পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- - - - - ناهية “ঠাকুরের লীলাখেল নয়, এ বড়বৌরাণীর ভেন্ধিবাজি! হাড় ছোটলোকের ওৎ পেতে সব বসেছিল, কাকপক্ষী ওঠবার আগে ঠাকুরটি চুরি করেছে। ঠাকুর যদি আমি না বার করাষ্ট ত আমার নাম নেই।” চন্দ্রজ্যোতি রূপার বাসনে সাজানো পূজার আয়োজন সব ধূলায় ফেলিয়া আবার ধরে ফিরিয়া চলিল। ঘেরাটােপ দেওয়া প্রকাণ্ড চতুদোলা লইয়া বেহারার হন হন করিয়া ছুটিল। সদ্যজাগ্রত গ্রামবাসীরা ভৗত বিস্মিত দৃষ্টিতে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করিতে লাগিল । পুরোহিত মাথায় হাত দিয়া সেইখানেই বসিয়া রহিল । সুরেশ্বরী সবে ঘর হঠতে বাহির হইয়াছেন, ইন্দ্রনারায়ণ তখনও শয্যার আলপ্ত কাটাইয়া উঠিতে পারেন নাই। চন্দ্ৰজ্যোতি আসিয়া ধরের দরজা আগলাইয়া দাড়াইল । তাহার মাথার ধোমটা পৰ্য্যপ্ত খসিয় পড়িয়াছে। স্বরেশ্বরী তাহার মুখের উপর তীক্ষ দৃষ্টি ফেলিয়ু বলিলেন, “ও কি, ছোট বেী ! ধরে ভাস্কর রয়েছেন, তুমি দোর আগলে এসে দাড়ালে ধে ।” চন্দ্ৰজ্যোতি রণরঙ্গিণীর মত ক্ষেপিয়া উঠিয়া বলিল, "শ্বশুর-ভাস্কর কিছু আমি শুনতে চাই না, তুমি আমার ঠাকুর বার কর আগে ।” মুরেশ্বরীও ঝাঝিয়া উঠিয়া বলিল, “কিসের ঠাকুর, কার ঠাকুর তার ঠিক নেই, সকালবেলা উঠে তুমি আমাকে চোর ধরতে এলে যে, আক্কেলের মাথা কি একেবারে খেয়ে হজম করেছ ?” চন্দ্রজ্যোতি বলিল, “আক্কেলের মাথা কে থেয়েছে, তা তুমি জান আর তোমার ইষ্টদেবতা জানে! ঠাকুর চুরি করে মিথ্যে কথা বল্‌ছ, তোমার প্রাণে কি ভয়ডর কিছু নেই?" স্বরেশ্বরী আর এক পা অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “ভয়৬র কি দেখাচ্ছে ছোটবোঁ ? তুমি বড়মানুষের সুন্দরী মেয়ে বলে কি ঠাকুরও তোমার হাতে ধরা ? তুমি শাপমন্তি দিতে চাও দাও, আমরাও দিতে জানি।” ঘরের ভিতর হইতে ইন্দ্রনারায়ণ গর্জন করিয়া উঠিল, “শঙ্কর, তোমার স্ত্রীকে এখানে মেছে হাট বসাতে বারণ কর ; এখানে বিলাসপুরের চালচলন না দেখিয়ে হরিহরপুরের প্রবাসী SNరీశ్రీశ్ని মানসস্ত্ৰম বজায় রেখে চলতে হবে, সেটা যেন মনে থাকে।" চন্দ্ৰজ্যোতি ভাস্করের মুখের উপর উত্তর দিল না। কিন্তু ঘরে আসিয়া আছাড় খাইয় পড়িল, “কি ! আমার ঠাকুর চুরি করে আমাকেই বাপ-পিতামহ তুলে গাল দেওয়া ? এ বাড়িতে আর আমি এক মুহূৰ্ত্ত থাকৃব না। নিয়ে এস আমার পান্ধী, আমি এই এক কাপড়ে চললাম এথান থেকে ৷” অপমানপীড়িত চন্দ্রজ্যোতি সত্যসত্যই পান্ধী ডাফহিয়৷ পাঠাইল । সমস্ত বাড়ি যেন হঠাৎ শ্মশানপুরীর মত নিস্তব্ধ হইয়া গেল। হরিহরপুরের ছোটবৌরাণী কাহাকেও না বলিয়ু ঘর ছাড়িয়া চলিয়া যাইবেন, ইহাতে না বলে এমনও কাহারও সাহস নাই, ঠা' বলে এমনও কেহ নাই। পান্ধী-বেহারার: কাহার অনুমতিতে যাইবে ? ফিরিয়া আসিলে দপনারায়ণ কি তাহাদের ঘাড়ে মাথ রাথিবেন ? তাহারা ধর হইতে বাহির হইতে চায় না। বৌরাণীর জন্য তাহারা প্রাণ দিতে পারে, কিন্তু ঐ কাজটি পরিবে না। ইন্দ্রনারায়ণ পৰ্য্যন্ত ভীত হইয় পড়িলেন, কি জানি যদিই স্ত্রী না বলিয়া ঠাকুর সরাইয়া থাকে, শেষে পিতার কাছে সব জানাজানি হৰ্চলে তাহার অপমানের শেষ থাকিবে না । শঙ্কর, চন্দ্ৰজ্যোতি, স্বরেশ্বরী, সকলেই যখন আপন আপন থোট ধরিয়া নীরবে বসিয়া আছেন, তখন ইন্দ্রনারায়ণ বলিলেন, “বেীমাকে বল, আমি ঠাকুরের খোজ করাচ্ছি। এসব কথা যেন বাবার কানে না ওঠে।” চন্দ্রজ্যোতি কথার উত্তর দিল না, ইন্দ্রনারায়ণ দিকে দিকে পাইক বরকন্দাজ ছুটাইলেন, ঠাকুর উদ্ধার করিয়া আনিতে। কিন্তু কোথাও ঠাকুর মিলিল না। দিনের বেলায় চন্দ্রজ্যোতি কাহারও কথার কোনও উত্তর দিল না, কেহ তাহাকে আর ঘাটাইতেও সাহস করিল না ! সন্ধ্যায় সে আপনার দাসীকে বলিল, “তুই আমার সঙ্গে হেঁটে ষ্টেশনে যেতে পারবি ত চল, আমি একাই বাপের বাড়ি চলে যাব।” দাসী একহাত জিভ কাটিয়া বলিল, “বল কি বৌরাণী ! তুমি রাজবাড়ির ছোট-বে, পথে পা দেবে ? ইষ্টেশনে ট্রেন থেকে মাটিতে পা দাও না, চতুর্গোলী উচু ক'রে ধরলে তবে