পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাত্তিক পশ্চিম-সীমান্তে SSని উঠলো। আমরা পাঠান-এলাকায় পৌছলাম। এখানে আমরা পাহাড়ের ঘোরানো রাস্ত দিয়ে কোহাটে নামূলাম, শান্তিরক্ষার জন্যে একটি ছোট দুর্গ আর কিছু পুলিসপণ্টন আছে। এরা আমাদের খুব সাদর অভ্যর্থনা করলে। ঠাণ্ড জল আর ফল খাওয়া হ’ল । আমরা এদের ফটো নিলাম আর সীমান্তের উপর যে সাইনবোর্ড আছে তার সামনে দাড় করিয়ে আমার বন্ধুদের ফটো তুললাম । এখানকার পণ্টনের এক জমাদার সাহেবের কোহাটে নিজের কাজ ছিল । তাকে আমাদের গাড়ীতে তুলে নিয়ে আমরা সবার কোহাটের দিকে রওনা হ’লাম । জমাদার সাঙ্গেল সঙ্গে থাকতে নিজের একটু নিরাপদও হ’লাম । রাস্তায় বন্দুকওয়ালার ছড়াছড়ি, সকলেষ্ট ঘাড়ে রাইফেল নিয়ে চলেছে বেশ তেলমাখানে বন্দুকগুলি যেমন আম|দের অঞ্চলে বাশের লাঠিতে তেল মাগিয়ে রাখে। কোন কোন বন্দুকের বঁটি চিত্ৰবিচিত্র কর পিতল, তাম, পাথরের মকরে দিয়ে। ভেড়া চরায়, গাপ ষ্টাকায়, কঁপে রাইফেলটি ঠিক আছে । রাস্তায় শুনলাম যে পাঠানী রাষ্টফেলের কারখানা আছে পেপার জিনিস । আশ্চৰ্য্য হ’লাম দেপে—অতি সাধারণ জঙ্গলী উপায়ে ৭ ফেলের মতন একটা কেরামতির জিনিষ তৈরি করছে । ৭৫টি তৈরি বন্দুক দেখলাম বোঝবার উপায় নাই হাতে:মারি ন| বিলাতী কলে তৈরি—দাম চাইলে পচিশ টাকা । শামর বন্দুকের গ্রাহক নষ্ট । তাদের নিজের তৈরি বন্দুক ৮%ছ দেখাতে বললাম। একটা টিনের চাকতি অনেক দূরে রখে একটা টাকা বকশিশ আর গুলির দাম কবুল ক’রে ? ভূতে দেওয়া হ’ল । নিমেষের মধ্যে উড়ে গেল টিনের কতি । আমাদের ঘিরে ফেললে পাঠান বন্দুকওয়ালার রও বকশিশের জন্যে। আরও কিছু টাকা দিয়ে ফটাে তুলে মর সরে পড়লাম কোহাটের দিকে । _: পাঠান-এলাকা পার হয়ে রাস্তায় পাহাড়ের উপর আবার * রজের দুর্গ। এখান থেকে কোহাট দেখা যায়। ফলে ফুলে ভরা শহর । এও এক বড় ছাউনি, এথানকার সব দোকানপাট পণ্টনের রসদ জোগাবার জন্যে। আমর আতিথ্য গ্রহণ করলাম এক সৈয়দ নবাব সাহেবের । র্তার গরমের সময় থাকবার বাড়িটি একটি ঝর্ণার উপর তৈরি । ঘরের নীচে যেখান দিয়ে ঝর্ণার জল যায় তার ওপর দুপুরবেলায় খাট পেতে বিশ্রাম করেন এর । পাটের নীচে দিয়ে ঠাণ্ড জল চলে, বেশ আরামের বন্দোবস্ত । সৈয়দ সাহেবের ছেলের সঙ্গে অনেক গল্প করা গেল। ইনি অবশ্য ইংরেজা ভাষা ব্যবহার করলেন । বিকালবেলায় পরোট। কাবাব চl, সরবতের প্রচুর আয়োজন হ’ল । আহারাস্তে কোহাটের দোকান লাজার দেখে আমরা বিদায় নিলাম । কোহাটের জুতার কারখান| প্রসিদ্ধ। ওই অঞ্চলের চপলি জুত। বেশীর ভাগ কোঙ্গাটে তৈরি । ফেরবার সময় শুনলাম সে আমর। আর পাঠান-এলাকা পার হতে পারব না, ইংরেজ-সরকারের নিষেধ আছে । বিশেষ ক'রে ইউরোপীয়দের সন্ধ্যার সময় পার হতে দেওয়া হয় না। আমাদের দেরি হয়ে গিয়েছিল, পেশোয়ারী বন্ধু পরামর্শ দিলেন টুপি আর টাঙ্গ খুলে রাখতে, যাতে সন্ধ্যার অন্ধকারে আমাদের “সাহেল লোগ,” ল’লে মনে না করে । এষ্ট করে আমরা ফাটকের সিপাইয়ের কাছ থেকে ছাড়া পেলাম। পাহাড়-কাটা আঁকাবাক৷ রাস্ত দিয়ে নেমে আবার পাঠান-এলাকায় পড়লাম । আমাদের বন্ধু এক মাটির কেল্লা দেখালেন দূর থেকে । এক দুদাস্ত সদারের আডড ছিল এইটি—তিনি এখন পলাতক । রাস্তার আশপাশে বন্দুকওয়ালার গুলতান করছে দেখলাম মোটেই বিধার লাগছিল না। শুনলাম এর থামতে বললে মোটর-ছোটনে ভুল, এর চাকায় গুলি মেরে যাহোক, এ মাত্র আমাদের উপর নিরাপদে আবার পেশোয়ার ৫টার পপ ফুটো ক’রে গাড়ী থামায় । অনুগ্রহ হয় নি –আমর। ফিরলাম।