পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ ঈশানচন্দ্র ঘোষ সাহেব উপাধি দেওয়াটা বিদ্রুপের মত হইয়াছিল । কিন্তু তিনি এই লাঞ্ছনা গায়ে মাখেন নাই, উচ্চতর উপাধিলাভের কোন চেষ্টাও করেন নাই । তিনি অনেক বিদ্যালয়পাঠ্য পুস্তক লিখিয়াছিলেন। তাঙ্গতে নূতনত্ব ছিল। কিন্তু সাহিত্যক্ষেত্রে তাহার প্রধান কীৰ্বি বৌদ্ধ জাতক-সমুহের বঙ্গানুবাদ । এই অনুবাদ কবিবার জন্য তিনি পরিণত বয়সে পালি শিক্ষা করেন, এক ইংরেজীতে যে অনুবাদ কয়েক জন বিদ্বান ব্যক্তি মিলিত হইয়া করিয়াছেন, বাংলায় তাহা তিনি একা ষোল *:'র পরিশ্রম করিয়া সমাপ্ত করেন । ইহা প্রকাশ করিতে উ: ৭ নূ্যনাধিক ১২০০০ টাকা খরচ হইয়াছিল। বিক্রয় হইতে 'স যে তিনি ফিরিয়া পান নাই, তাহা বলাই বাহুল্য। * , জাতক গ্রন্থ গল্পের মত মনোরম অথচ উপদেশপুর্ণ ং ও এবং ইহাতে বৌদ্ধ যুগের সামাজিক ইতিহাসের + উপকরণ থাকিলেও, বাঙালী পাঠকেরা ইহার সমুচিত * এর করেন নাই । で

  • &

বিৰিখ প্রসঙ্গ—ঈশানচন্দ্র ঘোষ శివs সংস্কৃত তিনি ভাল জানিতেন। ইতিহাস অধ্যয়নে র্তাহার বিশেষ অনুরাগ ছিল। মৃত্যুকালে তাহার বয়স ৭৬ হইয়াছিল। তাহার ছয় মাস পূৰ্ব্বেও তিনি প্রাচীন গ্ৰীক ইতিহাস পাড়তেছিলেন। ভৌগোলিক গ্রন্থ র্তাহার প্রিয় ছিল। স্বদেশের কালিদাস ও গ্রীসের হোমর তাহার প্রিয় কবি ছিলেন। র্তাহার মৃত্যুর পর তাহার কৃত কালিদাসের বিক্রমোর্কশীর বাংলা অনুবাদের হস্তলিপি এবং হোমরের ইলিয়ডের কিয়দংশের হস্তলিপি পাওয়া গিয়াছে । অধ্যয়নামুরাগী, বহুভাষাবিৎ ও স্বলেখক ঈশানচন্দ্রের ব্যবসা-বুদ্ধিও প্রখর ছিল। অনেক ব্যবসাদার বাণিজ্যিক নানা বিষয়ে তাহার পরামর্শ লইতেন, এবং তিনি কয়েকটি বড় কোম্পানীর ডিরেক্টর ছিলেন। তিনি প্রভূত অর্থ উপার্জন যেমন করিয়াছিলেন, তাহার সদ্ব্যয়ও সেইরূপ করিয়াছিলেন। তিনি দাতা ছিলেন, অথচ তাহার দানের কথা তাহার জীবিত কালে লোকে জানিতে পারে নাই। জন্মগ্রামের ম্যালেরিয়া দূর করিবার নিমিত্ত তিনি মশকবিনাশের জন্য অনেক হাজার টাকা খরচ করিয়াছিলেন। সেখানে মায়ের নামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ও পিতার নামে একটি মধ্য-ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপন করিয়া গিয়াছেন। তদ্ভিন্ন তথায় দুটি বড় পুকুর কাটাইয়া গিয়াছেন, একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন, একটি নল-কূপ খনন করাইয়াছেন ও একটি রাস্ত নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছেন। মৃত্যুর পূর্বে উইলে যশোর জেলার আরও কয়েকটি অভাবমোচনার্থ টাকা দিবার অভিপ্রায় প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। র্তাহার সহধৰ্ম্মিণীর স্মৃতির প্রতি সন্মান প্রদর্শনার্থ কসৌলীর পাস্তয়র চিকিৎসালয়ে একটি বাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়া দেন, কেন-না তখন ক্ষিপ্তকুকুরদষ্ট বাঙালীর চিকিৎসার্থ কসৌলী ন-গিয়৷ উপায় ছিল না। যাদবপুর যক্ষ্মা-হাসপাতালে র্তাহার পরলোকগত কন্যার নামে একটি “শয্য।” দিয়া গিয়াছেন। খবরের কাগজে দেখিলাম, তাহার উইলে তিনি তাহার সম্পত্তির বৃহৎ অংশ জনহিতকর কাৰ্য্যের জন্য দান করিতে নির্দেশ দিয়া গিয়াছেন। তাহার পুত্র অধ্যাপক প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ পিতার জীবিত কালে তাহারই ইচ্ছা অনুসারে প্রাচ্য মূল্যবান গ্রন্থসমূহের