পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や>8 যাহা হউক, কথাটা যেই বলুক, ইহা সত্য, যে, বাংলা দেশে বাঙালী ছাড়া আর সবাই পেট ভরিয়া থাইতে পায় এবং অনেকে খুব ধনীও হয়। এজন্ত জুবাঙালীদের প্রতি ঈর্ষ্যান্বিত হওয়া উচিত নয়, এবং তাহাদিগকে তাড়াইয়া দিবার ব্যর্থ কল্পনা, ইচ্ছা ও চেষ্টা করা উচিত নয়। অবাঙালীরা কি গুণে কি উপায়ে বাংলায় আসিয়া রোজগার করে, তাহাদিগকে দেখিয়া তাহ শিক্ষা করাই আমাদের কৰ্ত্তব্য । আমরা অলস, আলস্য ত্যাগ করিতে হইবে ; আমরা বাবু, কষ্টসহিষ্ণু হইতে হইবে । আমরা দৈহিক শ্রমের কাজকে ছোট লোকের কাজ মনে করি, এবং আলস্যকে বাবুর লক্ষণ মনে করি। এই ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করিয়া সব রকমের সৎ কাজকে প্রয়োজন মত সব মানুষের করণীয় মনে করিতে হইবে, ও তদনুরূপ আচরণ করিতে হয় বে। যাহাতে মিথ্যা, বঞ্চনা, চুরি, জাল বা অন্যবিধ দুৰ্গতি নাই, তাহাই সৎ কাজ । আমাদের আর-একটা দোষ এই আছে, যে, আমরা মনে করি, বাংলা দেশে যে কাজের যে রীতি, উপায় বা যন্ত্ৰ চলিত আছে, তাহাই চালাইয়া যাইতে হইৰে বাস্তবিক কিন্তু অন্যান্য প্রদেশ ও দেশের কুমার, কামার, তাতি, ছুতার, রাজমিস্ত্রী, প্রভৃতি কারিকরদিগের রীতি উপায় ও যন্ত্র হইতে অনেক শিথিবীর ও অনুকরণ করিবার আছে। তাহা আমাদের করা উচিত। তাহার প্রচলনে শিক্ষিত শ্রেণীর লোকদেরও চেষ্টা করা কৰ্ত্তব্য । কারণ, দেশ-বিদেশের খবর র্তাহারা যত সহজে লইতে পারেন, অন্যেরা তত সহজে পারে না । খন্দরের প্রচলন , চরখায় স্থত কাটিয়া সেই স্বত হইতে হাঁতের র্তাতে কাপড় বুনিয়া ব্যবহার করিলে আমাদের দেশের আর্থিক ও নৈতিক প্রভূত উন্নতি হইতে পারে, তাহ অনেক মনীষী বারবার দেখাইয়াছেন। বৈজ্ঞানিক আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মত বৈজ্ঞানিক প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২৯ [ २२* ७ॉगिं, »म पंख অধ্যাপক যোগেশচন্দ্র রায়ও শুধু ভাবের দ্বার চালিত হইরার লোক নহেন। তিনি বহুপূৰ্ব্বে ঘরবুনা মোট কাপড় পরিবার ঔচিত্য ও উপকারিতা সম্বন্ধে যুক্তিপূর্ণ সারবান প্রবন্ধ লিথিয়াছিলেন। . গত আষাঢ় মাসের প্রবাসীতেও তিনি দেখাইয়াছেন, বে, খদ্দর চালান অসাধা বা দুঃসাধ্য নহে, এবং উহার প্রচলন দ্বারা আমাদের দারিদ্র্য অনেক পরিমাণে দূরীভূত হইতে পারে। যাহারা ঐ প্রবন্ধ পড়েন নাই, তাহারা একবার পড়িয়া দেখুন। কলের স্বতা ও কাপড়ের সহিত প্রতিযোগিতার কথা তুলিবার কোন প্রয়োজন নাই । যে সময়টির কোন সদ্ব্যবহার দেশের অধিকাংশ লোক করেন না, যাহা আগস্যে যাপন করেন, তাহারই সদ্ব্যবহার দ্বারা দারিদ্র্য-দুঃখ কিয়ুৎপরিমাণে নিবারণের উপায় চিন্তা করিলে দেখা যায়, কাপাস গাছ লাগাইয়া তুল উৎপাদন, চরখায় সেই ভুল হইতে স্বত কাটা এবং হাতের তাতে ঐ স্থত হইতে কাপড় বুন স্কলের চেয়ে সহজ ও স্বসাধ্য উপায়। তিন রকম কাজই কেহ এক না করিতে পারেন । ধিনি যাহা পারেন, করুন। খন্দর প্রচলনের জন্য চাই আলস্য-ত্যাগ, এবং মোটা কাপড়, অন্ততঃ কিছুদিনের জন্য, পরিতে রাজী হওয়া। কিছুদিনের জন্য বলিতেছি এইজন্য, যে, চরখায় বেশ সরু স্বতাও নিপুণ হাত হইতে বাহির হয়। বহু শত বৎসর পূৰ্ব্বে যে মসলিন হুইত, তাহা ত কলের স্থতায় নয়—তখন কল ছিল না, চরখায় কাটা স্বতাতেই তাহা বোন হইত। এখনও স্থানে স্থানে চরখায় মিহি স্থত হইতেছে। অতএব, কিছুকাল পরে হাত পাকিলেই সরু স্বতাও হইবে, মিহি কাপড়ও হইবে । যদি না হয়, তাহাতেই বা কি আসে যায় ? আগে ত আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক মোটা কাপড়ই পরিত, এখনও অনেকে পরে। তা ছাড়া, এখন অনেক এই-দেশী লোকের পোষাক ইংরেজদের মত, এবং এইসব পোষাকের কাপড় খন্দরের চেয়ে কম পুরু বা কম ভারী নহে। . এ দেশে গ্রীষ্মকালে পরিহিত বিলাতী ধরণের পোষাকের পাজাম, কোট,