পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSU ভালই। রাত কাটলে—সকাল হ’তেই খাবারের চেষ্টায় আমার বন্ধু মনোযোগ দিলেন । বন্ধুটি আমার মোটা মাতুষ, আহারে পটু, এটাওয়ার পুরি আর আলুর তরকারী তিনি হাজির করলেন সের-দুই আর যতরকম ঝুরিভাজা ডালমুট—যেসব জিনিষ গেলে মানুষ সাধারণতঃ বঁচে না । যাহোক এ যাত্র আমরা বেঁচে গেলাম। তার পর দিনের গরম বেড়ে চললো, স্বৰ্য্যদেবের সঙ্গে পাল্ল দিয়ে আমাদের ডাকগাড়ী পশ্চিম অভিমুগে ছুটে চললে । সারা দিনট বরফ সোডা আর জলে ডুবে থাকা গেল। আমার বন্ধটি প্রকাণ্ড এক বরফের স্তুপের উপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকলেন। স্বপ্নময়; যে-রাস্ত দিয়ে আমরা গেলাম সে-পথ সকলেরই পরিচিত, তার বর্ণন নিম্প্রয়োজন। সন্ধ্যায় দিল্লী পৌছে গাড়ী বদল ক'রে পেশোয়ার মেলে ওঠা হ’ল । খাওয়া হ’ল ভাতের বদলে রুটি আর মাছের বদলে মাংস ৷ এবারকার প্রবাসী SNご8ミ. পাড়ি রাওলপিণ্ডি । দুপুরে গিয়ে হাজির হলাম—এই রৌদ্র আর ধুলোর শহরে। টােঙ্গাওয়ালা নিয়ে গেল একটি হোটেলে। বেশী ভিড় ছিল না—কাশ্মীরের পথে রাওলপিণ্ডি -- কাশ্মীরের যাত্রীর ভিড় যখন হয় তখন এখানকার সব হোটেল ভৰ্ত্তি হয়ে যায়। দিনের আলো থাকতে আমাদের ব্যবসার . কাজ শেষ ক'রে সন্ধ্যায় ক্যান্টনমেন্ট-পাড়া ছেড়ে শহর দেখতে যাওয়া গেল। দূরের পশ্চিমে শহর বাজারসরাই, মাটির জিনিয, পায়ের জুতো, ফল, মাথার পাগড়ী, মেয়েদের উড়ানী, পুরুষের নাক, মেয়েদের চোপ—যেটুকু দেখা যায় সবই বাংলার কাছের পশ্চিমের থেকে ভিন্ন - এ পশ্চিম যেন একটু আসল । ফুলের মালা কেন হ’ল, পান খাওয়া হ’ল অনেক। টোঙ্গ করে উচুনীচু পাহাড়ী রাস্তা—অলিগলি বেয়ে হোটেলে ফেরা হ’ল । পরদিন সকালে আমরা এটক অয়েল রিফাইনারি দেখতে গেলাম-বিশাল এক খনিজ তেলের কারখানা। দুপুরে ফিরে আবার পেশোয়ার মেলে রওনা হলাম। পঞ্চনদের অনেক নদী, শস্যতামূলী তীরভূমি পার হয়ে পাহাড় জঙ্গল ভেদ ক’রে গাড়ী চললো। নর্থওয়েষ্টাৰ্ণ রেলওয়ে এই অংশটিতে অনেক স্বরঙ্গ, ব্রিজ হত্যাদির কেরামতি দেখিয়েছে ৷ তক্ষশিলা পার হয়ে চললাম মাটির পাহাড়ের দেশ দিয়ে। মাটির ঢিপি পাহাড় আর তার গায়ে গুতা তৈরি করে ঘর করেছে । বিনা পয়সার ঘর, গরমের সময় ঠাণ্ড, শীতকালে বোধ হয় গরম থাকে। তার পর এটক পৌঁছলাম— যেখানে সিন্ধু আর কাবুল নদী মিলেছে। সিন্ধু নদীর গভীর খাদের ওপর প্রকাও ব্রিজ পার হয়ে কাবুল নদীর পাশ দিয়ে গাড়ী চললো। এইখানে নদীর ধারের পাহাড়ের উপর একটি স্বন্দর ছবির মত দুর্গ আছে। বোধ হয় পূৰ্ব্বে কোন হিন্দু রাজার ছিল--পরে হয়ত কোন মুসলমান বাদশাঃ অধিকার করেছিলেন। একটা ছবি নেবার চেষ্টা কর গেল চলন্ত গাড়ী থেকে, সফল হই নি। নওশেরা: গাড়ী থামৃলো—সীমান্ত প্রদেশের ছাউনি-বিলাতী আ দেশী পণ্টনের আডড, রাজপুত, শিখ, ডোগর, জা, গুর্থার ভিড়, পাঠানের অন্ত নাই। গাড়ী ছাউনির প! দিয়ে যায়– কামান, বন্দুক, কুচকাওয়াজের আয়োজন দে: মনে হয় যেন যুদ্ধ লেগেছে ।