পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SNご8 কোন চূড়ান্ত অধিকার পাইবেন না। তাহাদিগকে শুধু যে গবর্ণরের কৃপার ভিখারী থাকিতে হইবে, তাহা নহে, সিভিলিয়ান সেক্রেটরীদের, সিভিলিয়ানদের এবং পুলিসের ইন্সপেক্টর-জেনার্যালের মুখাপেক্ষী থাকিতে হইবে । অন্য দিকে, আইনটার খবর র্যাহার রাখেন র্তাহারা জানেন, এই আইনে গবর্ণর-জেনার্যাল ও গবর্ণরদিগকে এমন সব ক্ষমতা দিয়াছে, যাহা এপর্য্যস্ত র্তাহাদের ছিল না, এবং যাহা ব্রিটিশ সম্রাটের, কোন সভ্য স্বাধীন পাশ্চাত্য দেশের রাজার, জাপানের সম্রাটের, আমেরিকার ইউনাইটেড, ষ্টেটসের প্রেসিডেন্টের, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের, প্রভৃতির নাই। তাহ পরে বলিতেছি । গবন্মেন্টের কাজ, রাষ্ট্রীয় কাজ, টাকা নইলে চলে না। স্বতরাং কোন দেশ স্বশাসন-অধিকার পাইয়াছে বলিলে আর্থিক বিষয়ে ইহাই বুঝায়, যে, ঐ দেশ নিজের রাজস্ব কি প্রকারে ব্যয়িত হইবে তাহা নিজেই স্থির করিবে। কিন্তু নূতন আইনে সে অবস্থা ঘটায় নাই। যদি বলেন, স্বশাসন-অধিকার আগে যতটুকু ছিল, এখন তাহ অপেক্ষা বিস্তৃত হইল, তাহা হইলে দেখাইতে হইবে, যে, আগে রাজস্বের শতকরা যত অংশের ব্যয় সম্বন্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা দেশ-প্রতিনিধিরা করিতে পারিতেন, এখন তাহা অপেক্ষ বেশী অংশের ব্যবস্থা করিতে পরিবেন। নূতন আইনের ফলে তাহাও ঘটবে না। সামরিক পররাষ্ট্রকাদি যে-যে বিভাগের ব্যয়, এবং উচ্চ কৰ্ম্মচারীদের বেতন, পেন্সান, স্বদ প্রভৃতি নামঞ্জুর বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা ব্যবস্থাপক সভার থাকিবে না, তাহাতেই এখন রাজস্বের শতকরা ৮০ টাকা খরচ হয়। বাকী শতকরা কুড়ি টাকার ব্যয়েও ব্যবস্থাপক সভা চুড়ান্ত ভাবে হ্রাস বা নামঞ্জুর করিতে পারিবে না ; কারণ গবর্ণর-জেনার্যাল তাহার বিশেষ শক্তি ( "special power ) অনুসারে ব্যবস্থাপক সভার দ্বারা নামঞ্জুর-করা বা কমান বরাদ্দ বজেটে আবার বসাইয়া দিতে পারিবেন । স্বতরাং আর্থিক সব ব্যাপারে গবর্ণর-জেনার্যাল দেশের লোকদিগকে ও দেশপ্রতিনিধিদিগকে গম্ভীরভাবে বলিতে পরিবেন, “ঘরকল্প, সৰ্ব্বস্ব, তোমাদের ; কেবল সিন্দুকের চাবিটি আমার ” কোন দেশে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বলিলে বুঝায়, সেখানকার লোকেরা দেশরক্ষার অধিকার পাইয়াছে ; প্রবাসী SNー8ミ উহা বিস্তৃততর হইয়াছে বলিলে বুঝায়, আগে দেশরক্ষাবিষয়ে তাহারা যাহা করিতে পাইত, এখন তাহা অপেক্ষা আরও কিছু করিতে পাইবে। এই দুইটির মধ্যে কোনটিই ঘটে নাই, ঘটিবে না, বরং অন্য দিকে, এখন তৰু সামরিক-বিভাগের ভারতীয়তাপাদনের ( “Indianization"এর ) কথা শোনা যায়, কিন্তু নূতন আইনে সেরূপ কোন কথার লেশমাত্রও নাই । নূতন আইন অনুসারে গবর্ণর-জেনার্যাল ও গবর্ণরের অর্ডিন্যান্স জারি করিতে ত পরিবেনই, একা একা এরূপ সব আইন করিতে পারিবেন, যেগুলা ব্যবস্থাপক সভাসমূহের সাহায্যে ও মারফতে শ্রণীত আইনসমূহের সমান বলবৎ ওস্থায়ী হইবে। তা ছাড়া, গবর্ণর-জেনার্যাল বা কোন গবর্ণর ব্যবস্থাপক সভা ও মন্ত্রীটন্ত্রী সকলের হাত হইতে সব ক্ষমতা নিজের হাতে লইয়া সকল বিভাগের কাজ বা কোন কোন বিভাগের কাজ যেরূপ খুশী চালাইতে পারিবেন। তাহার মতে কোন সময়ে এরূপ করা দরকার মনে হইলেই তিনি তাহা করিতে পারিবেন। অবশ্য গবর্ণর-জেনার্যাল ও গবর্ণরের ব্রিটিশ জাতীয়ই হইবেন—কচিৎ কোন ভারতীয় গবর্ণর হইলেও তিনি ব্রিটিশ জাতির সম্পূর্ণ অনুগ্রহজীবীই হইবেন। এবম্বিধ শাসনকে স্বশাসন বলা অসঙ্গত। প্রত্যেক স্বশাসক দেশ অন্যান্য স্বশাসক দেশের সহিত বাণিজ্যাদি বিষয়ে এবং পরস্পরের অধিবাসীরা কিরূপ সৰ্ত্তে পরস্পরের দেশে যাতায়াত-বসবাসাদি করিতে পরিবে বা পারিবে না তদ্বিযয়ে সন্ধি চুক্তি প্রভৃতি করিয়া থাকে। কিন্তু ভারতবর্ষের লোকদের, তাহদের প্রতিনিধিসমষ্টি ব্যবস্থাপক সভাসমূহের, এই প্রকার পররাষ্ট্রসম্বন্ধীয় কোন কাজ করিবার ক্ষমতা থাকিবে না। এই বিভাগ গবর্ণর-জেনার্যালের সম্পূর্ণ অধীন থাকিবে। এরূপ বন্দোবস্তকেও ত স্বশাসন বলা যায় না । প্রত্যেক স্বাধীন বা স্বশাসক দেশ সময়বিশেষে ও অবস্থাবিশেষে নিজ বাণিজ্য, বাণিজ্যজাহাজ এবং পণ্যশিল্পের কারখানা আদি রক্ষার জন্য, কিংবা তৎসমুদয় গড়িয়া তুলিবার জন্য কিংবা তৎসমুয়ের ঐদ্ধির জন্ত নিজের দেশের লোকদিগকে এমন সৰ সুবিধা দিয়াছে বা দিয়া থাকে যাহা বিদেশীদিগকে দেওয়া হয় না। এই উদ্দেশ্যে বিদেশ হইতে আমদানী জিনিষের উপর উচ্চহারে শুষ্ক বসান হয়। ব্রিটিশ