পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্মস্বত্ব শ্রীসীতা দেবী ( × ) মমতা স্কুলের চাদার ঝুলিতে দশ টাকার নোটখানা ফেলিয়া আসিল বটে, কিন্তু তাহার মন খুৎ ধুৎ করিতে লাগিল। তাহার আরও ঢের বেশী দেওয়া উচিত ছিল । একে ত সে অন্তদের চেয়ে ধনী পিতার কন্যা, তাহার উপর তাহাদের ধন যাহাদের পরিশ্রমের ফলে অর্জিত, সেই মানুষগুলিই আজ বন্যাপীড়িত। মায়ের হাতে ত টাকা থাকে ঢের, কিন্তু তিনি যে যথেচ্ছ খরচ করিতে পারেন না, তাহা মমত জানে। বাবাকে সে ভালবালে, সস্তানের যেমন ভালবাস! উচিত, কিন্তু এখন মমতার জ্ঞানবুদ্ধির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্নরেশ্বরের দোষক্ৰটিগুলিও তাহার চোখে পড়িতে আরম্ভ হইয়াছে। তিনি যেন বড় বেশী স্বার্থপর, বড় বেশী জেদী। মমতার এক-একবার ইচ্ছা করে, বাবার সঙ্গে খোলাখুলি এই বিষয়ে আলোচনা করে, কিন্তু আবার সঙ্কোচ বোপ হয়, একটু ভয়ও করে। পিতার সঙ্গে এভাবে কথা বলিতে কোনদিনই তাহারা অভ্যস্ত নয়। তিনি যদি খুব বেশী বিরক্ত হইয় ওঠেন ? ম। শুধু তাহার মা নহেন, সঙ্গিনীও বটেন । মমতার যত গোপন মনের কথা, সব হয় মায়ের সঙ্গে। আর একটি বোন থাকিলে যে জায়গা নিতে পারিত, বোনের অভাবে মা হইয়াও যামিনীকে সেই স্থান অধিকার করিতে হইয়াছে। কলেজ হইতে ফিরিয়া আসিয়া, মায়ের ঘরে গিয়া মমতা দেখিল তিনি কাহাকে যেন চিঠি লিখিতেছেন। জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কি এখন খুব বেশী ব্যস্ত আছ মা ?” যামিনী চিঠির কাগজের প্যান্ডটা সরাইয়। রাখিয়া বলিলেন, “না মা, এই ত হয়ে গেল।” মমতা খাটে বসিয়া পড়িয়া বলিল, “আমি দশ টাকা দিয়ে এলাম মা, কিন্তু আমার একটুও ভাল লাগছে না। কালকের সেষ্ট মিটিঙে আমরা যাব ত ম৷ ” ঘামিনী বলিলেন, “সেই জন্তেই ত তোর মামীমার কাছে চিঠি লিখছি, দেখি সে কিছু ব্যবস্থা করতে পারে কি না ।” মমতা উংস্থক হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তিনি ৫ি পারবেন মা ব্যবস্থা করতে ?” যামিনী হাসিয়া বলিলেন, “থেষ্ট যাক না, পারতে" পারে।” মমতা পুরাপুরি আশ্বস্ত না হইলেও, খানিকট নিশ্চিন্থ হইয়া কাপড়চোপড় বদলাইতে চলিয়া গেল। আকাশ জুড়িয়া ঘন কাল মেঘের রাশি ফুলিয়া ফুলিয়া অগ্রসর হইয়া আসিতেছে । বাগানে বেড়ান আজ আর হইবে ন৷ হঠাৎ হয়ত ঝমৃঝম্ করিয়া বৃষ্টি নামিয়া আসিবে, আর ভিজিয় মরিতে হইবে। তাহার চেয়ে ছাদেই বেড়ান যাক্ । নিজের চুলবাধাটা এখনও মমতার ভাল করিয়া আসে না। ঘামিনীর মেয়েরই উপযুক্ত চুল হইয়াছে তাহার যেমন গোছে, তেমনই লম্বায় । এত একরাশ চুল নিজে সে ভাল করিয়া গুছাইয়া বাধিতে পারে না। কোনদিন ম বাধিয়া দেন, কোনদিন বিন্দুপিসীম, অভাব পক্ষে নিত্যঝি আজ আর তাহার কাহারও কাছে আবেদন করিতে ইচ্ছ হইল না। কোনোমতে একটা বিমুনী ঝুলাইয়া সে ঘর হইতে বাহির হইয়া পড়িল। ছাদে একলা ঘুরিতে ভাগ লাগে না, কিন্তু আর কোথায়ই বা সে যায় ? আজ ক্লাসে ছায়া বলিতেছিল, তাহাঁদের পাড়ার ছেলের অনেকেই স্বেচ্ছাসেবক হইয়া বদ্যাপীড়িতের সাহায্যাৰ্থ যাইতেছে। অমরেন্দ্রও যাইবে হয়ত। তাহাকে এক দিনের পরিচয়ে মমতা যতখানি চেনে, তাহাতে মনে হয় এ সব কাজে সেই সবার আগে অগ্রসর হইয়া যাইবে , মমতা কেন যে নারী হইয়া জন্মগ্রহণ করিল তাহার ঠিকানা নাই। যদি পুরুষ হইত, তাহা হইলে সেও ত ধাইতে পারিত। স্বজিতট ত একেবারে অপদার্থ, কোনরকম ভাল কাজে তাহার বিন্দুমাত্র উৎসাহ নাই। খালি বাবুগিরি করিতে আহ