পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পেশষ পশ্চিমষাত্রিকী veN96 হবে, সে নিয়ম নেই। এই সব কারণে কাজ করতে আমাদের তুলনায় এদের সময় কম লাগে। কেউ যেন মনে না করেন আমি এসব লিখলুম বলে আমাদের দেশের সব নিয়মগুলিকেই খারাপ বলছি। আমাদের কাজে সময় কেন বেশী লাগে, শুধু সেইটুকু বলবার উদ্দেশ্যে এর অবতারণা করেছি। বিলাতে বাড়ির কর্তা অফিসে গেলেন, গিল্পী সংসারের কাজকর্মের ভেতর বাড়ির নীচের তলার জন্য ভাড়াটে জোটাচ্ছেন, বাগানের ফুল বিক্রী করতে পাঠাচ্ছেন, তার জন্য তার কাছে বাইরের পাচটা লোক আসছে। এতে অবরোধপ্রথা নেই, কৰ্ত্তা এ-সব ব্যাপারে কিছুই নজর দেন না, সারাদিন পরে অফিস থেকে এসে স্ত্রী নিয়ে বেরিয়ে গেলেন হাওয়া খাবার জন্য। মেয়ে-পুরুষ শরীরের যত্ব ঠিক বোঝে। স্বাস্থ্যের জন্য যতটুকু পরিশ্রম দরকার, সেই অনুযায়ী আমোদ-প্রমোদেও যোগ দেওয়াতে আপত্তি নেই। আমাদের দেশে সকল বাড়িতে এ-সবের প্রয়োজন ক'টা লোক বোঝে ? রাস্তায় বেড়াতে গিয়ে অনেক সময় তরিতরকারি ও মাংসের দোকানে ঢুকে দেখেছি কি রকম ব্যাপার। ৭াছুরের পাজরা থেকে স্বরু ক’রে নাড়ী-ভুড়ি, লিভার, জিব, ইত্যাদি সমস্তই কাচের আবরণের ভেতর বাধাকপির পাতার সঙ্গে বিক্রীর জন্য সাজিয়ে রেখেছে। অানারসের দাম তিন শিলিং ক’রে এক-একটি। একটি পিচ এক শিলিং, কলা এক-একটি ছয় পনী করে। ভাজা আলু পাতলা কাগজের খামে প্যাকেট ক’রে পাওয়া যায়। এদেশের লোকেদের সকল জিনিষের ওপর মায়া বোধ হয় কিছু কম। তা হবে নাই বা কেন ? কারুর নিজের ব’লে i+ছু নেই। একটি বড় হোটেলের বাড়িখানি হয়ত এক জনের, ফুর্ণিচার অপরের ও বিছানাপত্র তোয়ালে ইত্যাদি অন্য লোকের। নিজেদের পোষাক-পরিচ্ছদও শুনেছি ইচ্ছামত ভাড়া পাওয়া যায়, সত্য মিথ্যা জানি না। ছেলেমেয়ে যত দিন না কাৰ্য্যক্ষম হ’ল মা-বাপ দেখাশোনা করলেন, তার পর বড় হয়ে বিয়ে হ’লে ছেলে সস্ত্রীক আলাদা রইল, মেয়েও স্বামীর ঘর করতে গেল। এর পর ছেলের কিংবা মেয়ের মা’র বাড়িতে থাকুবার দরকার হ’লে, বেশীর ভাগ বাপ-মাই পুত্র-কন্যাদের কাছে ভাড়া ও খাওয়ার খরচ চাইবেন। আমরা এক দিন বিস্কুটের ফ্যাক্টরী দেখবার জন্ত লণ্ডন থেকে ট্রেনে ক’রে য়্যাক্টন গিয়েছিলুম। সেদিন নাইস বিস্কুট তৈরি হচ্ছিল। একটি বড় কাঠের ডাবার মধ্যে পরিমাণ অনুযায়ী ময়দা, চিনি, ডিম, মাখন ও নারকোল-গুড়ার সংমিশ্রণে একটি মাখা-ময়দার স্তুপে পরিণত হচ্ছে। তার পর বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সাহায্যে তাকে বেলে একটি ছোট তোষকের মত হ’ল। তার পর বড় ছুরির দ্বারা তাকে চার ভাগে কেটে cछाडाब এক-একটি ভাগ অন্য যন্ত্রের তলায় ফেলে তাকে পাতল ক’রে বেলা হতে লাগলো। এই বেলা-ময়দার সরু চাদরটি সমানে চলতে চলতে আর একটি করাতওয়ালা যন্ত্রের তলায় ঢুকছে, ও সেখানে এটি নাইস বিস্কুটের আকারে কাটতে কাটতে একটি বড় আলমারীর মত জায়গায় যাচ্ছে । এইখানে বিস্কুটগুলি সেকা হয় ও পরে ট্রে-স্বদ্ধ বয়ে বার করে নেওয়া হয়। যত ক্ষণ এই রকম ভাবে ময়দা বেলা চলতে থাকে, সমানে এক জনকে কলের কাছে দাড়িয়ে ময়দার উপর চিনি ছড়াতে হয়। হাত কামাই দেবার উপায় নেই। যে মেয়েটি দাড়িয়ে চিনি ছড়াচ্ছিল আমি দেখলুম, তার এই অনবরত হাত-নাড়ার ফলে হাতের গড়নটি বড় স্বন্দর। আমাদের