পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$otూ প্রবাসী sNరితీs్చ বলে কতবার শহর থেকে ঘুরে এলাম—তুই আমাকে নতুন কি শেখাবি ? কতবার যে মোকদ্দম করতে যেতে হয়েছে তার ঠিক নেই। ষ্ট্য রে...তোর বাপ জানে তোকে আমি টাকা দিই ? --না ত! -- o. —বেশ ভাই, খবরদার বলিস নে। তা হ’লে আমার অপমান হবে বুঝলি ? ---কিসের অপমান দাদামশাই ? -সে তুই বুঝবি নে। তার পর...হুঁ্যা রে, শহরে গিয়ে লেখাপড়া করেছিলি না লক্কা পায়রার মত ওই সব ঘুরে ঘুরে দেখেছিস ? দ্যাখ, দাদ, ভাল ক'রে পড়াশোনা করিস কিন্তু-••নইলে টাকা দেবে না আমি। তোর বাপ ত এই রকম---আমাকে ত মানেই না । শুনিস ত—কি রকম কথাগুলো বলে । লেখাপড় করবি -মানুষ হবি—যত টাকা লাগে আমি দেবো... হঠাৎ বুদ্ধ উত্তেজিত হইয়া হুক-হাতে উঠিয দাড়াইল । বলরামের দিকে তর্জনী নাড়িয়া ক্রুদ্ধ কণ্ঠে চীংকার করিয়া বলিতে লাগিল-ফের শাল তুষ্ট যদি এদিক মাড়াবি। শালা শজুর, ঘর ভাঙা বিভীষণ--বেরো শাল, বেরে এক্ষুনি তুই । আর যদি তুই আমার সীমানায় আসিস ত ঠ্যাং ভেঙে দেবো। ওঠ বলছি দুয়োর থেকে-বৃদ্ধ বলরামকে ঠেলিয়া প্রাঙ্গণ হইতে নামাইয়া দিল । বিমূঢ় বিম্বিত বলরাম নামিয়া আসিল। বলরাম বুঝিতে পারে না--বৃদ্ধ এমন করে কেন ! কত দিন যে এই রকম হইয়াছে তার ঠিক নাই। বুদ্ধ তাহাকে খুব বেশী ভালবাসে। বেশ হাসিয়া হাসিয়া কথা কহিতেছে, কিন্তু হঠাৎ যদি তাহার বাবাকে দেপিতে পায় তাহা হইলে এই রকম চীংকার করিয়া গালাগালি দিয়া তাহাকে তাড়াইয় দেয়। অভিমানে সে আর আসে না, কিন্তু কয়েক দিন পরে হয়ত বৃদ্ধ এমনি তাহার আদরের মাত্রাট বাড়াইয়া দেয় যে নিজেই সঙ্কুচিত হইয় উঠে। কত দিন বুঝিতে চেষ্টা করিয়াছে—কেন এরকম সে হয় ?— কিন্তু কিছুই বুঝিয় উঠতে পারে নাই। যোগেশ কুণ্ডু ছাতা বগলে চাপিয়া কোথা হইতে আসিতেছিল-বুদ্ধের এই গালাগালিতে অত্যধিক ক্রুদ্ধ হইয় উঠিল। বিস্থিত বলরামের কান ধরিয়া টানিতে টানিতে লইয়া গেল। বৃদ্ধ মহেন্দ্র তখন ঘরের ভিতরে চীংকার করিয়া বলিতেছে—যগো কুণ্ডুর ছেলে—সে আবার কত হবে। কুপুকুর, কুপুত্তর-কেমন বাপের ব্যাট, আহুক দেখি আর একবার আমার সীমানায়—ফৌজদারী আসামী ক'রে না যদি জেল খাটাই তবে আমার নাম মহী কুণ্ডু নয়। বলরাম শহরে চলিয়া গিয়াছে। বৃদ্ধ সেদিন তাহাকে পত্ৰ দিয়াছে যে সেদিন সে খেয়ালের মাথায় তাহাকে গালগালি দিয়াছিল। টাকা সে নিয়মিত যেমন পাইতেছিল তেমনি পাইবে ; চিন্তার কোন কারণ নাই। মহেন্দ্ৰ কুণ্ডুর আশ্রয়ে থাকিয়া এক পিতৃ-মাতৃহারা বালক পালিত হইতেছিল। বুদ্ধ বহু দিন হইতেই ভাবিতেছিল, এই যে ছেলেটি—যাহার কেহ কোথাও আপন বলিতে নাই, তাহাকে পোষ্য লওয়া সম্ভব কি না । বিষয়আশয় যাহকিছু আছে সেটা হয়ত রক্ষা পাইবে । তাহার নামটাও রক্ষা হইবে, ছোট তরফের বংশধর বলরাম বিষয় পাইলে তাহার এত দিনের উচু মাথাটা কেবল নামিয়াই বাইবে। মহী কুণ্ডু ঠিক করিয়াছিল —ফটিককে সে পোন্তই লইবে। কিন্তু, কেন কি জানি, বলরামের কথা স্মরণ করিয়াই হোক কি আর অন্য যে কারণেই হোক –সেটা আপাতত বন্ধ রহিয়া গেল । ফটিককে লইয়। সেদিন বৃদ্ধ যাতায়াতের রাস্তাটার উপরে বেড়া দিতেছিল । কারণ গোটা রাস্তাটা আপাতত তাহার নামেই আছে । যোগেশ কুণ্ডু এত সব জানিত না বে বৃদ্ধ ভিতরে ভিতরে এই সব কাণ্ড করিয়াছে । সে লাঠিসোটা লইয়৷ ছুটিয়া আসিল। চীৎকার করিয়া প্রচার করিতে লাগিল যে যাহার তিন কাল গিয়া এক কাল ঠেকিয়াছে তাহার এতখানি জুয়াচুরি আশ্চর্য্যের বিষয় সন্দেহ নাই। ভগবান কোন দিনই তাহার ভাল করিবেন না। মহী কুণ্ডু ফটিককে লইয়া নিৰ্ব্বিকার চিত্তে বেড়া দিয় যাইতে লাগিল । যোগেশ আর সহ করিতে পারিল না । তাল ঠুকিয় লাঠি বাগাইয় একটানে সব উপড়াইয় ফেলিল । ছেলেটার কান ধরিয়া পেটে একটা লাঠির গুতা দিয় বলিল—লবাবপুৰুর বীপের জায়গায় বেড়া দিচ্ছে —ভাগে হিয়াসে...