পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧કં૭ জিনিস বাহির করা এক কাজ, আর সেইগুলিকে সাজান আর-এক কাঙ্ক । নলিনী বাবু, দুই কাজেই যথেষ্ট পরিশ্রম করিয়াছেন, আর যথেষ্ট রুতিত্বও দেখাইয়াছেন । গানগুলির ব্যাখ্যাও বেশ জমিয়াছে । কোথায় পুরাণ গানের দুই চারিটি কথা বদলাইয়া রজনীকান্ত গানের ভাব গাঢ় হইতে গাঢ়তর করিয়াছেন, তাহাও দেখান হুইয়াছে । আবার কোথায় একটি কথার একটি অক্ষর বদলাইয়া ব্যঙ্গরসের চূড়ান্ত করা হইয়াছে, তাহাও দেখান হইয়াছে। স্বতরাং নলিনী বাবু একাধারে বস্ওয়েল ও মল্লিনাথ, এ কথাটা আমি যে বড় বাড়াইয়া বলিয়াছি, তাহা কেহ যেন মনে না করেন । একজন লোকের বাল্য, কৈশোর, গেীবন ও প্রৌঢ় অবস্থার সব ইতিহাস সংগ্রহ কর ত কঠিনই । সেই ইতিহাস হইতে র্তাহার জীবনের, প্রতিভার, চরিত্রের বিকাশ দেখান আরও কঠিন । এই বইখানিতে নলিনী বাবু দুইই খুব ভাল করিয়া দেখাইয়াছেন। তাহার জন্য র্তাহাকে যে কি পরিশ্রম করিতে হইয়াছে, তাহ ভূক্তভোগীই বুঝিতে পারেন। রজনী বাৰু আট মাস হাসপাতালে ছিলেন, এই সময় তাহার বাক্রোধ হইয়া যায়। তিনি কথা একেবারে কহিতে পারিতেন না। কাগজের উপর পেনসিল দিয়া লিপিয়ু মনে শব ব্যক্ত করিতেন। জলতৃষণ লাগিলে পিথিয়া জল চাহিতেন। ক্ষুধা লাগিলে লিথিয়৷ ধাবীর চাহিতেন। কেহ আসিলে তাহার সঙ্গে লিথিয়। অtলাপ করিতেন , তাছাতে বীর তারিখ বড় লেখা থাকিত না। কাহার সঙ্গে আলাপ করিতেছেন, তাহারও স্বচনা থাকিত না । তাহার উপর আবার কাগজ বাচাইবার জন্য একবার লেখ কাগজের উপর মক্স করিতে হইত। একবার আড়াআড়ি লিপিয়াছেন, আবার লম্বালধি লিখিতে হইত। এইরূপে আtট মাসে রাশি রাশি কাগজ জমিয়াছিল ; কেহ সে সব কাগজ, সাঙ্গাইয়াও রাখেন নাই ! নলিনীবাবু সেই কাগজগুলি পড়িয়া, কবে কাহার সহিত কি আলাপ হইয়াছিল, তাহ ধীরে ধীরে বাহির কুরিয়াছেন এবং "হাসপাতালের রো জনামচা’ নাম দিয়া কয়েকটি সুন্দর অধ্যায় . আমাদের উপহার দিয়াছেন। আমি প্রবাসী-ভান্দ্র, ১৩২৯ { २२° ७ां★, *भ पं७ ত পড়িয়া বিস্থিত হইয়াছি। রজনী বাবুর ধৈর্য্য, প্রশান্ত ভাব, ঈশ্বর-প্রেম, ভগবানের উপর নির্ভর, এ সব ত বিস্ময়ের কথা ; তাহার উপর এই দারুণ ধন্ত্রণার সময়েও তিনি কবিতা লিখিয়াছেন, তাহা ত আরও বিস্ময়কর। তাহার উপর নলিনী বাবুর খাটুনি আর-এক বিস্ময়ের কথা । “Q» - এই নিদারুণ অবস্থায় রজনী বাবুর চরিত্রের অনেক সদগুণ বেশ ফুটিয়া উঠিয়াছে । আর নলিনী বাবু দেথাইয়াছেন যে, এই সদগুণগুলি রজনীকান্ত র্তাহার পিতৃপিতামহ হইতে পাইয়াছিলেন । বাল্যে সেই সব সদগুণের কেমন অঙ্কর হইয়াছিল ; কৈশোরে, যৌবনে, প্রৌঢ়াবস্থায় তাহা কেমন করিয়া বাড়িয়াছিল এবং হাসপাতালে তাহা কেমন করিয়া পুষ্প-ফল-স্থশোভিত হইয়াছিল। এইটুকুই ত জীবন-চরিতের বাহাদুরি । এই নাস্তিকভার দিনে, এই ঘোর স্বার্থপরতার দিনে, সে সময়ে যশ ও অর্থের জন্য শিক্ষিত-সম্প্রদায় যে শুদ্ধ লালায়িত, তাহা নহে—অনেক অকাৰ্য্য করিতেও কুষ্ঠিত হয়েন ন—বরং সেই অকুষ্ঠার জষ্ঠ গৰ্ব্ব ও অহঙ্কার করেন, লেই সময়ে ভগবানের উপর এত নির্ভর, এত অস্তিকতা, এত বিনয়, এত আত্মত্যাগ রজনী বাবু কোথা হইতে প ইলেন ?—এ কথা সহজেই লোকের মনে উদয় হয় । নলিনী বাবু দেখাইয়াছেন, এই অস্তিকত। রজনী বাবু তাহার পিতার নিকট পাইয়াছিলেন। র্তাহার পি তা যদি ও গবর্ণমেণ্টের বড় চাকরি করিতেন, তিনি একজন পরম ভক্ত, সুকবি ও পরম সাধক ছিলেন এবং ছেলেটিকে ও উপদেশ দিয়া, আপনার দৃষ্টান্ত দেখাইয়া তিনি ভক্ত ও সাধক করিয়া তুলিয়াছিলেন। কবিত্ত্বশক্তিও রজনী বাবুর পিতার যথেষ্ট ছিল ; লে শক্তিও রজনীকাস্ত পিতার নিকট পাইয়াছিলেন। সে শক্তি কলেজে কেরাণীকে ব্যঙ্গ করিয়া, দু চারটি ছোট ছোট কবি তা লিপিয়া ক্রমে বিকাশ হইতেছে, শেষ রোগশয্যায় তাহার সেষ্ট শক্তিই রহিল, আর সকল শক্তিই অন্তহিত হইয়া গেল । সে শক্তির বিকাশে শুদ্ধ রাজসাহী নহে, সমস্ত বাঙ্গালা মুগ্ধ হইয়া পড়িয়াছে। শুনিয়াছি, তুলসীদাস বি বনিক প্লেগে পীড়িত হইয় অসীম ধন্ত্রণার মধ্যে “হনুমানবাহক” নামক একটি