পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢भ ण२थT ] প্রথম হই নি, খেলাতেও এমন কোন কৃতিত্ব দেখাতে পারিনি যাতে করে আমার নাম লোকের মুখে মুখে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। মনে পড়ল কিছুদিন পূৰ্ব্বে আমাদের গ্রামে একটা ম্যাজিকওয়ালা এসেছিল । ম্যাজিক দেখাবার দিন সন্ধ্যেবেল গ্রামের সমস্ত লোক কি প্রশংসমান চোখে তার দিকে তাকিয়েছিল । তার পর সে যখন অসম্ভব জায়গা থেকে ডিম ঘড়ি প্রভৃতি বের করতে লাগৃল তখন আমরা ভেবেছিলাম তার অসাধ্য কোন কাজ নেই। তার পর যে জুয়েকদিন সে লোকটা ছিল অমরা তিনচার জন পড়াশুনা ছেড়ে তার পেছনে পেছনে ঘুরেছিলাম ম্যাজিক শেখবার আশায়, কিন্তু মাজিক শেখাত, হলই না, মাঝখান থেকে পড়ায় ফাৰি দেওয়ার অপরাধে দাদার কাছে অপমানিত হতে হয়েছিল । অবষ্ঠ সে লোকটা চলে গেলে আমরাও একটা টিনের বাক্স, একটা ভাঙ্গ ঘড়ি, নবীনের সংগৃহীত একখণ্ড অস্থি—পিসিমা বলেছিলেন সেটা নিশ্চয়ই গরুর হাড়— এই-সব দিয়ে একটা ম্যাজিক দেখাবার দল তৈরি করেছিলাম, কিন্তু দর্শকদের ইচ্ছা এবং সহযোগ না থাকূলে সে ম্যাজিক দেখিয়ে তাদের আশ্চৰ্য্য করে দেবার কোন উপায় ছিল না। বস্তুত তিতু টেপি প্রভৃতি দর্শকের যা দেখে সব চেয়ে আনন্দ পেত সে হচ্ছে—নবীনের ডিগবাজী । যা হোক পিসিমা সেই গরুর হাড়ের কথাটা অভিভাবকদের কানে তুলে দেওয়াতে আমাদের ম্যাজিকের দল ভেঙ্গে দিতে হল। আজ মনে হল যদি সেই ম্যাজিকওয়ালার মত ম্যাজিক দেখাতে পাবৃতাম তবে সে আমাকে ভাল না বেসে থাকৃতে পাবৃত না । এমনি করে কয়েকদিন গেল । তার পর রাখালের কাছে খবর পেলাম যে তারা চলে যাচ্ছেন—পরের দিন সকাল বেলা । স্থির করলাম যাবার আগে কোনরকমে আর-একবার দেখা করে বিদায় নিতে হবে । বিজয়৷ দশমীর ভোরের বেলায় সানাইয়ের করুণ স্বর শরৎআকাশকে যেমন করে’ কানায় কানায় বিদায়-ব্যথায় ভরে দেয়, মনটা তেমনি করে’ ব্যথায় ভরে গেল । পরদিন খুব ভোরে,উঠলাম। নবীনকে সঙ্গে নিলাম, বললাম “চল মণিংওয়াকে ৷” ইচ্ছা ছিল সেদিন শুকতার \ుసి(t ^^^ AeMeMMMeMeeMeAMAMAAA AAASS বেশভূষারু যথাসাধ্য পারিপাট্য করব। কিন্তু বাক্সের চাবি ছিল মায়ের হাতে—সাজসজ্জার •কোন সরঞ্জামই আমার আয়ত্তে ছিল না। তবে শিশিতে স্থগন্ধি তেল ছিল, তার অনেকটা মাথায় ঢেলে চকচকে করে তুললাম। মাথা আঁচড়ান আমাদের নিষেধ ছিল না বটে, কিন্তু সিথি করা নিষেধ ছিল ; কিন্তু সেদিন কে কার শাসন বারণ মানে । অনেকক্ষণ ধরে’ বেশ করে সিথি করলাম। পরণের কাপড়টা ময়লা হলেও কেঁচা দিয়ে পৰ্বলাম। গায় সেই ফ্ল্যানেলের সার্টট। সার্ট ধুতির অপ্রতুল থাক, মোজা ছিল দুজোড়া । এক জোড়া নিজের লম্বা মোজা, সেটা পায় দিয়ে তার উপর আলনায় পরিত্যক্ত দাদার এক জোড়া ছেড়া সিম্বের মোজা ছিল, সেটাও পায়ে দিয়ে নিলাম। খড়কী দরজা দিয়ে বাড়ী থেকে বেরোলাম। যাবার সময় কোন কিছু বিঘ্ন হল না বটে, কিন্তু নব নেকে নিয়ে পড়লাম মুস্থিলে। একে ত তাঁর কাপড়-চোপড় অতি অভদ্র রকমের, তার উপর তার ইচ্ছা ছিল যে যদি মৰ্ণিংওয়াকে যেতেই হয় তবে নদীর ধারে না গিয়ে দাসদের পুকুরেঙ্গ ধারে যাওয়া যাক, কারণ সেদিকে ভোরের বেলায় খেজুরের রল পাবার সম্ভাবনা আছে । কিন্তু বেচারা নবীন আমার কাছ থেকে অনেক ঘুড়ি, সিগারেটের ছবি পেয়েছে, আজ সে কি করে নিমকহারামী করে—অতএব চলুল সঙ্গে । কিন্তু পথের ধারে যতগুলো বুনো কুলগাছ ছিল, প্রত্যেকটাতে দুচারটে টিল ছুড়ল এবং ছচাৱটে কুল কুড়োল । এমনি করে নদীর ধারে যেতে দেরি হয়ে গেল । উচু সৰ্বকারি বাধা রাস্ত দিয়ে নদীর ঘাটের দিকে যাচ্ছিলাম। রাস্তার পাশে বঁাশ-ঝাড়ের মাথার উপর তখন সবেমাত্র একটুখানি রোদ এসে পড়েছিল, অন্তধারে দূরবিস্তৃত মাঠের শেষে ভিন্ন গ্রামের গাছের সবুজ রেখা কুয়াসায় ঝাপূসা। মাঠে কলাই-ক্ষেতের উপর বড় বড় ফোটা ফেঁটা শিশির তখনও শুকোয় নি । মাঠের মাঝখানে ইটের পাজার উপর গোটা কয়েক বাবলা গাছ। একটা মরা খেজুর-গাছের উপর একটা ঘুঘু ক্ৰমাগত বুক আছড়ে আছড়ে ডাকৃছিল। ঠাৎ নবীন তার দিকে