পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] নৈসর্গিক ব্যাপারকেও সত্যেন্দ্র ছন্দে রূপ দিতে পারতেন— ইলশে-গুড়ি ইলশে-গুড়ি ! ইলিশ-মাছের ডিম । ইলশে-গুড়ি ইলশে-গুড়ি দিনের বেলার হিম । কেয়াফুলে ঘুণ লেগেছে— পড়তে পরাগ মিলিয়ে গেছে, মেঘের সীমায় রোদ জেগেছে, আলভা-পাটি শিম । ইলশে-গুড়ি হিমের কুঁড়ি রোদুরে রিমঝিম । ংস্কৃত ছন্দ বাংলায় প্রবর্তনে সত্যেন্দ্র বিশেষ কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন । সংস্কৃত ছন্দের প্রাণ হ্রস্বদীর্ঘ উচ্চারণে ; বাংলায় আমরা সংস্কৃত হ্রস্ব স্বরকে সৰ্ব্বত্র হ্রস্বই উচ্চারণ করি না, এবং দীর্ঘকেও দীর্ঘ করে’ উচ্চারণ করি না । সত্যেন্দ্র এই তথ্যটি ধরতে পেরে বাংলার স্বাভাবিক হ্রস্ব দীর্ঘ ও হসন্ত অকারান্ত উচ্চারণ অন্তসারেই সংস্কৃত ছনে কবিতা রচনা করেছিলেন, কোথাঃ রaিম উচ্চারণের সাহায্য নেন নি। সংস্কৃতের ছনা-শাস্ত্রে পঞ্চচামর ছন্দ একটি কঠিন ছন্দ ; সত্যেন্দ্র তাকে বাংলা রূপ দিয়েছিলেন— মহৎ ভয়ের মূরং সাগর বরণ তোমার তমঃগুণমল ; মহেশ্বরের প্রলয়-পিনীক শোনা ও আমায় শোনা ও কেবল । বাজা ও পিনাক, বজাও মাদল, আকাশ পাতাল কঁপিাও হেলায়, মেঘের ধ্বজায় সাজাও দু্যলোক, সাজাও ভূলোক ঢেউয়ের মেলায়। সংস্কৃত মালিনী ছন্দের উদাহরণ— উড়ে চলে গেছে বুলবুল, শূন্যময় স্বর্ণ-পিঙ্গর ; • ফুরায়ে এসেছে ফাল্গুন, 馨 যৌবনের জীর্ণ নির্ভর। সত্যেন্দ্র-পরিচয় (సిరి রাগিণী সে আজি মন্থর, উৎসবের কুঞ্জ নির্জন ; • ভেঙে দিবে বুঝি অন্তর মন্ত্রীরের ক্লিষ্ট নিক্কণ । মেঘদতের মন্দাক্রান্ত ছন্দের উদাহরণ— পিঙ্গল বিহবল ব্যথিত নভতল, কই গো কই মেঘ উদয় হও, সন্ধ্যার তন্দ্রার মূরতি ধরি আজ মন্দ্ৰ-মন্থর বচন কও ; স্বৰ্য্যের রক্তিম নয়নে তুমি মেঘ, দাও হে কজল, পাড়াও ঘুম, বৃষ্টির চুম্বন বিথারি চলে যাও—অঙ্গে হর্ষের পড়ুক ধুম। রুচির ছন্দের নমুনা— তখন কেবল ভরিছে গগন নূতন মেঘে, কদম-কেীরক জুলিছে বাদল-বাতাস লেগে ; বনান্তরের আদিতেছে বাস মধুর মৃদু, ছড়ায় বাতাস বরিষা-নারীর মুখের সাধু – তখন কাহার আঁচলে গোপন যুথীর মালা মধুর মধুর ছড়াইত বাস- কে সেই বালা ? বিদেশী বা সংস্কৃত ছন্দের বাংলা রূপ একটি দুটি শ্লোকে নয়—৪৫ পৃষ্ঠ জোড় গোটা গোট কবিতায় তিনি প্রকাশ করতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন । সত্যেন্ত্রের সম্পূর্ণ পরিচয় তল্প-পরিসরে দেওয়া কঠিন। আর একটি কথা বলে আমার তর্পণ সমাপ্ত করব। সত্যেন্দ্র নিজেকে লোবের কাছে নাস্তিক বা অজ্ঞেয়বাদী রূপে প্রকাশ করতেন। কিন্তু তিনি যে কত বড় বিশ্বাসী ভক্ত ছিলেন তার পরিচয় তার প্রথম পুস্তক "বেণু ও বীণা’ থেকে পরবর্তী পুস্তকের মধ্যে সৰ্ব্বত্র পাওয়া যায়। কয়েক বৎসর থেকে সত্যেন্তের দৃষ্টি অস্থতার অন্ধকারে আবৃত হয়ে আসছিল , সেই উপন্যু তিনি যে কবিতা লেপেন ত{ যখন আমি প্রথম পড়ি তখন আমি চোখের জল রাখতে পারিনি— X অকুল আকাশে অগাধ আলোক হাসে, আমারি নয়নে o