পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-98 ছিলেন এবং এখানকার সমান্ত অধিবাসীরা অম্বিকা-বাবু ও ২কলাস-বাবুর সৃহিত পরামর্শ না করিয়া কোন কার্ঘ্যে হস্তক্ষেপ করিতেন না। জব্বলপুরের হিতকারিণী সভার প্রধান কাৰ্য্য—এখানকার সর্বাপেক্ষা বৃহৎ সাধারণের স্থল —হিতকারিণী স্কুল—স্থাপন ও পরিচালনা । নাগপুরের স্বনামখ্যাত বাঙ্গালী রায় বাহাদুর সার বিপিনকৃষ্ণ বস্থ মহাশয় জব্বলপুরের হিতকারিণী হাই স্কুলের হেডমাষ্টার হইয়৷ সৰ্ব্বপ্রথমে এই দেখে আসেন, পরে জবলপুৰ হইতে ওকালতি পাশ করিয়া নাগপুরে যান। তাহার নাগপুর যাওয়ার পর ৮ কালীচরণ বন্ধ মহাশয় অনেকদিন পৰ্যন্ত হিতকারিণী স্কুলের হেডমাষ্টার' ছিলেন। জব্বলপুরের সাধারণের উপকার করা তাহার জীবনের একটি ব্ৰতস্বরূপ ছিল। প্রতে গরীব-দুঃখীকে বিনামূল্যে ঔষধদান, সমুদায় দিন স্কুলে পরিশ্রম, তাহার পরে আবার নাইট স্কুল করিয়া গরীব-দুঃখীকে বিদ্যাদান-ইহাই তাহার দৈনন্দিন জীবন ছিল। ১৮৯৬-৯৭ সালে যখন এ প্রদেশে মহা দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হয়, তখন কালী-বাৰু কৈলাস-বাবু ইত্যাদির চেষ্টায় অনেক লোকের প্রাণ রক্ষা হয়। র্তাহারা ২৩ শত লোককে বোজ পিচুড়ী বিতরণ করিয়া খাওয়াইতেন। দুর্ভিক্ষের সময়ে এখানে সৰ্ব্বাপেক্ষা পরিশ্রম করেন এখানকার ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের এসিষ্টাণ্ট, • সার্জন শ্ৰীযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ বরাট এম-বি মহাশয় । তাহারই চেষ্টায় জব্বলপুরের সাধারণ কর্তৃক একটি Poor IIouse ব দরিদ্রাশ্রম স্থাপিত হইয়াছিল ; স্বরেন্দ্র-বাৰু সেক্রেটারীরূপে তাহার কার্য্য পরিচালনা করিতেন এবং পরে গভর্ণমেণ্ট হাতৃে লইলেও শেষ পর্য্যন্ত পরিচালনের ভার স্বরেক্স-বাবুর হাতেই ছিল। তাহার এই চেষ্টার ফলে দুর্ভিক্ষের সময়ে এখানে যে কত লোকের জীবন রক্ষ হইয়াছে তাহ। বলা দুরূহ। কালী-বাবু এখানকার ভূগুক্ষেত্র থিওসোফিকাল সোসাইটির একজন বিশেষ সভ্য ছিলেন ; তিনি এবং এখানকার উকীল শ্ৰীযুক্ত জীবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এম এ, এল, এল বি, মহাশয় অনেকদিন পর্য্যন্ত সেই সভা চালাইয়াছিলেন। দুর্ভিক্ষে পিতৃমাতৃহীন অনাথ বালক বালিকা লইয়া হিতকারিণী সভার পক্ষ হইতে অম্বিকবাবু একটি অনাথtশ্রম খুলিয়াছিলেন এবং কয়েক বৎসর প্রবাসী-আশ্বিন, )లిసిసి চালাষ্টয়াছিলেন, কিন্তু সাধারণের সাহায্যের অভাবে তাহ ক্রমে উঠাইয়াদিতে বাধ্য হন । মধ্যপ্রদেশের ১৮৯৬-৯৭ সালের জুর্ভিক্ষ-সাহায্যভাণ্ডারের কার্য্য অতীব প্রশংসার সহিত চালিত হুইয়াছিল । তাহার অন্যতম সেক্রেটারী ছিলেন শ্ৰীযুক্ত বিপিনকৃষ্ণ বন্ধ এবং সেই কাৰ্য্যের জন্য তিনি ১৮৯৮ সালের ১লা জানুয়ারী সি আই ই উপাধি পান। জব্বলপুরের ছভিক্ষ-সাহায্য-ভাণ্ডারের কাব্য অতীব প্রখ্যাতির সঠিত সিভিল সার্জন লেপ্টেনাণ্ট কর্ণেল ম্যাকে এবং এসিষ্টাণ্ট সার্জন শ্ৰীযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ বরাট চালাইয়াছিলেন এবং সেইজন্য সেইসময়ে ম্যাকে সাহেব সি-আই-ই এবং শ্ৰীযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ বরাট মহাশয় রায় বাহাদুর উপাধিতে जूडि श्प्झन । একথা বলিগে অত্যুক্তি হইবে না যে গত ৩০৩৫ বৎসরের মধ্যে জব্বলপুরের সর্বপ্রধান বাঙ্গালী ছিলেন উকীল v শ্ৰীশচন্দ্র রায় চৌধুরী। র্তাহার বাড়ী কলিকাতার দক্ষিণ রাজপুরে, ; এবং পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি যে এখানকার y ঈশ্বরচন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সম্পর্কসূত্রে আন্দাজ ১৮৭৬ সালে তাঙ্গার জব্বলপুরে প্রথম আগমন হয়। তিনি এনট্রান্স্শু প্লিন্ডারশিপ পাস করিয়া এদেশে আসিয়া ওকালতি আরম্ভ করেন, কিন্তু র্তাহার অসাধারণ প্রতিভায় অনেক বড় বড় এম-এ বি-এল উকীল ও ব্যারিষ্টারকেও পরাজস্ব মানিতে হইল। এরূপ শুনা যায় যে জব্বলপুরের মতন গরীবস্থানেও তিনি এক সময়ে মাসে দুই আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করিতেন । জব্বলপুরের প্রসিদ্ধ ধনী রাজা গোকুলদাসের অবস্থা এমন কিছু সমৃদ্ধিশালী ছিল না এবং তাহার নামও বড় বেণী কেহ জনিত না। শ্ৰীশ-বাবুর পরামর্শক্রমে চলিয়া তিনি এ প্রদেশে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ধনী ও জমীদার-রূপে প্রসিদ্ধ হয়েন এবং ক্রমে গভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে রাজা উপাধি পান। জব্বলপুরের যাহা-কিছু লোকহিতকর সাধারণ কাৰ্য্য, —টাউনহল, ওয়াটার ওয়ার্কস ইত্যাদি—তাহার সমুদায় রাজা গোকুলদাসের বদান্ততায় ও দূরদৃষ্টিতে স্থাপিত এবং সেই বদাম্যতার ও দূরদৃষ্টির মূলে শ্ৰীশ-বাবুর পরামর্শ। প্রশবাবুর প্রতিভা যে শুধু আদালতে বন্ধছিল তাহা নহে।