পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రి\రిశ్రీ প্রবাসী SN28之 পর পকেট থেকে রুমাল বের করে মুছে ফেললে । এসব ছাড়া অন্য কাজেও, যথা, খামের উপর টিকিট-মার, ওভারকেটের দাগ ওঠানো, থাম বন্ধ করা ইত্যাদিতে ভদ্রলোককেও থুথু ব্যবহার করতে দেখেছি। এরাই সভ্য ও শিক্ষিত বলে অহঙ্কার করে । আমাদের দেশের ধাঙ্গড় ও মেথর —যারা অনবরত ময়লা পরিষ্কার করছে—তাদের ভেতরেও বোধ হয় পৃথুর দ্বারা ছেলের মুখ মোছানে, নিজের হাত ধোয়ার ইচ্ছা কোন দিন হবে না। রাস্তায় একটি ছোট গরিবের ছেলেকে এক দিন মুখে কালিমাখা দেখে ভাবলুম বেচারীর মুখখান আজ পৃথুতে ভরে যাবে হয়ত । রাস্তায় সব সময় বেশী ভিড় থাকা সত্ত্বেও লোকের গায়েপড়াপড়ি নেই। কেউ কাউকে ধাক্কা দিয়ে অযথা সময় নষ্ট কেনিলওয়ার্থ-কাসূল ক'রে গালিগালাজ করে না। রাস্তার মাঝখানে ফলের থোস, ছেড়া কাগজের টুকরা পড়ে থাকে না । তার জন্য গাছের গায়ে জালের খাচা করা আছে ৷ থিয়েটার, সিনেমার টিকিট-ঘরের সামনে লোকের হুড়াহুড়ি নেই, সবাই নিঃশব্দে কলের পুতুলের মত লাইন করে পরের পর এগোতে থাকে, তার জন্য যত ক্ষণ সময় লাগুক, বিরক্তি নেই তাতে। এই সব ধরণ শেখবার মত। বিলেত-ফেরৎ অনেক পরিচিত ছেলে ও মেয়ের কাছে অনেক সময় শুনতুম বিলাতের মেয়েরা যেমন খাটুতে পারে, আমাদের দেশের মেয়েরা তেমন পারে না। তাদের এ-বিষয়ে বাহাদুরী খুব। শুনে পর্যাস্ত এই সব মেয়ের কাজ করার ধরণ দেখে শেখবার ইচ্ছা হয়েছিল। এখানে এসে দেখলু এরা খুবই খাটুতে পারে সে কথা সত্য, কিন্তু আমাদের দেশের মেয়েদের মতন ক'রে কাজ করতে হ’লে কিছুতেই পেরে উঠত না । কেন পারত না তার গোটাকয়েক কারণ বলব। প্রথম কারণ, এটা শীতপ্রধান দেশ, ঠাণ্ডায় পরিশ্রম যেমন সহজসাধ্য, গরমে তা চলে না, কাজেই মেয়ে-পুরুষ সকলেই সারাদিন পরিশ্রম করতে কষ্ট বোধ করে না । দ্বিতীয় কারণ, আমাদের দেশে সাধারণতঃ একান্নবৰ্ত্তী পরিবারের মধ্যে থাকৃতে হয়। নিজের মতের অনুযায়ী কাজ করতে পারলে কাজ যতটা শীঘ্র সম্ভব হয়, পাচ জনের সঙ্গে থেকে তাদের মুথসুবিধা দেখে ও গুরুজনের মতের অপেক্ষা ক'রে কাজ করতে একটু দেরি হবেই। আর আমাদের খাওয়া-দাওয়ার কোন নিয়ম নেই। বাড়ির বাবুরা রোজই হয়ত এক নিয়মে খেয়ে ছুটির দিন এমন বেলায় নাওয়াখাওয়া করেন যে হাড়ি-হেঁসেল তুলতেই বেলা কাবার। এই-সবে খানিকট সময় নষ্ট হয়। ওদের ওখানে সে-সব হবার জো নেই, যে রান্না ও পরিবেশন করবে তার স্ববিধা ও সময়মত খেতেই হবে। এক জন বেল একটায়, আর এক জন বেলা দশটায় খাচ্ছি, সে সব চলবে না । রান্নার সময় রকমারি তরকারি কোট, ও তার রকমারি মশলা পেষার হাঙ্গাম নেই। তার জন্য আলাদা লোকের তাই দরকার হয় না। একটা স্বপ, একটু মাছ কিংবা মাংস ও তরকারী ভাজ সিদ্ধ ও একটা পুডিং হ'লেই দুপুরের খাওয়া হয়ে গেল। তার পর সকড়ির বাছবিচার নেই। রান্ন করতে করতে চোদ্দ বার হাত ধুতে হয় না। আঁশ-নিরামিষের বিচার নেই, যা রান্না হ’ল সধব, বিধবা ও কুমারী সব ছেলেমেয়ে একসঙ্গে বসে খেয়ে নিলে ; মাছ-মাংস খায় না এমন লোকও আছে, সে ফল ও শব্জী হয়ত খেলে, কিন্তু তার জন্য বিচার করে হাত ধুয়ে আলাদা বাসনে যে খেতে দিতে