পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৬২ .ھ میچ .حمیہیے অসাধারণ অধ্যবসায় ও চরিত্রবলের পরিচয় দিয়েছে, তেমনই মানসলোকের সত্যের সন্ধানে চিত্তকৈ প্রথার আবেষ্টন থেকে মুক্ত করে নব নব পথে ধাবিত করতে গিয়ে মহাপুরুষেরা আপন চরিত্র-মহিমায় দুঃসহ কষ্টকে শিরোধাৰ্য্য করে নিয়ে থাকেন। আমরা অনুভব করতে পারি না যে এর। এদের বিরাট স্বরূপ নিয়ে ক্ষুদ্র জনসংঘকে ছাড়িয়ে কত উৰ্দ্ধে বিরাজ করেন । যারা ছোট, বড়র বড়ত্বকেই তারা সকলের চেয়ে বড় অপরাধ বলে গণ্য কবে । এই কারণেই ছোটর আঘাতই বড়র পক্ষে পূজার অর্ঘ্য। যে জাতি মনে করে বসে আছে যে অতীতের ভাণ্ডারের মধ্যেই তার সকল ঐশ্বৰ্য্য, সেই ঐশ্বৰ্য্যকে অর্জন কবৃবার জন্তে তার স্বকীয় উদ্ভাবনার কোনো অপেক্ষা নেই, তা পূৰ্ব্বযুগের ঋষিদের দ্বারা আবিষ্কৃত হয়ে চিরকালের মত সংস্কৃত ভাষায় পুথির শ্লোকে সঞ্চিত হয়ে আছে, সে জাতির বুদ্ধির অবনতি হয়েছে, শক্তির অধঃপতন হয়েছে। নইলে এমন বিশ্বাসের মধ্যে স্তব্ধ হয়ে বসে কখনই সে আরাম পেত না। কারণ বুদ্ধি ও শক্তির ধৰ্ম্মই এই যে, সে আপনার উদ্যমকে বাধার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে যা অজ্ঞাড যা অলব্ধ তার অভিমুখে নিয়ত চলতে চায় ; বহুমূল্য পাথর দিয়ে তৈরি কবরস্থানের প্রতি তার অঙ্গরাগ নেই। যে জাতি অতীতের মধ্যেই তার গৌরব স্থির করেছে, ইতিহাসে তার বিজয়যাত্রা স্তব্ধ হয়ে গেছে, সে জাতি শিল্পে সাহিত্যে বিজ্ঞানে কৰ্ম্মে শক্তিহীন ও নিফল হয়ে গেছে। অতএব তার হাতের অপমানের দ্বারাই সেই জাতির মহাপুরুষদের মহৎ সাধনার যথার্থ প্রমাণ হয় । আমি পূৰ্ব্বেই বলেছি যে য়ুরোপে যে-সকল দেশ অতীতের আঁচল ধরা, তারা মানসিক আধ্যাত্মিক রাষ্ট্রিক সকল ব্যাপারেই অন্য দেশ থেকে পিছিয়ে পড়েছে । স্পেন দেশের ঐশ্বৰ্য্য ও প্রতাপ এক সময়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল, কিন্তু আজ কেন সে অন্ত যুরোপীয় দেশের তুলনায় সেই পূৰ্ব্ব-গৌরব থেকে ভ্ৰষ্ট হয়েছে ? তার কারণ হচ্ছে যে স্পেনের চিত্ত ধৰ্ম্মে কৰ্ম্মে প্রাচীন বিশ্বাস ও আচারপদ্ধতিতে অংক, তাই তার চিত্তসম্পদের প্রবাসী—ভাঞ্জ, ১৩২৯ منتهیههای ۶۶یه উন্মেষ হয়নি। যারা এমনি ভাবে ভাবী কালকৈ জৰঞ্জী করে, বর্তমানকে প্রহসনের বিষয় বলে, সকল পরিবর্তনকে হাস্যকর দুঃখকর লজ্জাকর বলে মনে করে, তারা জীবন্মত জাতি। তাই বলে অতীতকে অবজ্ঞা করাও কোনো জাতির পক্ষে কল্যাণকর নয়, কারণ অতীতের মধ্যেও তার প্রতিষ্ঠা আছে। কিন্তু মানুষকে জানতে হবে যে অতীতের সঙ্গে তার সম্বন্ধ ভাবীকালের পথেই তাকে অগ্রসর করবার জন্তে। আমাদের চলার সময় যে পা পিছিয়ে থাকে সেও সাম্নের পকে এগিয়ে দিতে চায়। সে যদি সামনের পা-কে পিছনে টেনে রাখৃত তাহলে তার চেয়ে খোড়া পা শ্রেয় হত। তাই সকল দেশের মহাপুরুষেরা অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে মিলনসেতু নিৰ্ম্মাণ করে দিয়ে মানুষের চলার পথকে সহজ করে’ দিয়েছেন । আমি মনে করি যে ভারতবর্ষে জাতির সঙ্গে জাতির, স্বদেশীর সঙ্গে বিদেশীর বিরোধ তত গুরুতর নয় যেমন তার অতীতের সঙ্গে ভবিষ্যতের বিরোধ । এইরূপে আমরা উভয় কালের মধ্যে একটি অতলস্পর্শ ব্যবধান স্থষ্টি করে’ মনকে তার গহ্বরে ডুবিয়ে দিয়ে বসেছি। একদিকে আমরা ভাবীকালে সম্পূর্ণ আস্থাবান হতে পারছি না, অন্যদিকে আমরা কেবল অতীতকে অঁাকৃড়ে থাকৃতেও পারছি না । তাই আমরা একদিকে মোটর-বেল-টেলিগ্রাফকে জীবনযাত্রার নিত্যসহচর করেছি, আবার অন্যদিকে বলছি যে বিজ্ঞান আমাদের সর্বনাশ করল, পাশ্চাত্য বিদ্য। আমাদের সইবে না। তাই আমরা না আগে না পিছে কোনো দিকেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারছি না। আমাদের এই দেটিানার কারণ হচ্চে যে আমরা অতীতের সঙ্গে ভবিষ্যতের বিরোধ বাধিয়েছি, জীবনের নব নব বিকাশের ক্ষেত্র ও আশার ক্ষেত্রকে আয়ত্তের অতীত করে' রাখতে চাচ্ছি, তাই আমাদের দুৰ্গতির অন্ত নেই। আজ আমরা বলব যে, যে-সকল বীরপুরুষ অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে সেতুবন্ধন করেছেন, অতীত সম্পদকে, রুপণের মনের মত মাটিতে গচ্ছিত না রেখে বহমান কালের মধ্যে তার ব্যবহারের মুক্তিসাধন করতে উদ্যমশীল হয়েছেন তারাই চিরস্মরণীয়, কারণ