পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S"*3 $NలిgS్చ যামিনী মৃদু হাসিয়া বলিলেন, “দেখলাম ত " মমতা বলিল, “তুমি রাগ কর নি ত মা ?" যামিনী বলিলেন, “আমি রাগ করিনি মা, খুশীই হয়েছি, তবে তোমার বাবা জানলে হয়ত বিরক্ত হবেন।” মমতা ক্ষুব্ধভাবে চুপ করিয়া রহিল। বাবার কথা তখন তাহার একেবারেই মনে ছিল না। ভাল কাজেও বিরক্ত হওয়া তাহার এক স্বভাব। কি আর করা যাইবে ? অদৃষ্টে বকুনি থাকে বকুনি পাইতে হইবে। বকুনি খাইলে সে কিছু মরিয়া যাইবে না, বরং দান করার জন্য কিছু দুঃখ যে তাহাকে স্বীকার করিতে হইয়াছে, ইহাতে দানটা সার্থকই হইবে । কিন্তু বাবা যদি ইহার জন্য মায়ের উপর জুলুম করেন, তাহা হইলে মমতার পক্ষে তাহ অত্যন্তই দুঃখের বিষয় হইবে । বাবার যা স্বভাব, তাহাই ঘটিয়া বসা আশ্চৰ্য্য নয়। মেয়ের চিস্তাফুল মুখের দিকে চাহিয়া যামিনী বলিলেন, “থাক, অত করে ভেবে আর কি হবে ? তুমি ত অন্যায় কাজ কিছু কর নি ? যাতে ওটা তোমার বাবার চোখে না পড়ে তারই চেষ্টা করতে হবে আর কি।” মমতার মুখের অন্ধকার খানিকট কাটিয়া গেল। সে জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কি দিলে মা ?” যামিনী বলিলেন, “পাচ-শ টাকা দিয়েছি।” লুসি এবং প্রভা অনেক চেনা মানুষ খুজিয়া পাইয় গল্প জুড়িয়া দিয়াছিল, যামিনী মমতাকে একটু ঠেলিয়া দিয়া বলিলেন, “দেখ, ত তোর মামীমাকে এদিকে আনতে পারিস কিনা। বাড়ি ফিরতে বেশী রাত হ’লে উনি আবার বকবিকি করবেন ।” লুসির সাহায্যে মমতা গিয়া প্রভাকে ডাকিয় আনিল । প্রভা কাছে আসিয়াই বলিল, “মা মেয়ে মিলে খুব কাওই করলে যাহোক।” যামিনী বলিলেন, “তোমার চোখে কিছুই এড়ায় না দেখি । এখন চল ত, রাত হয়ে আসছে।” প্রভা গাড়ীতে উঠিতে উঠিতে বলিল, “ষাকৃ, আমি যে বিশেষ কিছু দিতে পারি নি, তার জন্তে কোন দুঃখ রইল না। বোনের দেওয়াও যা, ভাইয়ের দেওয়াও তাই ।” তাহার দানের গৌরবটা প্রভাকে বেদখল করিতে দিতে যামিনীর কিছু আপত্তি ছিল না, কিন্তু প্রভা পাছে সকলের কাছে বলিয়া বেড়ায় সেই এক ভয়। অগত্যা তাহাকে বলিতে হইল, “সে ত ঠিকই, এক জন দিলেই হ'ল, যে হোকৃ। তুমি কিন্তু ভাই এ-কথাটা কাউকে যদি না বল ত ভাল হয়। জান ত ওঁকে, অল্পেই এখন ওঁর মেজাজ যায় বিগড়ে, আর তাহলেই শরীরও তখনই খারাপ হতে আরম্ভ করে ।” * প্রভা বলিল, “ওম, তুমি আমাকে কচি খুকী পেয়েচ নাকি ? লোককে বলতে যাব কেন ? আমার পেট থেকে কথা বার করা আমনি সহজ ব্যাপার নয়।” প্রভা এবং লুসিকে নামাইয় দিয়, যামিনী বাড়ি ফিরিশ চলিলেন। মমতা সারাট পথ আর কোন কথাই বলিল না। হার-দেওয়ার ব্যাপারটা তাহাকে বড় বেশী বিচলিত করিয়াছিল । থাকিয়া থাকিয়া কেবলই তাহার মানস চক্ষের সম্মুখে ভাসিয়া উঠিতে লাগিল অমরেন্দ্রের চোখের গভীর দৃষ্টি, আর হৃৎপিণ্ডের গতি তাহার যেন দ্রুততর হইয় উঠিতে লাগিল । বাড়ি পৌছিয়া দেখা গেল, নীচের ঘরে মহোৎসাহে স্বরেশ্বর আডডা জমাইতেছেন। এ-রকম বাড়াবাড়ি করিলে শরীর খারাপ হইতে বিন্দুমাত্রও বিলম্ব হইবে না। কিন্তু যামিনীর হাত নাই কিছু ইহাতে। এক রকম তাহার উপর শোধতোলার উদ্দেশ্বেই যখন আডডাটি আহবান করা হইয়াছে, তখন র্তাহার অনুরোধে স্বরেশ্বরকে কিছুতেই নিবৃত্ত করা: যাইবে না। তবে তাহারা ফিরিবামাত্রই যে ছুটিয়া আসিয়: সুরেশ্বর হৈ চৈ বাধাইয়া দিলেন না, ইহাতে যামিনী খানিকট আশ্বস্তও হইলেন । উপরে উঠিয়া গিয়া তিনি তাড়াতাড়ি লোহার সিন্দুক খুলিয়া বাছিয়া বাছিয়া আর এক ছড়া হার বাহির করিলেন। এটিও অনেকটাই মমতার আগের সেই হারটিরই মত। মেয়ের গলায় সেটা পরাইয়া দিয়া বলিলেন, “প্রায় এক রকমই দেখতে יין স্বরেশ্বরের ইচ্ছা ছিল সেদিন বেশ ভাল করিয়া রাত করেন, এবং খাওয়াদাওয়ার অনিয়মও খানিকটা করেন । কিন্তু হঠাৎ মাথাটা ধরিয়া ওঠাতে বিশেষ স্ববিধা করিতে পারিলেন না। বন্ধুদের বিদায় করিয়া দিয়া উপরে গুইতে চলিয়া গেলেন । . .