পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহণক্ষ্মণ ইটালী ও আবিসীনিয়া ইটালী ও আবিসনিয়ার মধ্যে যে যুদ্ধ চলিতেছে, তাহাতে আবিসনিয়াকে অনেক অসুবিধার মধ্যে যুদ্ধের জন্ত প্রস্তুত হইতে ও যুদ্ধ করিতে হইয়াছে ও হইতেছে। যুদ্ধের জন্ত আধুনিক যে-সব অস্ত্রশস্ত্র আবশ্বক, আবিসনিয়ায় তাহা প্রস্তুত হয় না। তাহা ইউরোপ ও আমেরিকা হইতে আমদানী করিতে হয়। পক্ষান্তরে ইটালীতে সেরূপ সামগ্ৰী অনেক প্রস্তুত হয় এবং স্থলপথে ও জলপথে তৎসমুদয় আমদানী করাও ইটালীর পক্ষে সহজতর । এই উভয় দেশের মধ্যে যখন বাকৃযুদ্ধ চলিতেছিল, তখন ইটালী বিস্তর যুদ্ধসম্ভার সংগ্ৰহ করিয়া সৈন্যসমেত আফ্রিকায় চালান করিতেছিল, কিন্তু তখন ইংলণ্ড, ফ্রান্স ও আমেরিক এবং অন্য কোন কোন অস্ত্রশস্ত্রনিৰ্ম্মাতা দেশ নিরপেক্ষতার ওজুহাতে আবিসনিয়াকে সে-সব জিনিষ বিক্ৰী করিতেছিল না। যখন ইউরোপের এই নিরপেক্ষ দেশগুলি আবিসনিয়াকে অস্ত্রশস্ত্র যোগাইবার নিষেধ প্রত্যাহার করিল, তখন ইটালী আপাদমস্তক রণসজ্জায় সাজিয়া উঠিয়াছে, কিন্তু আবিসনিয়া সেরূপ সজ্জিত হইবার স্বযোগ পায় নাই। এই তথাকথিত নিরপেক্ষতা সম্বন্ধে শ্রেষ্ঠ বিলাতী দৈনিক ম্যাঞ্চেষ্টার গাডিয়্যান যাহা বলিয়াছেন তাহা আমরা কাৰ্ত্তিকের প্রবাসীর ১৫৪ পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত করিয়াছি । ইউরোপ ও আফ্রিকার এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধে স্বতরাং আবিসনিয়ার পরাজিত হইবার সম্ভাবনাই বেশী। যে-সব টেলিগ্রাম আসিতেছে তাহা বিশ্বাসযোগ্য হইলে ইটালী খুব জিতিয়া চলিতেছে বলিতে হইবে। আজ ২৮শে কাৰ্ত্তিক ইটালীর একটা বৃহৎ পরাজয়ের সংবাদ আসিয়াছে। ইহাতে ভারতীয় মাত্রেরই খুশী হইবার কথা। হাবসীরা খুব সাহসের সঠিত লড়িতেছে। তাহদের স্বাধীনতা রক্ষা পাইলে সমুদয় পঞ্চবান জাতি আনন্দিত হইবে। তাহদের সম্রাট ও ই":রাও, আশা করি, জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা করিয়া যন্ত্রনিৰ্ম্মাণের কি শিথিয়া এবং স্বদেশে দাসত্ব-প্রথা ও অন্যান্য কুরীতির “চ্ছেন করিয়া ইউরোপীয় দেশসকলের সমকক্ষ হইতে ও *** চেষ্টা করিবে। রাশিয়ার প্রতিনিধি লিটভিনষ্ণ শ্ৰেণজয় ষে বলিয়াছিলেন, যে, কোন দেশে কুপ্রথা থাকিলে ও তাই কুশাসিত হইলেও অন্ত দেশের তাহার স্বাধীনতা হরণ

  • ー>br

বিবিধ প্রসঙ্গ—ডাঃ আম্বেদকরের ভন্নপ্রদর্শন N CS করিবার অধিকার নাই, তাহা সত্য। কিন্তু নৈতিক অধিকার অনুসারে ত প্রবল জাতিরা কাজ করে না। আত্মরক্ষায় সমর্থ যে-যে জাতি নহে, তাহাদের দেশ লোভনীয় হইলে প্রবল জাতিরা তাহ দখল করে । অতএব আত্মরক্ষার সামর্থ্য চাই, এবং সে সামর্থ্য নির্ভর করে প্রত্যেক জাতির জ্ঞানবিজ্ঞানে প্রগতি, যন্ত্রনিৰ্মাণ-বিদ্যায় পারদর্শিত, সামাজিক কুপ্রথাশুন্তত ও স্বপ্রথাশালিত, এবং রাষ্ট্রিক স্বশাসনের উপর। লীগ অব নেশ্যন্সের উপর ও শাস্তিরক্ষার অমুকুল সন্ধি ও চুক্তির উপর নির্ভর করিলে চলে না । ইটালীকে শাস্তি দিবার ব্যবস্থাসমূহ ১৮ই নবেম্বর আরম্ভ হইবে ; কিন্তু আবিসনিয়ার সম্রাট ও হাবসীরা স্বাধীনতাপ্রিয় ও সাহসী না হইলে এবং আবিসনিয়া দেশটি পাৰ্ব্বত্য ও অরণ্যসস্কুল না হইলে তৎপূৰ্ব্বেই ইটালী তাহ। গ্রাস করিয়া ফেলিত । ডাঃ আম্বেদকরের ভয়প্রদর্শন ডাঃ আম্বেদকর বোম্বাই অঞ্চলের “অস্পৃশু" ও অবনত শ্রেণীর হিন্দুদের অন্যতম নেতা। তিনি এক সভায় বলেন, যে, হিন্দুসমাজে তাহারা সামাজিক অসাম্যে লাঞ্ছিত ও নানা অন্ধবিধাগ্রস্ত ; অতএব যে ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলে তাহারা সামাজি ক সাম্যের অধিকারী হইবেন, হিন্দুধৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া তাহারা সেই ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিবেন । ইহাতে কোন কোন ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোক র্তাহাদিগকে স্ব স্ব ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিতে আহবান করিয়াছেন। অবনত ও অস্পৃশ্ব শ্রেণী মুসলমান, খ্ৰীষ্টিয়ান ও শিখদের মধ্যেও আছে। স্বতরাং ঐরূপ কোন একটি ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলেই যে অবনত হিন্দুরা প্রকৃত সামাজিক সাম্য পাইবেন এমন মনে হয় না—বিশেষত: যখন কোন সমাজে মানুষের উচ্চ বা নীচ স্থান বহুপরিমাণে তাহার আর্থিক ও শৈক্ষিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। হিন্দু সমাজে বহুযুগ ধরিয়া অবনত শ্রেণীর লোকেরা লাস্থিত ও নানা অধিকারে বঞ্চিত। স্বতরাং তাহাদের ক্রুদ্ধ হইবার যথেষ্ট কারণ আছে। সেই জন্ত এপর্য্যন্ত কয়েক কোটি হিন্দু অহিন্দু হইয়া গিয়াছে। কিন্তু আরও দশ-পনের হাজার অবনত হিন্দু মুসলমান বা খ্ৰীষ্টিয়ান হইয় গেলেই যে বাকী কয়েক কোটি অবনত হিন্দুর সামাজিক উন্নতি হইয়া যাইবে, ইহা সত্য নহে।