পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] o সাচি গুপ যেমন আধ্যাত্মিকতার প্রাধান্য আছে তেমনি সে একটা প্রাণপূর্ণ পদার্থও বটে, বিশ্বপ্রকৃতির ধমনীম্পন্দনে তার প্রতিমূৰ্ত্তি এবং রেখা কম্পমান । ভারতীয় শিল্পী জীবনের এই গভীর হৃদস্পন্দনকে অনুভব করেছেন, তার গতিবেগ তার সমস্ত মনকে আন্দোলিত করে তুলেছে। ভারতীয় চিত্রকলায় বহু কাল থেকেই নারীদেহ ও তরুলতার মধ্যে সাদৃশ্য দেখানে এবং উভয়কে একজায়গায় উপস্থিত করার ধে একটা স্বাভাবিক ইচ্ছা এবং প্রয়াস প্রকাশ পেয়েছে তাতেও এই কথা বলে, কারণ ঐসব ছবিতে শুধু যে রমণীদেহের রমণীয়তা ও সৌকুমাৰ্য্য ফুটে উঠেছে. তা নুয়, একটা সকৌতুক স্নেহময় লাবণ্যলীলা এবং গতিতরঙ্গ ধেন রমণীর দেহ এবং তার বক্র বাহুদ্বুটি, গাছের শাখা-প্রশাখা এবং তার কোমল পত্রপল্লবগুলি সমস্তের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমগ্র দৃশ্যকেই যেন একটা অনিৰ্ব্বচনীয় স্বযমায় স্বৰ্গীয় করে তুলেছে। বুদ্ধদেবের যে সৌম্য শাস্ত ধ্যান-মৌন মূৰ্ত্তি, তার চারদিকে একটা বিপুল নীরবতা এবং একটা অচল অটল তপশ্চৰ্য্যার ভাব আছে সত্য, কিন্তু দেহের ঐ আনুবিচ্ছিন্ন স্থিরতার ভিতর দিয়েও একটা প্রাণের ছন্দ্ৰ স্পন্দিত হয়ে উঠেছে। আনত নয়নপল্লব এবং মন্থণ বাহ ছুটি থেকে একটা জীবনের কম্প নিম্নপ্রবাহিত হয়ে ভাবমগ্ন করযুগলে এসে শান্তি লাভ করেছে, সমস্ত দেহের উপর দিয়ে একটা প্রাণের তরঙ্গ দ্বলে ভারতীয় শিল্পপ্রতিভা o جه من ছলে শেষে ঐ পদ্মাসনযুত্ত্ব পদদ্বয়ে যেন” এক পরমাপ্রয় পেল । বুদ্ধদেবের ঐ তদগতভাবপূর্ণ অপূৰ্ব্ব মূর্তিটির অন্তরের ঐক্য, জীবন্ত দেহের সঙ্গে তার গোঁসাদৃশ্য,কিম্বা অংশ-সমাবেশে সমস্মৃতির উপর নির্ভর করে নি, সমস্ত মূৰ্ত্তিকে ব্যাপ্ত করে এবং প্রতি অঙ্গকে গৃঢ় যোগ. স্বত্রে মিল্লিত করে যে অস্ত:-. © শীলা ছন্দ্রগতি নিবিড়-প্রবাহিত হয়ে গিয়েছে তারই ফলে সেটা ফুটে উঠতে পেরেছে। শিবের তাণ্ডবনৃত্যের নানা নিদর্শন এবং তাকে অবলম্বন করে যেসব বিচিত্র শিল্পশ্বষ্টি দেখতে পাওয়া যায় তাতে সমুখ বা পিছন, বাম বা দক্ষিণ, সবই যে কোথায় লুপ্ত হয়ে গেছে তার ঠিকানা নেই, এমন কি, নৃত্যের কোনো অঙ্গভঙ্গী পৰ্য্যন্ত প্রকাশ পায়নি, কারণ একটা গতির উন্মত্ততা, নৃত্যের নেশাতেই যেন সমস্তটা মেতেছে, প্রাকৃতিক জগতের দৈর্ঘ্য প্রস্থ বেধ এবং সময় ও সীমার বেধকে অতিক্রম করে চলার উদাম গতি-বেগের অব্যক্ত আলোড়নে যেন দগু-পল-মুহূৰ্ত্তবিবর্জিত দিগ্বিদিকজানশূন্ত একটা ভাবলোকের স্বতন্ত্র দেশ ও কাল স্বষ্ট হয়ে উঠেছে। এই নৃত্যোন্মত্ত প্রচণ্ড গতিস্রোতকে গোচর করে দেখাবার জন্তে বাধা হয়ে এমন একটি দেহের স্বষ্টি করতে হল ধাতে বাহুর বহুত্বই অলৌকিক শক্তিবেগকে রূপতরঙ্গে ব্যক্ত করে তুলতে পারে। এই চলচঞ্চল আবেগবিকম্পিত রূপচ্ছবির মধ্যে জ্ঞেয় অজ্ঞেয় সকল প্রকার বেগের বিকাশ আছে বলে’ এর মধ্যে এক অপূৰ্ব্ব গতিসাম্য ঘটেছে, এবং বুদ্ধদেবের ধ্যানন্তৰু মুক্তিতেও যেমন একটা নিবিড় জীবনের প্রবাহ "দেখতে পাই এখানে আবার তেমনি সমস্ত বিরুদ্ধ গতিকে পরম সামঞ্জস্যে সম্মিলিত করে সমস্তটার একটা বিরাট শাস্তু রূপ চোখে পড়ে । - ভারতের শিল্পী জীবনের অন্তরতম গোপনুগামী গতিকে উপলব্ধি করেছেন। প্ৰতিস্তত্ব বা মুম্বমেন্ট, মাত্রেরই