পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و این اه প্রবাসী ১৩৪২ বললে, “তোমরা বুঝি এই প্রথম স্বইটজারল্যাণ্ডে এসেছ ? আমি বললুম, “আমার স্বামী এর আগে ঘুরে গেছেন একবার, আমার এই প্রথমবার আসা। ছেলেটি বললে, “তাই তোমাদের এত ভাল লাগছে, কিন্তু তোমাদের দেশের কাশ্মীরের মত কি মুন্দর ? আমরা কাশ্মীর বেড়িয়ে এসেছি, আমাদের ত কাশ্মীর আরও ভাল লেগেছিল। এবার ঠকে গিয়ে অপ্রস্তুত হয়ে বললুম, ন, কাশ্মীর দেখা এখনও হয় নি । ভাবলুম একটি বিদেশী লোক এসে আমাদের ভূস্বর্গ কাশ্মীর দেখে গেল, আর আমরা এখনও দেখি নি। মনকে বোঝালুম একবারে ত সব সম্ভব হয় না নিজের দেশের ত অনেক দেখেছি, কাশ্মীরও এক সময় ঠিক দেখা হবে। ট্রেন লটার ব্রুনেনে এসে থামলে । আমরা সেই মা ও ছেলের কাছে বিদায় নিয়ে নেমে পড়লুম। এখান থেকে মোটরে ট মুল ব্যাক প্রপাতের একটি দৃপ্ত করে কিছুদূর গিয়ে ইটিতে স্বরু করে শেষে টমুল ব্যাক ফলস্ ঝরণার কাছে এসে পৌছলুম। এই ঝরণাটি অতি সুন্দর, পাচটি ধাপে পাচ রকম দৃশ্য। দেখবার সব রকম সুবিধা আছে। ধাপে ধাপে ইলেটিক ট্রেন, বারান্দা, ওভারব্রিজ সব আছে। যত খুশী দেখ। ঝরণাটি দেখে আমরা মোটরে করে সাইডেক এসে পৌছলুম। এখানে একটি হোটেল আছে। হোটেলটির নাম ‘সাইডেক হোটেল। একটি টেবিল ঠিক ক'রে বসে পড়া গেল। এবার থেতে হবে একটু । ভাল দৃশ্য দেখবার জন্য বারান্দার নীচে টেবিল নিয়ে বসেছি, টেবিলের পাশেই মটিতে জমীর ওপর খানিকট বরফ জমে রয়েছে। আমি একটু ভেঙে দেখতে লাগলুম যেন ময়রার দোকানের ঘিয়োড়ের টুকর। সামনেই বরফের পাহাড়, রোদের আলে| প’ড়ে ঝলমল করছে, এর চুড়ার নামই সাইডেক । এখান থেকে রোন গ্লেসিয়ার দেখতে যাবার জন্য ট্রেনের বন্দোবস্ত আছে । ট্রেনের গার্ড গাড়ী ছাড়বার আগে ‘বাস-কণ্ডাকটারের মত হঁকতে লাগল, “রোন গ্লেসিয়ার, রোন গ্লেসিয়ারস,” তার পর ট্রেন ছেড়ে দিলে। হোটেলে বসে বসেই দেখছি ট্রেনখানি সাদা বরফের ওপর উঠতে উঠতে শেষে একটি সুড়ঙ্গের ভেতর মিলিয়ে গেল । আমাদের এই গ্লেসিয়ারস দেখা হয় নি। খাওয়া হ’লে আমরা এখান থেকে একটি ফিটন গাড়ী ভাড়া করলুম। ঘোড়াটি খুব উচু ও কাল রঙের, বেশ তেজের সঙ্গে ঘাড় বেকিয়ে ছুটতে লাগল। গাড়ীর কোচম্যান ফরাসী, মইস ও ইংরেজী ভাষা জানে। তার সঙ্গে চুক্তি করা হ’ল সে আমাদের দেড় ঘণ্টার মধ্যে গ্ৰিণ্ডেলওয়ন্ড মেসিয়ারস দেখিয়ে আবার সাঙ্গণ্ডেক হোটেলে পৌছে দেবে, আমরা তার পর আবার ইণ্টারলার্থেনের ট্রেন ধরতে পারব। আমাদের গাড়ী গ্রিণ্ডেলওয়াল্ড গ্লেসিয়ারসের কাছে থামলে, আমরা হেঁটে চলতে সরু করলুম। পথের দু-পাশে ঘাসের ওপর নানা রঙের ফুল ফুটে যেন রঙীন গালচের মত দেখাচ্ছিল । গাড়োয়ান আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলল। রাস্তার দু-পাশেই ঝরণা বয়ে যাচ্ছে, সুন্দর দেখতে। আমরা গ্রিণ্ডেলওয়াল্ড গ্লেসিয়ারসের কাছে এসে দাড়ালুম। মেসিয়ারসটিকে দেখে মনে হ’ল দুটি পাহাড়ের মাঝখানের উপত্যকার ওপর বরফ পড়ে পড়ে উপত্যকাটি বরফে বোঝাষ্ট হয়ে পাহাড় দুটির উচ্চতায় সমান হয়ে গেছে ।