পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

للعلامة لاتفN ছুর্গ বলিল, যদি দেখতে পায় ? —ই, দেখতে পাবে 1 ঘরের পেছন দিকে বাগান। চিতের বেড়া দেওয়া—দিব্যি ডিঙিয়ে যাবে। —উচু মাচ, যদি নাগাল না পায় ? —কি ষে বল, মাচা বড়-জোর আমার গলা-সমান । ও, ত ফ৭ে–ৰী-হাত তুলে দাড়া। ছেলেকে টানিয়া হরিশ সোৎসাহে উঠিয় দাড়াইল । —দেখলে ত? দুর্গ হাসিয়া বলিল, তাই বুঝিয়ে বল, না ধমক-ধামক । ষত বাবা, ষে-কটি পারিস নিয়ে আয়। আমি চট্‌ ক'রে জু-খোলা চাল ভেজে ফেলি। ফণি বলিল, বা রে, সেদিন সন্ধোবেলায় যাই নি বুঝি ? বেড়া ডিঙিয়ে যেমন মাচার কাছে গেছি আমনি ভুষণো এসে কঞ্চি দিয়ে সপাসপ, সপাসপ.এই দেখ না পিঠটায় হাত দিয়ে । দ্বর্গ তার পিঠে হাত বুলাইয়া আদর করিয়া বলিল,—দূর বোকা, অমন সময় যেতে আছে ? দেখতে পাবে বে। আজ ষে বৃষ্টি, আস্তে আস্তে গিয়ে চার দিক না দেখে বেড়া গলবি। ওদের ঘরের পেছনে জানালা নেই, কেউ দেখতে পাবে না । ছেলে চলিয়া গেলে হরিশ বলিল,—আজ খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে। দুর্গ হাত নাড়িয়া বলিল, আমারও ত মনে হচ্ছে ইলিশমাছ-ভাজ খাই । কিন্তু সেই কথায় বলে না,— মুরোদের নেই সীমে— রথ দিয়েছে নিমে । জামাদের হয়েছে তাই। ঘরে যে ভাল নেই। অগত্য হরিশ চুপ করিল। 毒 事 穆 শসা আসিবার আগেই আসিল একখানি পত্র। সাদা কাপড় দিয়া ছাওয়া ছাতা মাথায় পিওন পথ দিয়া যাইবার সময় দাওয়ার উপর চিঠিখানা ফেলিয়া দিল। পথের পরেই বাড়ির সীমানা, কোথাও বেড়া বা প্রাচীরের চিহ্ন নাই, কাজেই ঘর-বার সমান । এদিকটায় লোকের বসতি কম ও পিছন দিকে খানিকটা জঙ্গল বলিয়া ইহাদের আলাপ-আলোচনা কাহারও কর্ণগোচর হয় না। প্রৰ{স" >N°●足 চিঠিখান হাতে করিয়া হরিশ ফ্যাল ফ্যাল করিয়া খানিক চাহিয়া রহিল। এমন অঘটন এ-বাড়িতে বছর-তিনেকের মধ্যে ঘটে নাই। অবশু দাদা যত দিন বাচিয়াছিলেন, মাসের প্রথমে পিওন আসিয়া মনিঅৰ্ডার দিয়া যাইত। টাকার সঙ্গে মিলিত—এক চিলত কুপন, তাহাতে থাকিত—শুধু লাইন-দুই জড়ানো লেখায় কুশল প্রশ্ন ও আশীৰ্ব্বাদ। তার পর তারই মৃত্যু-সংবাদ বহিয়া এক দিন আসে একখানি পোষ্টকার্ড। চিরাচরিত প্রথা অনুসারে পড়িয়া সেখানি ছিড়িয়া ফেলিয়া দেওয়া হইয়াছিল। শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণের খামের মধ্যে যে ছাপানো কার্ড আসিয়াছিল—ঘর খুঁজিলে সেখান এখনও মিলিতে পারে, কিন্তু হাতে-লেখা চিঠি— একখানিও নাই । বিস্ময় কাটাইয়া হরিশ পত্র পড়িতে লাগিল । ওদিকে দাওয়ায় ওপাশে উনান জালিয়া দুর্গা খোলা চাপাইয়৷ চাল ভাজিতেছে। পিওনের হাকে পিছন ফিরিয়া একবার এদিকে চাহিয়াই আপন কাজে মনোনিবেশ করিল। চিঠি পড়িয়া স্বামী যে তাহাকে ডাকিয়া এখনই সমস্ত কথা বলিবে এ দৃঢ় প্রত্যয় তাহার ছিল। কলহে বা আনন্দে দু-জনে দিবসরাত্রির দণ্ডে দণ্ডে যে কোলাহল তুলিয়া থাকে তাহ একান্তভাবে উভয়েরই উপভোগের জিনিষ । পিছনের ওই বসতিহীন স্বল্প জঙ্গলাবৃত পোড়ো জমির পটভূমিতে সামনের খোলা রাস্তার দিকে মুখ করিয় ভগ্নগৃহের দাওয়ায় বসিয়া ক্ষণে পরিবর্তনশীল দাম্পত্য আলাপে যে নীরব মুহূৰ্ত্তগুলি মুখর হইয় উঠে সে যেন এই অপরূপ প্রতিবেশেরই সামগ্রী। নিকটে কোন প্রতিবেশী নাই, স্বগতোক্তিতে ছুর্গ তাহার অভাব পূরণ করিয়া লয়। স্বামী যখন বাহিরে থাকে স্বর্গ দাওয়ায় বলিয়া উচ্চকণ্ঠে আপন পিতৃবংশের ও স্বগুরকুলের মহিমাকীৰ্ত্তন করিয়া হয়ত আকাশকে শোনায়, পিছনের বনকে শোনায় ও সামনের পথকে শোনায়। স্বামী বাড়ি জাসিলে সেই মহিমার আলো ধিক্কারে নিবাইয়া সে শাপাগ্নি বর্বর্ণ করিতে থাকে। বেচারী হরিশ ঠিক মূহুরিগিরি করিয়া ৰে সামান্ত টাকাকপট পায়, ওই টাকায় কি করিয়া সংসার চলে তাহ হয়ত অনেকেই জানে না। এদিকে ফণি গোটী-চারেক নখর শসা জানিয়া দাওয়ায়