পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧૧8 বাঙালীদের হিন্দী না বলিবার ও শিথিবীর আংশিক কারণ হইতে পারে। কিন্তু নিরক্ষর বাঙালীরা ত কোন সাহিত্যেরই ধার ধীরে না ; তাহীদের হিন্দী বলিতে অনভ্যস্ত হওয়ার কারণ কি ? বোধ হয়, তাহীদের অধিকাংশ বঙ্গের বাহিরে অর্থ উপার্জন করিতে যায় না বলিয়া, তাহীদের হিন্দী বলীর অভ্যাস হয় না। নিরক্ষর ও লিখনপঠনক্ষম বাঙালীরা হিন্দুস্থানী বলিতে অভ্যাস করিলে তাহীদের কার্য্যক্ষমত ও উপার্জন ক্ষমতা নিশ্চয় বাড়িবে ! আইনভঙ্গ তদন্ত-কমিটি কাহাকেও আঘাত না করিয়া, কাহারে উপর জোর জবরদস্তি বলপ্রয়োগ না করিয়া, সাত্বিক ভাবে আইন বা সৰ্বকারী আদেশ অমান্ত ব্যাপক ভাবে করিবার জন্ত দেশ প্রস্থত কি না, তাহীর অঙ্গুসন্ধান করিবার জনা আল হযোগ আন্দোলনের কয়েকজন নেত। ভারতের সকল প্রদেশে সাক্ষ্য গ্রহণ করিতেছেন । এই প্রকারের অবাধ্যত৷ ( disobedience ) দুষ্ট রকমের হইতে পারে । বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের পর বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের বরিশালে যে অধিবেশন হয়, তাহা চরমপন্থীদের অধিবেশন নহে। তাহাতে শ্ৰীযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্ৰীযুক্ত ভূপেন্দ্রনাথ বসু, শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণকুমার মিত্র, প্রভৃতি বিখ্যাত মডারেটগণ নেতৃত্ব করিয়াছিলেন। তখন র্তাহারা সরকারী আদেশ অমান্ত করিয়াছিলেন। আবার গত বৎসর যখন ইংলণ্ডের যুবরাজ ভারতবর্ষে আসিবার পর কোন কোন প্রদেশে স্বেচ্ছাসেবক (Volunteer ) হওয়া বে-আইনী বলিয়া ঘোষিত হয়, তখন শ্ৰীযুক্ত মোতিলাল নেহরু, শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ, এবং আরও অনেক নেতা ও কয়েক হাজার অসহযোগী সরকারী আদেশ অমান্ত করিয়া জেলে যান। সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ পূৰ্ব্বে গোরখপুর জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট, এক হুকুম জারি করেন, যে, পণ্ডিত মদনমোহন মালবীয় ঐ জেলায় বকৃত করিতে পরিবেন না। ঐ হুকুম অমান্য করিয়া পণ্ডিতজী ঐ জেলার পাঁচ জায়গায় পাচটি বকৃত করেন । এই দৃষ্টান্তগুলিতে গবৰ্ণমেন্ট প্রথমে সাধারণ রাষ্ট্ৰীয় অধিকাৰে প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্তক্ষেপ করিয়াছিলেন, এবং তাহ রক্ষার নিমিত্ত সরকারী আদেশ অমান্য করা হইয়াছিল । সাধারণ অধিকারে হস্তক্ষেপ গবর্ণমেণ্ট যখন যেখানে করিবেন, তখন সেইখানেই, গবর্ণমেণ্টের আদেশ লঙ্ঘন করা - প্রত্যেক ভারতীয়ের একান্ত কৰ্ত্তব্য। এই রকমের অবাধ্যতার জন্য দেশ প্রস্তুত কি না, তাহ নির্ণয় করিবার জন্য তদন্ত কমিটি সাক্ষ্য লইতেছেন না। তাহার অন্যবিধ অবাধ্যতা সম্বন্ধে বিবেচনা করিবেন। তাহার একটি দৃষ্টান্ত দিতেছি । কোন প্রদেশ, জেলা বা মহকুমার লোক বরাবর যে ভূমিকর বা অনাবিধ ট্যাক্স, দিয়া আসিতেছেন, তাহা হয়ত বেশী নহে, বা অন্যায় নহে । কিন্তু “যেগবর্ণমেণ্ট লোকমতের উপর প্রতিষ্ঠিত নহে, যে-গবর্ণমেণ্ট লোকমতকে অগ্রাহ ও অপমানিত করে, ঘে-গবর্ণমেন্টের আমলে জালিয়ান ওযtল| বাগের মত কাণ্ড ঘটে ও তাহার সমুচিত প্রতিকার হধ না, তাছার আইন মান বা তাহাকে ট্যাক্স দেওয়া উচিত নহে,” এইরূপ বিশ্বাসের বশবৰ্ত্তী হইয় কোন প্রদেশের, জেলার, মহকুমার, বা গ্রামের লোক যদি ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করিতে চায, তাহ। হইলে সেইরূপ অবাধ্যতার জন্য দেশ প্রস্তুত কি না, কমিটি তাহারই বিচার করিবেন—আমরা এইরূপ বুঝিয়ছি । কোন প্রদেশ, জেলা, প্রভৃতির যোগ্যতার বিচার তাহারা কি প্রকারে করিবেন, জানি না। তবে, ইহা সহজেই বুঝা যায়, যে, হাজার হাজার লোক উক্ত প্রকারে আইন লঙ্ঘন করিলে তাহীদের উপর খুব নিৰ্য্যাতন আসিবে, তঁtহাদিগকে দারিদ্র্য ও অন্য নানা দুঃখ সহ্য করিতে হইবে, অথচ শান্ত সংযত থাকিতে হইবে। তাহাদিগকে উত্তেজিত করিয়া, তাহাদিগকে প্রহার ও অপমান করিষা, তাহদের স্ত্রীলোকদিগকে অপমান করিয়া, শান্তিভঙ্গ করাইবার চেষ্টা হইবে । এরূপ ঘটিলেও শাস্ত থাকিতে হইবে । ইহার জন্য কাহার প্রস্তুত, কমিটির ইহাই নিৰ্দ্ধারণীয়। শাসকেরা সব দেশেই চিরকাল একদল লোককে আরএক দলের বিরুদ্ধে লাগাইয়া দিয়া নিজেদের প্রভুত্ব রক্ষার চেষ্টা করিয়া থাকে। অতএব, যেখানে সাম্প্রদায়িক