয় দুজনেরই টোটো করার স্বভাব থেকে ; আমরা দুজনে দুপুর বেম্বা বেড়িয়ে পড়তাম বেড়াতে--চিড়িয়াখান, যাদুঘর, বোটানিকেল গার্ডেন, পবেশনাথের মন্দির, বায়ুস্কোপ, ফেরি-ষ্টীমারে উত্তরে শিবুতলা ও দক্ষিণে রাজগল্প আমাদের ভ্রমণ-পধ্যায়ের অন্তর্গত ছিল। বারো মাসের তেরো পাৰ্ব্বণ উপলক্ষ্যে কলকাতার কোন পাড়ায় কবে কোথায় মেলা হয় সত্যেদের সব জানা ছিল ও দেখারও সৰ্থ ছিল। আমি হতাম তার সহচর । e তার পর আমি এলাহাবাদে চলে যাই । সেখান থেকে আমি সত্যেন্দ্রকে এক চিঠিতে তুমি বলে সম্বোধন করি। তার উত্তরে সত্যেন্দ্র যে চিঠি লেখেন তার আরম্ভ—“আনন্দেরই সাগর থেকে এসেছে আজ বান!— তুমি আমাকে তুমি বলেছ।" সাক্ষাতের. যে সঙ্কোচ যাধা হয়ে ছিল, চিঠিতে সেটা দুজনেই কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করতে লাগলাম । আবার কলকাতায় ফিরে এলাম প্রবাসী'র সেবার ভার পেয়ে। সাক্ষাতে আবার আপনি সম্বোধন চলতে লাগল। £t

  • এই সময় পূজনীয় রবীন্দ্রনাথের বয়স পঞ্চাশ পূৰ্ত্তি হব-হব হয়ে আসছে। সত্যেন্দ্র প্রস্তাব করলেন, কবীন্দ্রসম্বৰ্দ্ধনা করতে হবে। এই প্রস্তাব সমর্থন করলেন মণিলাল,ও যতীন্দ্রমোহন প্রভৃতি। আমরা চারজনে

প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২৯ AMAMA AMASAMAMMAeMSMSMAAA AAAA AAASS [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড ASAeSMA AeeASASAeMAMMAAAS AAASASASSMSSSMSe MMAAAASASASS মেতে উঠলাম এর আয়োজনে । এই সময় আমরা পয়স্পরে ঘনিষ্ঠ অন্তরঙ্গ হয়ে উঠবার স্বযোগ পেয়েছিলাম। আপনি বলে সম্বোধন করলেই সম্বৰ্দ্ধন-তহবিলে এক আনা করে জরিমানা দিতে হবে, সত্যেন্দ্র ও যতীন্দ্রের এই প্রস্তাবে আমরা সকলেই কিছু কিছু জরিমান দিয়ে আপনি বলার দায় থেকে নিস্কৃতি পেলাম । সত্যেন্দ্র রবীন্দ্র-সম্বৰ্দ্ধন ঘটিয়ে তুলে আমাদের দেশের —বিশেষ করে সাহিত্যপরিষদের- মুখরক্ষা করেছিলেন, ত না হলে য়ুরোপ নোবেল-প্রাইজ দিয়ে ভারতের যে অপমান করুত তাতে আর লোকালয়ে মুখ দেখাবার জো থাকুত না । সত্যেন্দ্র যে রবীন্দ্রনাথকে কত বড় মনে করতেন তার পরিচয় আমি পাই তার সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের পরেই তার প্রথম বই বেণু ও বীণা’র উৎসর্গ পড়ে। ধিনি জগতের সাহিত্যকে অলঙ্কত করিয়াছেন, ধিনি স্বদেশের সাহিত্যকে অমর করিয়াছেন, “যিনি বর্তমান যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক, সেই অলোকসামান্য শক্তিসম্পন্ন কবির উদ্দেশে এই সামান্য কবিতাগুলি সসম্বমে অপিত হইল।” আমি জিজ্ঞাস করলাম—“এ আপনি কাকে উৎসর্গ করেছেন ?" সত্যেন্দ্র বললেন—“আপনিই বলুন না।” আমি বললাম—“হয় রবীন্দ্রনাথকে, নয় শেক্সপীয়ারকে ।” তখন সত্যেন্দ্র বললেন—“ঘরে থাকৃতে পরকে দিতে যাব কেন ?" এই কথা শুনে আমার মন উল্লাসে নৃত্য করে’ উঠেছিল ; যুরোপের জহুরীদের কষ্টিপাথরে যাচাই হবার আগে রবীন্দ্রনাথকে বড় কবি বলে স্বীকার না করাটাই ছিল ফ্যাশুণন । যারা রবীন্দ্রনাথকে জগতের সাহিত্যের ইতিহাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম লেখক বলে স্বীকার করবার দুঃসাহস রাখে সেইরকম মৃদুলৰ্ড লোকের মধ্যে সত্যেন্দ্র একজন, এই পরিচয় জেনে আমি সত্যেন্দ্রের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাম্বিত হয়ে উঠি। সত্যেন্দ্র যদি রবীন্দ্রনাথকে অতই শ্রদ্ধা করেন, তবে কবিগুরুর নাম প্রকাশ করবার সাহস হয়নি কেন তার কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সত্যেঙ্গ বলেছিলেন—“আমার সঙ্গে ত তার পরিচয় নেই ; অপরিচয়ে