পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سويt কিন্তু চক্ষের সম্মুখে এই সকল দৃষ্টান্ত দেখিয়াও আমাদের চৈতন্ত হয় না। অলসতা ও শ্রমবিমুখতার জন্য আমরা কুলী-মজুর, মাঝিমাল্ল, গাড়োয়ান ও গোয়ালার সকল শ্রমসাধ্য কাজই একে একে ভিন্ন প্রদেশীয়দের হস্তে তুলিয়া দিয় নিদারুণ অল্পসমস্তার সম্মুখীন হইয়াছি। সেন্সস রিপোর্টে দেখা যায় যে বড় বড় ব্যবসায়ী ও বণিকদের কথা বাদ দিয়া কেবল মাত্র শ্রমজীবিগণই বৎসরে প্রায় সাত-আট কোটি টাকা প্রবাসী SNごgミ বাংলা দেশ হইতে রোজগার করিয়া দেশে পাঠায়, অতএ অর্থনীতির দিক হইতে দেখিলে আমাদের যে কি সৰ্ব্বনা হইতেছে তাহা বুঝা যাইবে। দেখিয়া শিখিবার মত স্বমী আমাদের হয় নাই, ঠেকিয়া শিখিবার সময়ও উত্তীর্ণপ্রায় এখনও সজাগ না হইলে আমাদের ভাগ্যে আরও অনে লাঞ্ছনা ও দুঃখ অনিবাৰ্য্য, এমন কি কালক্রমে এ জাতি ধরাপৃষ্ঠ হইতে লুপ্ত হইবারও সম্ভাবন । অহেতুক ঐসরোজকুমার রায়চৌধুরী পূজার পরে তপোনাথ বায়ুপরিবর্তনের জন্য হাজারিবাগ রোড আসিল –তিনটি প্রাণী ; সে, তাহার স্ত্রী ও মা। ষ্টেশনের অনতিদূরে একখানি চমৎকার বাড়ি পাওয়া গিয়াছে। গাঢ় নীল রঙের বাড়ি, ফিক নীল আকাশের পটভূমিকায় সজল মেঘের মত দাড়াইয়। পিছনে দূরে দূরে নীল গিরিশ্রেণী আকাশের গায়ে মিশিয়াও মিশিয়া যায় নাই। পাশেই শালের জঙ্গল ক্রমে উচু হইয় পাহাড়ের কোলে গিয়৷ মিলিয়াছে । বাড়িটায় অল্পদিন পূৰ্ব্বে কেহ বোধ হয় ছিল । বারান্দার দেওয়ালের এক কোণে পেন্সিলে অনেক হিজিবিজি কাটা আছে। এক জায়গায় কাঠ-কয়লা দিয়া কে একটা ছবিও আঁকিয়াছে। ছবিটা হয় গাধার, নয় ঘোড়ার ;–-গরুরও হইতে পারে। তারই নীচে বাক বাক অক্ষরে লেখা আছে র মা দি দি র বর। লেখা এবং ছবি দুইটিরই উপর হাত দিয়া মুছিয়া দিবার ব্যর্থ প্রয়াসের পরিচয় পাওয়া যায়। এমন কি, নূতন করিয়া চুণকাম করার পরেও সে চিহ্ন যায় নাই। এখানে-ওখানে বহু জায়গায় আরও যে কত লোকের, পুরুষ ও নারীর, নাম খড়িতে, কাঠ-কয়লায় এবং পেন্সিলে লেখা আছে তাহার আর ইয়ত্তা নাই। সেই সব অপরিচিত নাম বার-বার পড়িতে পড়িতে মন একটি রমণীয় মোহে হালকা হইয় ওঠে। অকারণেই তাহা সঙ্গে পরিচয়স্থাপনের লোভ হয়। পিছনে বাড়ির সংলগ্ন ঘেরা জায়গায় যে কয়টা বড় শাল ও আমলকীর গাছ আছে সেগুলা হয়ত অযত্নবর্দি কিন্তু কতকগুলি ফুলগাছও একদা লাগানো হইয়াীি এখনও তাহার চিহ্ন আছে । সেদিক হইতে এক ঘুরিয়া আসিয়া তপোনাথের খেয়াল হইল, যে-কয়ট এখানে আছে বাগানটাকে ভাল করিতে হইবে। চারিা কাট-তারের বেড়া ঠিকই আছে। কোথাও দুই-এ খুটি হয়ত নড়বড় করিতেছে। সে কিছুই নয়। সবিতা সঙ্গে থাকিলে এই উপলক্ষ্যে কয়টা দিন বেশ আনন্দেই ক যাইবে । সে সবিতাকে লইয়া টানাটানি করিতে লাগি কিন্তু সবিতা তখনও ম্যাটিকুলেশন পরীক্ষা দিবার কাটাইয়া উঠিতে পারে নাই। সে দেওয়ালে ঠেস হাটুর ফাকে একখানা ইংরেজী বই রাথিয়া মনোযোগের } অধ্যয়ন করিতেছিল। বিত্রত ভাবে বলিল, বা রে বাঃ ! আমি পড়ছি যে এক ফুয়ে তাহার কথা উড়াইয়া দিয়া তপোনাথ বলি ও ! ভারী পড়া! আমার এম-এর পড়া বন্ধ র আর যত চাড় তোমার। ওঠ ।