পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পারতাম তা নুয়, তবু এটা বুঝতে পারতাম ৰে চাণক্যঙ্গোকে গভীর তত্ব যতই থাকৃ না কেন রস কণামাত্র ছিল না। তবে সাহিত্যের অল্প রসের চেয়ে বীররসের প্রতিই আমার ক্টোক ছিল বেশী । জগৎসিংহ, হেমচন্দ্র, মোহনলালের আদর্শে জীবনটাকে গড়ে তুলৰ এই ছিল তখন ইচ্ছা-অবশ্য যুদ্ধশেষে বিজয়লক্ষ্মীর সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের ঝাড় এবং ইংরেজীবায়দার সহকারে আরও কোন লক্ষ্মীর সাথে মিলনের লোভও আমার না ছিল তা নয়। সে সময়টা ছিল শীতকাল। তোমরা কখনও কলকাতা ছেড়ে বড় একটা বেরও নি বলে বাংলাদেশের কোনও ঋতুর সঙ্গে তোমাদের পরিচয় নেই ; সেইজন্যে বসন্তকাল সম্বন্ধে তোমরা কবিয়ানা করে থাক। সত্যি যদি বাংলদেশ দেখতে চাও তবে শীতকালে পাড়াগায়ে ষেও । সে সময় বাংলার পল্লী যে কি আশ্চৰ্য্য ঐ ধারণ করে ত৷ না দেখলে বোঝান যায় না । আকাশ থাকে নীল— গ্রীষ্মের আকাশ যেমন কঠিন পাথরের মত নীল তেমন নয়—কোমল নীল, তারি মাঝে মাঝে স্বচ্ছ শাদা মেদের স্বস্ব রেখা টানা । কলকাতায় আকাশকে দূরে রেখেছে কলের চিম্নী আর গির্জার চুড়ার খোচা দিয়ে ; কিন্তু গ্রামে আকাশের সঙ্গে বাশ-বাড়ের নারিকেল-গাছের মাখামাখি চলেছে অবিশ্রাম । আকাশ নেমে এসে ক্ষেতের উপর দুরগ্রামের গাছ-গুলোর উপর একেবারে লুটিয়ে পড়েছে। শীতের ভোরের বেলা কুয়াস কাটিয়ে যে রোষ্ট্রকু ওঠে চাপার মত তার রং । এমনি একটা শীতের সকালবেলায় পড়ায় ভঙ্গ দিয়ে আমাদের অন্দরের বাগানের কুলগাছের উপর উঠেছিলাম । তখন আমাদের ক্লাসের পরীক্ষা হয়ে গিছল। ফল তখনও বের হয় নি । কিন্তু দাদার শাসনে পড়া কামাই করবার জো ছিল না। নতুন পড়া না থাক পুরোনো পড়া তো ছিল, আর পুরোনে পড়ার এক মজা দেখেছি যে তার আর শেষ নেই—যতবার খুলী ফিরে ফিরে পড়া যায়। সেই পুরোনে পড়ায় ভঙ্গ দিয়ে কুলগাছে উঠেছিলাম, তাই বিশেষ সাবধান হবার প্রয়োজন ছিল পাছে দাঙ্ক টের পায় যে পড়.র ঘুরে আমি নেই। কিন্তু ছোড়দিদি ছিল। সে আমার জাইতুত brい}ーセ শুকতারা అసి) AMAMMAMAeeAeeMAAAS ৰোন—আমার চেয়ে বছরখানেকের বড় । আমরা যে মাষ্টারের কাছে পড়তাম সেও তার কাছে পড়ত—কিন্তু সে পড়া নিতান্ত তার খেয়াল-মত 'চলত। রবিবার সকালেও পাড়ে নটার আগে আমাদের ছুটি ছিল না, কিন্তু ছোড়দির পক্ষে সোমবার রবিবারে কখনও কোন প্রভেদ দেখি নি । সে যখন খুলী আস্ত, যখন খুনী বেণী জ্বলিয়ে ভিতরে চলে যেত। তার পর মাস ছয়েক হ’ল বোধোদয় সাহিত্যপাঠ এবং সেকেণ্ড, বুক প্রভৃতি গ্রন্থ শেষ করে’ তার শিক্ষা সমাপ্ত হল। তার পর সে অম্বরে ঢুক্ল, আর বড় একটা বাইরে আস্ত না । তখন থেকে আমাদের উপর সে ভারি মুরুবিয়ান করত। তার জালায় পড়া কামাই" করে বাগানে ঘোর কি বাড়ীর ভিতর থাকা একেবারে অসম্ভব ছিল । স্কুল থেকে ফিরে বাড়ীর ভিতর ঢোকা মাত্র ছোড়দি প্রশ্ন কর্ত—“কি ? আজ ক্লাসে কত ছিলে ? লাই, নাকি ?" আমরা কোনদিন এমন কোন কাজ করতে পারিনি যা ছোড়দির চোখ এড়িয়েছে বা যে সম্বন্ধে সে কিছুমাত্র বাকৃসংযম দেখিয়েছে। সেদিনও কুলগাছে পাচমিনিট থাকতে না থাকৃতেই তার গলা শুনতে পেলাম—“সকালবেলা কুলগাছে কে রে?” প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে উত্তর না পেয়েও শান্ত সন্তুষ্ট থাকৃবৈ, ছোড়দির প্রকৃতি সে রকম ছিল না । কোন প্রশ্ন মনে উদয় হওয়৷ মাত্র তার মীমাংসা না করতে পারলে তার মানসিক যন্ত্রণা হত। অতএব গাছতলায় তার আগমন আশঙ্কা করে গাছের উপর আত্মগোপন করবার চেষ্টা করলাম–কিন্তু ধরা পড়লাম। ছোড়দি বললে—“কে-অম্লা বুঝি ?” অত্যন্ত ছেলেবেলায় সবাই যখন আমার নামটাকে বিকৃত করতেন তখন তাতে আপত্তি করবার বয়স আমার ছিল না—কিন্তু তেরো চোদ্দ বছর বয়সে ও-নাম শুনলে আমার ভাবি রাগ হত। বাড়ীতে সকলে যখন আমাকে অমল বলে ডাকতেন,• ছোড়দি তখনও ‘অমূল্য’ বলা ছাড়ল না। কিন্তু আমার দামমাধুর্ঘ্য অথবা আমার বয়সের মধ্যাদা এর কোনটাই ছোড়দি রক্ষা করবে—এ আশা করা বৃথা। যা হোক আমি তার অনাবশ্বক প্রশ্নের কৈান জবাব ন দিয়ে বেছে বেছে ফুল খাচ্ছিলাম। ছোড়দি